হবিগঞ্জে মা ও নবজাতকের মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজাল, মায়া রানীর বিরুদ্ধে অভিযোগ

সোমবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ৪:০১ অপরাহ্ণ

হবিগঞ্জে মা ও নবজাতকের মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজাল, মায়া রানীর বিরুদ্ধে অভিযোগ
apps

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে কাকাইল ছেও ইউনিয়নে প্রসূতি মা ও নবজাতের মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র থেকে ছাড়পত্র দেয়ার পরও বাসায় নিয়ে নরমাল ডেলিভারি করানোসহ অপচিকিৎসার অভিযোগ উঠেছে ওই কেন্দ্রের ওয়ার্ড পেইড ভলান্টিয়ার (আয়া) মায়া রানী সরকারের বিরুদ্ধে।

যদিও অপচিকিৎসার অভিযোগ অস্বীকার করছেন মায়া রানী সরকার আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে মারা গেছেন প্রসূতি ওই নারী। তার নাম তাসলিমা আক্তার। তিনি উপজেলার কাকাইলছেও ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের রইছ উদ্দিনের স্ত্রী।

জানা যায়, রইছ উদ্দিন ও তার শ্বশুর তার গর্ভবতী স্ত্রী তাসলিমাকে নিয়ে গত শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টায় কাকাইলছেও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে যান। সেখানে রাত প্রায় সাড়ে ৯টার দিকে তাসলিমার অবস্থা খারাপ দেখে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা মিডওয়াইফ ইসরাত জাহান তাৎক্ষণিক তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেফার করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেফার করা হলেও মায়া রানী সরকার বিভিন্ন কৌশলে তাসলিমাকে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী তার ভাড়া বাসায় নিয়ে যায় সেখানে মায়া রানী সরকার ওই নারীর মৃত নবজাতক প্রসব করান।

সন্তান প্রসব করানোর সময় মায়া রানী সরকারের অজ্ঞতার কারণে নবজাতকের মৃত্যু হয়। এছাড়া সেই সময় থেকেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয় তাসলিমার। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাসলিমার অবস্থা খারাপের দিকে গেলে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেন মায়া রাণী সরকার। রাত ৩টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়ার ঘন্টাখানেকের মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তাসলিমা।

এ বিষয়ে তাসলিমার স্বামী রইছ উদ্দিন বলেন, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার পর আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার কথা বলা হলে আমরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে না গিয়ে মায়া রানীর কাছে গিয়ে ডেলিভারি করাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মায়া রানী সরকার বলেন, ডেলিভারির সময় কোনো অপচিকিৎসা হয়নি। ডেলিভারি নরমাল হয়েছে এ সময় কোনো রক্তক্ষরণও হয়নি তার (তাসলিমা) ডায়রিয়া ও বমি বেড়ে যাওয়ায় তাকে আজমিরীগঞ্জে পাঠানো হয় বাসায় নিয়ে ডেলিভারি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বাসায় যেতে তাদেরকে নিষেধ করেছিলাম কিন্তু তাদের ও আশপাশের লোকজনের অনুরোধে আমি তাদেরকে বাসায় যেতে দেই।

আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. মনির হোসেন বলেন, হাসপাতালে আসার পরই দেখা যায় প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে প্রসূতি ওই নারীর। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলেই তার মৃত্যু হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা র্কমর্কতা ডা. ইকবাল হোসেন বলেন, আমি যোগদানের পর মায়া রাণী সরকারের বিরুদ্ধে অলিখিত কিছু অভিযোগ শুনেছি এবং বিষয়গুলো আমি সিভিল সার্জন কার্যালয়ে জানিয়েছি। তিনি অবৈধভাবে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বসবাস করতেন কিছুদিন পূর্বে তাকে সেখান বের করে দেয়া হয়েছে।

Development by: webnewsdesign.com