সড়ক দুর্ঘটনায় পিতা-মাতা বোনকে হারিয়ে দিশেহারা নুসরাত

সোমবার, ১৬ মে ২০২২ | ৬:২৩ অপরাহ্ণ

সড়ক দুর্ঘটনায় পিতা-মাতা বোনকে হারিয়ে দিশেহারা নুসরাত
apps

রাজশাহী শহরে চিকিৎসক দেখাতে স্ত্রী বিথি খাতুনকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন দলিল লেখক আক্তার হোসেন। সঙ্গে ছিলেন তাদের ছোট মেয়ে চার বছরের মরিয়ম জান্নাত। কিন্তু তাদের আর চিকিৎসকের কাছে যাওয়া হলো না। পথে ঘটে সড়ক দুর্ঘটনা।

বিপরীত দিক থেকে আসা আরেক মোটরসাইকেলের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় প্রাণ হারালেন তারা তিনজনই। একসঙ্গে বাবা-মা ও বোনকে হারিয়ে দিশেহারা আক্তার-বিথি দম্পতির মেয়ে নুসরাত জাহান (১৩)। তার কান্না ছুঁয়ে যাচ্ছে স্বজন-প্রতিবেশীদেরও। নুসরাত স্থানীয় একটি স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। আক্তার হোসেনের বাড়ি নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার ভাবিচা ইউনিয়নের চন্ডীপুর গ্রামে।

ওই দুর্ঘটনায় নিহত হন অপর মোটরসাইকেলের আরোহী আবদুল মান্নান (৪৮)। তার বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলার ছোট বিড়ালদহ গ্রামে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহী শহরে ঢোকার একটু আগে পবা উপজেলার নওহাটা এলাকায় বিপরীতমুখী একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় আক্তার হোসেনের মোটরসাইকেলের। এতে দুই মোটরসাইকেলের চার আরোহী রাস্তায় ছিটকে পড়েন। তখনই একটি মাটিবাহী ট্রাক্টর তাদের চাপা দিয়ে চলে যায়।

পুলিশ সূত্র জানায়, মান্নান ও আক্তার হোসেনের মেয়ে মরিয়ম ঘটনাস্থলেই মারা যায়। বিথি খাতুনকে (৩৩) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। আর গুরুতর অবস্থায় আক্তার হোসেনকে (৪০) একই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে তিনিও মারা যান।
ওই দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে এসেছিলেন আক্তারের মা জাকিয়া বেগম। মারা যাওয়ার পরও ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে যাচ্ছিলেন নির্বাক এই মা। তখন সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।

জাকিয়া বেগমের সঙ্গে হাসপাতালে এসেছিলেন আক্তার হোসেনের চাচাতো ভাই জিয়াউর রহমান। তিনি বলেন, নুসরাতও তাদের সঙ্গে হাসপাতালে এসেছিল। কিন্তু বাবা মারা যাওয়ার পর তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

জিয়াউর রহমান বলেন, স্ত্রীর কাশির চিকিৎসা করানোর কথা ছিল আক্তার হোসেনের। চিকিৎসক দেখানোর পরই তাদের বাড়ি ফেরার কথা ছিল। প্রথমে মা-মেয়ের ও পরে রাত নয়টার দিকে আক্তার হোসেনের মরদেহ গ্রামের বাড়ি পৌঁছেছে বলে জানান ভাবিচা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওবাইদুল হক।
পবা থানার ওসি ফরিদ হোসেন গতকাল রাতে জানান, নিহত আক্তার হোসেনের ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা করেছেন।

Development by: webnewsdesign.com