সিলেট নগরীর কালিঘাট সহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত, ক্ষয়ক্ষতি কয়েক কোটি টাকা

বুধবার, ১৮ মে ২০২২ | ৩:৫১ অপরাহ্ণ

সিলেট নগরীর কালিঘাট সহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত, ক্ষয়ক্ষতি কয়েক কোটি টাকা
apps

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টিপাতে সিলেট নগরীর কালিঘাট সহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে গেছে।

চলমান বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে অব্যাহত থাকায় সিলেটের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির যতো সময় যাচ্ছে ততোই অবনতি ঘটেছে। সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার উপরে গিয়ে সিলেট শহরের বিভিন্ন অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

এদিকে, সুরমা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় নগরীর প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা কালিঘাটের শত শত দোকান ও গোডাউন পানিতে তলিয়ে গেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় কালিঘাটের বৃহত্তম চাউলের আড়তদার মেসার্স হাজী আলকাস ট্রেডার্স সহ বিভিন্ন দোকানের শত শত চাউলের বস্তা পানিতে নিমজ্জিত। গোডাউনে থাকা প্রায় চার হাজার চাউলের বস্তা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন আলকাস ট্রেডার্সের এই ব্যবসায়ী।

পানিতে ভিজেছে প্রায় ১০ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি বলে নিশ্চিত করেছেন এই প্রতিষ্টানটির স্বত্তাধিকারী হাজী মোঃ কয়েস আহমদ। এ রকম প্রায়ই বড় আড়তদারদের চাউল, ডাল, চিনি, আটা, ময়দা পিয়াজের দোকান ও গোডাউনে ক্ষতি হয়েছে।

 

এ ব্যাপারে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সিলেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিলোয়ার হোসেন বলেন, কালিঘাটের ৩/৪ শত দোকান ও গোডাউন পানিতে ডুবে গেছে এবং কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এ বিষয়ে সিলেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও সিলেট চেম্বার অব কর্মাস ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক জিয়া উদ্দিন বলেন, শত শত দোকান পানিতে নিমজ্জিত, ব্যবসায়ীদের ক্ষয় ক্ষতি কোটি টাকার উপরে। এত দ্রুত পানি গ্রাস করেছে যে মাল সরানোর যথেষ্ট সময়ও ব্যবসায়ীরা পাননি। আর এত দ্রুত সময়ে কিভাবে মালামাল সরাবেন।

মঙ্গলবার (১৭ই মে) বিকাল থেকে কালিঘাটের ব্যবসায়ীরা তাঁদের দোকান ও গোডাউনে থাকা মালামাল গুলো ট্রাকে করে সরিয়ে নিচ্ছেন।

এ সময় দেখা যায়, কালিঘাটের বিভিন্ন এলাকায় পানিতে ডুবে থাকা দোকান ও গোডাউনগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ অবস্থায় রয়েছে। এ ছাড়াও সিলেট নগরীর বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে বন্যায় প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

সিলেট শহরের সকল বাসা-বাড়িতে পানি ঢুকেছে, রাস্তাঘাট তলিয়েছে কিংবা অফিস ও দোকানপাটে পানি ঢুকেছে ।ফলে এ সকল এলাকার বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটছে।

এদিকে, সিলেটে বন্যা কবলিতদের জন্য ১৯৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এমন তথ্য জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. মুজিবর রহমান। এ সকল আশ্রয়কেন্দ্রে খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এ ছাড়া ইউএনওদের সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখার নির্দেশনা দেওয়া আছে।

এদিকে জেলা প্রশাসক জানান, বন্যা কবলিতদের জন্য আরেকদফায় ১০০ টন চাল ও ৩০০০ প্যাকেট শুকানো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর আগে ১২৯ টন চাল ও ১০০০ শুকানো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, ২০০৪ সালের পর নদীর পানি কখনো এতোটা বাড়েনি। ১৮ বছরের মধ্যে এবারই সবচেয়ে বড় বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। আর আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছেন, ২৩ জুন পর্যন্ত সিলেটে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। তবে বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কমতে পারে।

এদিকে সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাইয়িদ চৌধুরী জানিয়েছেন, আগামী কয়েকদিন এই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। তাছাড়াও ভারতের মেঘালয় রাজ্যের বৃষ্টিও কমছে না। তাই পাহাড়ি ঢল নামছে এবং আমাদের দেশেও পানি বাড়ছে।

Development by: webnewsdesign.com