সিলেটে সাইবার প্রতারক চক্রের দুই সদস আটক

শুক্রবার, ০৯ অক্টোবর ২০২০ | ২:৩৭ অপরাহ্ণ

সিলেটে সাইবার প্রতারক চক্রের দুই সদস আটক
apps

সিলেটে সাইবার প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। তারা সমাজে প্রতিষ্ঠিতদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি ও ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে প্রতারণার মাধ্যমে ইতোমধ্যে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) এ চক্রের প্রধানসহ দুইজনকে আটক করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-৯। এ দুজনের সহযোগী আরেক প্রতারককে গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

আটককৃতররা হল- সাইবার প্রতারক চক্রের প্রধান মো. মামুন মিয়া (২০) ও তার অন্যতম সহযোগী আফজাল হোসেন রিমন (২০)।

মামুন সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার থানার মান্নারগাঁও গ্রামের মো. মিরাশ আলীর ছেলে। সে নগরীর চৌকিদেখি ১নং রোডের ২৩/১ নং বাসার ৪র্থ তলায় ভাড়াটিয়া। মামুনের সহযোগী রিমন একই থানার গোপালপুর গ্রামের বশির উদ্দিনের ছেলে।

এদিকে, এ চক্রের আরেক প্রতারক জাবের আহমদ (২৯)-কে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি র‌্যাব। তবে তাকে ধরতে অভিযান চলছে। জাবের দোয়ারাবাজার থানার বসরপুর গ্রামের মো. তফসির উদ্দিনের ছেলে।

প্রতারক চক্রের দুই সদস্য গ্রেফতার ও তাদের প্রতারণার বিষয়ে সিলেট শহরতলির মুরাদপুরস্থ র‌্যাব-৯ কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন র‌্যাব-৯ অধিনায়ক লে. কর্নেল আবু মুসা মো. শরীফুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সিলেটে একটি সাইবার প্রতারক চক্র ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাকের মাধ্যমে প্রবাসী, দেশের বিত্তশালী ও সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে বিভিন্ন প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বড় অংকের টাকা হাতিয়ে নিতো। সে টাকাগুলো জমা হতো প্রতারক চক্রের সদস্যদের বিকাশ অ্যাকাউন্টে।

প্রতারণার শিকার ব্যক্তিদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে এ বিষয়ে তদন্তে নামে র‌্যাব-৯। তীক্ষ্ণ নজরদারী আর গভীর তদন্তের পর অবশেষে বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) সকাল ৯ টায় বিকাশের টাকা উত্তোলনের সূত্র ধরে র‌্যাবের একটি দল নগরীর চৌকিদেখিতে অভিযান চালিয়ে সাইবার প্রতারক চক্রের প্রধান মামুন মিয়াকে গ্রেপ্তার করে।

পরে তার দেয়া তথ্যমতে দুপুর ১১টায় সুনামগঞ্জ থেকে মামুনের অন্যতম সহযোগী আফজাল হোসেন রিমনকে গ্রেফতার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৯ অধিনায়ক জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মামুন জানায়- বিভিন্ন ওয়েবসাইট ঘেটে এবং ইউটিউব থেকে হ্যাকিং বিষয়ক ভিডিও দেখে সে হ্যাকিং শিখে। একপর্যায়ে মামুন হাকিংয়ে দক্ষ হয়ে উঠে এবং একের পর এক প্রবাসী, বিত্তশালী ও সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে থাকে।

হ্যাক করার পর ওই অ্যাকাউন্টের ফ্রেন্ড লিস্ট পর্যবেক্ষণ করে আইডি’র মূল মালিকের আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধুর কাছে অতি প্রয়োজন দেখিয়ে, আকস্মিক কোনো সমস্যা অথবা কোনো দরিদ্র লোকের চিকিৎসার কথা বলে টাকা চাইতো এবং বিকাশের মাধ্যমে সে টাকা নিয়ে আসতো।

পরে সে টাকা মামুন তার দুই সহযোগী রিমন ও জাবেরের মাধ্যমে সিলেট এবং সুনামগঞ্জের বিভিন্ন বিকাশ পয়েন্ট থেকে উত্তোলন করতো।

র‌্যাবের সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মামুন বলেছে- একসময় হ্যাকিং করা তাদের নেশা ও এর মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ পেশা হয়ে দাঁড়ায়। এভাবে অর্থ কামিয়ে উন্নত জীবনযাপন করা এবং অল্প সময়ে ধনী হওয়াই তাদের লক্ষ্য ছিলো।

মামুন ও তার দুই সহযোগী মিলে গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এ পর্যন্ত প্রতি মাসে দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকা ইনকাম করতো বলে সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব জানায়।

Development by: webnewsdesign.com