সিলেট অফিস থেকে নিজস্ব প্রতিনিধি
সিলেট আওয়ামী লীগে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব এসেছে। তাতে আগের কমিটির তিন শীর্ষ নেতা বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, শফিকুর রহমান চৌধুরী ও আসাদ উদ্দিন আহমদ ছিটকে পড়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে সিলেটে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ায় বর্তমানে পদহারানো এই তিন নেতাকে নিয়ে দলটির নেতাকর্মী এবং তাদের কর্মী-সমর্থকরা মনুণœণ। করছেন হাপিত্যেশ। তবে পদ হারালেও ভেঙে পড়ছেন না এই তিন নেতা। তারা বলছেন, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, সে সিদ্ধান্তেই তারা খুশি।
জানা গেছে, দীর্ঘ ১৪ বছর পর গেল বৃহস্পতিবার সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছে। সম্মেলনে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ সম্মেলনের মাধ্যমে ২০১১ সালের পর এসেছে নতুন কমিটি। সম্মেলনে এডভোকেট লুৎফুর রহমান সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান সাধারণ সম্পাদক হন। আগের কমিটিতে লুৎফুর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও নাসির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। অন্যদিকে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগে মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ সভাপতি ও অধ্যাপক জাকির হোসেন সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। মাসুক আগে জেলা কমিটির সহসভাপতি ছিলেন, জাকির ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ চারটি পদে নতুন মুখ এসেছে তিনটি। ফলে মহানগর আওয়ামী লীগের আগের কমিটির সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ও সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ এবং জেলা শাখার আগের কমিটি সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী নতুন কমিটিতে পদ হারিয়েছেন।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শে সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জেলা ও মহানগর শাখায় নতুন নেতৃত্বের নাম ঘোষণা করেন। এ ঘোষণার পর আগের কমিটির ওই তিন নেতার অনুসারী কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে হতাশা দেখা দেয়। সম্মেলন শেষেই এ তিন নেতার বাসায় নেতাকর্মীদের ঢল নামে। জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের তৃণমূল থেকে শুরু করে শীর্ষস্থানীয় নেতারাও ছুটে যান কামরান, শফিক ও আসাদের বাসায়। তাদের অনুসারী অনেক কর্মী-সমর্থককে কান্নায় ভেঙে পড়তেও দেখা গেছে। পদ হারিয়ে নিজেরা কোথায় মন খারাপ করবেন, উল্টো ভেঙে পড়া কর্মী-সমর্থক ও অনুসারীদের সান্ত¦না দিয়েছেন ওই নেতা।
এদিকে, নতুন পদ পাওয়া মাসুক, জাকির ও নাসিরও পদহারানো ওই তিন নেতার বাসায় ছুটে যান। তারা দলের কর্মকা-ে সহযোগিতা কামনা করেন। জবাবে কামরান, শফিক ও আসাদ সবসময় দলের জন্য কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এ প্রসঙ্গে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘দলের নেত্রী যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, তাতে আমাদের পূর্ণ সমর্থন আছে। আমরা দলের জন্য আজীবন কাজ করে যাবো।’
জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগে পদপদবী মুখ্য নয়। দলের জন্য কাজ করে যাওয়াটাই হচ্ছে মূল বিষয়। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে আমরা উন্নত বাংলাদেশ গড়তে আগের মতোই কাজ করে যাবো।’
নগর আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবেই আমাদের অগনতি কর্মী-সমর্থক ও অনুসারী রয়েছেন। তারা আমাদেরকে আবারও পদে দেখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনা দূরদর্শী চিন্তা থেকে নতুন নেতৃত্ব এনেছেন। আমরা এই নেতৃত্বকে পূর্ণ সহযোগিতা করবো।’
Development by: webnewsdesign.com