ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ঐতিহ্য ও স্বকীয়তা রক্ষায় সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা না নিয়ে পৃথকভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার পক্ষে মত দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। ডাকসুর এক কার্যনির্বাহী সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।শনিবার ডাকসু ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে ডাকসুর কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের নিয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে উত্থাপিত মোট ১২টি এজেন্ডা সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। এর মধ্যে রয়েছে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা না নেয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকট সমাধানের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে বাংক বেড প্রতিস্থাপন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের ফি অনলাইনের মাধ্যমে জমা দেয়ার ব্যবস্থা করা, বিভিন্ন বিভাগ ও ইন্সটিটিউটে অতিরিক্ত উন্নয়ন ফি বাতিল করা, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য সব ধরনের ফি মওকুফ করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্মৃতিস্তম্ভ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা, ঢাবির শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে মলচত্বরে ল্যান্ডমার্ক টাওয়ার নির্মাণ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য নবীনবরণের আয়োজন করা, ঢাকা থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত নতুন বাস রুট চালু করা, পরিবেশ দূষণ রোধে ক্যাম্পাসে পলিথিন ব্যবহার না করা ইত্যাদি।কার্যনির্বাহী সভার মিটিং শেষে সংবাদ সম্মেলনে জিএস গোলাম রাব্বানী বলেন, আজকের সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ও স্বকীয়তা বজায় রাখার জন্য আমাদের ‘৭৩’র অধ্যাদেশ বলে গুচ্ছ পদ্ধতীতে ভর্তি পরীক্ষা না নিয়ে স্বতন্ত্রভাবে পরীক্ষা নেয়ার পক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যতগুলো ভাস্কর্য রয়েছে সেগুলোর সঠিক ইতিহাস শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীদের কাছে তুলে ধরার জন্য পদটিকা প্রদান করা হবে। এ ছাড়াও ঢাকা থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত নতুন বাসের রুট চালু করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যে সব প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী রয়েছে তাদের তালিকা তৈরি পূর্বক তাদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হবে। প্রয়োজনে তাদের ভর্তি ফিসহ সব ধরনের ফি মওকুফ করা হবে।ডাকসুর অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পর্কে রাব্বানী বলেন, আমাদের ডাকসুর যে অভিষেক অনুষ্ঠান করার কথা ছিল বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে আমরা সেটি করতে পারিনি। তবে সুখবর হচ্ছে যে, ডাকসুর অভিষেকের পরিবর্তে নতুন শিক্ষার্থীদের নবীনবরণের অনুষ্ঠান করা হবে। আর এটি এক থেকে পাঁচ মার্চের মধ্যে বাইরে থেকে গেস্ট এনে আমাদের অভিষেকের টাকা দিয়ে বর্ণাঢ্য নবীনবরণ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ডাকসু ভিপি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে সে সরকারের ছাত্র সংগঠন হলে তাদের প্রাধান্য বিস্তার করে এবং নিয়ন্ত্রণ করে। সেখানে আমার একটি দাবির পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য স্যার একটি সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলেছেন যে, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মেধার ভিত্তিতে সিট বরাদ্দ দেয়া হবে।এ সময় ডাকসু ভিপি আরও বলেন, আজকের কার্যনির্বাহী সভা একটি প্রাণবন্ত সভা হয়েছে। তবে বিগত দিনগুলোতে এটি সম্ভব হয়নি। কারণ ডাকসুতে ছাত্রলীগের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে আর এতদিন ছাত্রলীগের সদস্যদের আন্তরিকতার অভাব ছিল। ফলে ডাকসু নিয়ে শিক্ষার্থীদের যে প্রত্যাশা ছিল সেটি পুরোপুরি পূরণ হয়নি।এদিকে গণরুম নিয়ে আন্দোলনকারী ডাকসু সদস্য তানভীর হাসান সৈকত বলেন, আজকের সভায় আমার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য পাঁচটি হলে পরীক্ষামূলকভাবে বাংক বেড প্রতিস্থাপন করা হবে। আর আশা করি, এর মাধ্যমে আমাদের আবাসন সংকট কিছুটা হলেও কমে যাবে।
Development by: webnewsdesign.com