এই শীতে মাথাব্যথা অনেকেরই নিত্যসঙ্গী। মাঝেমাঝে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করে মাইগ্রেনজনিত মাথাব্যথা
মাইগ্রেন দীর্ঘস্থায়ী ও অত্যন্ত কষ্টদায়ক হয়ে থাকে। মাইগ্রেনের যন্ত্রণা কম থেকে বেশি সব রকমই হতে পারে। উজ্জ্বল আলো, নির্দিষ্ট গন্ধ বা তীব্র আওয়াজের ফলে ব্যথা শুরু হতে পারে। এই অস্বস্তি মাথার এক ধার থেকে শুরু হতে পারে এবং দুই থেকে তিনদিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। মাইগ্রেনের ফলে তীব্র মাথা যন্ত্রণার পাশাপাশি বমি, গা গোলানো, মুখে ও দেহে অস্বস্তিভাব দেখা দিতে পারে।
মাইগ্রেন কী
মাইগ্রেন এক বিশেষ ধরনের মাথাব্যথা। মাথার যেকোনো একপাশ থেকে শুরু হয়ে তা বিস্তৃত আকার ধারণ করে। মস্তিষ্কে স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হয়। মস্তিষ্কের বহিরাবরণে যে ধমণীগুলো আছে, সেগুলো মাথাব্যথার প্রারম্ভে স্ফীত হয়ে ফুলে যায়। মাথাব্যথার সঙ্গে সঙ্গে বমি ও বমি বমি ভাব। এতে রোগীর দৃষ্টিবিভ্রম হতে পারে।
উপসর্গ
মাইগ্রেন বয়ঃসন্ধিকাল থেকে শুরু হয় এবং মাঝবয়স পর্যন্ত কিছুদিন বা কয়েকমাস পরপর হতে পারে। মাথাব্যথা শুরু হলে তা কয়েক ঘণ্টা, এমনকি কয়েকদিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। মাথাব্যথা, বমি ভাব এই রোগের প্রধান লক্ষণ। তবে অতিরিক্ত হাই তোলা, কোনো কাজে মনোযোগ নষ্ট হওয়া, বিরক্তিবোধ করা ইত্যাদি উপসর্গ মাথাব্যথা শুরুর আগেও হতে পারে। মাথার যেকোনো অংশ থেকে এই ব্যথা শুরু হয়। পরে পুরো মাথায় ছড়িয়ে পড়ে। চোখের পেছনে ব্যথার অনুভূতি তৈরি হতে পারে। শব্দ ও আলো ভালো লাগে না। কখনো কখনো অতিরিক্ত শব্দ ও আলোয় মাথাব্যথা বেড়ে যায়।
তীব্র ঠাণ্ডা সঙ্গে মাইগ্রেনের যন্ত্রণা খুব ভোগাচ্ছে?
মাইগ্রেন চিকিৎসায় তাৎক্ষণিক ও প্রতিরোধক ওষুধের পাশাপাশি কিছু নিয়মকানুন মেনে চললে সমস্যা অনেকাংশে কমে যায়।
১. প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে হবে এবং সেটা হতে হবে পরিমিত।
২. অতিরিক্ত বা কম আলোতে কাজ না করা।
৩. কড়া রোদ বা তীব্র ঠাণ্ডা পরিহার করতে হবে।
৪. উচ্চশব্দ ও কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে বেশিক্ষণ না থাকা।
৫. বেশি সময় ধরে কম্পিউটারের মনিটর ও টিভির সামনে না থাকা।
৬. মাইগ্রেন শুরু হয়ে গেলে, প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা (বিশেষ করে বমি হয়ে থাকলে), বিশ্রাম করা, ঠাণ্ডা কাপড় মাথায় জড়িয়ে রাখা উচিত।
যেসব খাবার মাইগ্রেনের সমস্যা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে
১. ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার, যেমন ঢেঁকিছাঁটা চালের ভাত, আলু ও বার্লি মাইগ্রেন প্রতিরোধক।
২. বিভিন্ন ফল বিশেষ করে খেজুর ও ডুমুর ব্যথা উপশম করে।
৩. সবুজ, হলুদ ও কমলা রঙের শাকসবজি নিয়মিত খেলে উপকার হয়।
৪. ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি মাইগ্রেন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
৫. তিল, আটা ও বিট ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম রয়েছে।
৬. আদার টুকরো বা রস দিনে দু’বার জিনজার পাউডার পানিতে মিশিয়ে খেতে পারেন।
কী ধরনের খাবার এড়িয়ে চলবেন
চা, কফি, কোমলপানীয়, চকলেট, আইসক্রিম, দই, দুধ, মাখন টমেটো ও টকজাতীয় ফল খাবেন না।
Development by: webnewsdesign.com