শিশু থাকুক আরামে

মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩ | ৩:৩৯ অপরাহ্ণ

শিশু থাকুক আরামে
apps

কাঠফাটা রোদ। ভ্যাপসা গরম। মাঝে সাঝে আকাশ কালো মেঘে ঢেকে নামে বৃষ্টি। শীতল হয় প্রকৃতি। আবহাওয়ার এ খেয়ালিপনায় বড়দের তো বটেই, শিশুরও নাজেহাল অবস্থা। ডায়রিয়া, জ্বর, কাশি, টনসিল ফুলে যাওয়াসহ এ সময় শিশু নানা রোগে আক্রান্ত হয়। একটু সচেতন থাকলে এমন আবহাওয়াতেও সুস্থ ও স্বস্তিতে রাখতে পারেন আপনার শিশুকে। বিস্তারিত জানাচ্ছেন-কেয়া আমান।

তীব্র গরম সবার জন্যই কষ্টকর। তবে শিশু খুব বেশি স্পর্শকাতর বলে অন্য সময়ের তুলনায় এ সময়টা শিশুর জন্য বেশি কষ্টকর। এ জন্যই গরমে শিশুর খাবার-দাবার থেকে শুরু করে পোশাক পরিচ্ছদ সবকিছুতেই বাড়তি নজর দিন।

আরামদায়ক পোশাক

গরমে শিশুর পোশাক নির্বাচনে প্রথম যেটি মাথায় রাখতে হবে তা হলো, আরাম। কাপড়, কাট আর নকশা মিলিয়ে শেষ শব্দটিও হতে হবে আরাম। কাঠফাটা গরমে শিশুর জন্য পাতলা ঢিলেঢালা সুতি কাপড়ের চেয়ে আরামদায়ক কাপড় আর হতে পারে না। রঙের ক্ষেত্রে ভালো লাগবে বিভিন্ন ধরনের হালকা রং।

শিশুর গায়ে ছোট বা মাঝারি প্রিন্টের লতাপাতা, ফুল, পাখি, জ্যামিতিক নকশা, ব্লকপ্রিন্ট বেশি মানানসই। কাটের ক্ষেত্রে বেছে নিন ঢিলেঢালা সিম্পল ডিজাইন। শিশুকে হাতাকাটা ফ্রক, টপ, জাম্প স্যুট, স্কার্ট, কুর্তি, টি-শার্ট পরাতে পারেন।

পুষ্টিকর খাবার

গরমে বাচ্চারা কিছুই খেতে চায় না। ফলে শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি দেখা দেয়। তাই এ সময় শিশুর খাদ্য তালিকায় হালকা, পুষ্টিকর এবং টাটকা খাবার রাখুন। শিশুকে সবজি খিচুড়ি, সবজির স্যুপ, গরম গরম চিকেন স্যুপসহ বিভিন্নরকম তরল খাবার, বেশি বেশি পানি, ‘জিঙ্ক’ ও ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ খাবার খেতে দিন।

বিভিন্ন ধরনের মৌসুমি ফল, ঘরে তৈরি ফুলের জুস দিতে পারেন। স্কুল ব্যাগে পানির বোতলের সঙ্গে এক বোতল লেবুর শরবত কিংবা জুস দিন। টিফিনে ভাজা পোড়া খাবার বাদ দিয়ে দিতে পারেন সবজি নুডলস, ফল, ফ্রুটস কাস্টার্ড, রুটি, হালুয়া ইত্যাদি।

অসুখ-বিসুখ প্রতিরোধে

গরমে শিশুর ভাইরাল জ্বর, ডায়রিয়া, ঠান্ডা-কাশি, চিকেন পক্সসহ বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ রোগে বেশি ভোগে। ঘেমে জামা ভিজে বাচ্চাদের ঠান্ডা, নিউমোনিয়াসহ শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। ঘামে বাচ্চাদের জামা ভিজে গেলে শরীর মুছে হালকা করে পাউডার দিন। গায়ের ঘাম যেন গায়েই না শুকায় সেদিকে খেয়াল রাখুন। রাতে শিশুকে খালি গায়ে ঘুমাতে দেবেন না। এতে ফ্যান বা এসির ঠান্ডা সরাসরি তাকে আক্রান্ত করতে পারে।

এসির কারণে যেন ঘর খুব বেশি ঠান্ডা না হয়, সেদিকেও লক্ষ রাখুন। শিশুকে প্রতিদিন গোসল করান। রাস্তার পাশের কাটা ফল, জুস, শরবত খাওয়ানো উচিত নয়। এসব খাবার থেকে ডায়রিয়া, বমি, টায়ফয়েড, হেপাটাইটিস হতে পারে। খাবার পানি অবশ্যই ফুটানো বা বিশুদ্ধ হতে হবে। আইসক্রিম, কোল্ড ড্রিংকস, ঠান্ডা পানি খাওয়া থেকে যতটা সম্ভব শিশুকে দূরে রাখুন।

পানিশূন্যতা পূরণে

এ সময় পর্যাপ্ত পানি পান না করলে শিশুর পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। পানিশূন্যতায় শিশু দুর্বল হয়ে যাওয়া, প্রস্রাব কমে যাওয়া, খেতে না পারাসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই লবণ ও পানির ঘাটতি পূরণে মাঝে মধ্যে খাবার স্যালাইন খেতে দিন, তবে প্রতিদিন নয়। সেই সঙ্গে ডাব, টকদই, দই-চিড়া-চিনি, লবণ গুড়ের শরবত খেতে দিন। ৩-৫ বছর বয়সি শিশুকে দিনে অন্তত দুই থেকে আড়াই লিটার পানি, শরবত মিলিয়ে পান করাতে হবে।

ঘুরতে গেলে

শিশুর শরীর নাজুক হয়। তাই এ রোদ-গরমে শিশুকে নিয়ে ট্যুরে না যাওয়াই ভালো। যদি যেতেই হয়, তাহলে মেয়ে বাচ্চাদের সাদা বা হালকা যে কোনো রঙের সুতি হাতাকাটা ফ্রক, ফতুয়া, টি-শার্ট পরিয়ে দিন। সঙ্গে লেগিংস, পাতলা জিন্স থাকতে পারে। বাচ্চাদের টি-শার্টে এখন জঙ্গল কমিকস, বিচ প্রিন্টে ডিজাইন পাওয়া যায়।

ঘুরতে গেলে আরামদায়ক এ টি-শার্টগুলো পরাতে পারেন। সম্ভব হলে শিশুর জন্য ঘরে তৈরি হালকা খাবার, ফল, জুস, পানি রাখুন সঙ্গে। রোদ থাকলে, ঘেমে গেলে ওয়েট টিস্যু দিয়ে বারবার মুখ মুছে দিন। ফন্টসাইড বেণি করে চুল উঁচু করে বেঁধে দিন। শিশু স্বস্তি পাবে।

Development by: webnewsdesign.com