শত্রুমুক্ত হয়েছিল ঢাকার আশপাশ

সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯ | ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ

শত্রুমুক্ত হয়েছিল ঢাকার আশপাশ
apps

রুদ্র রেজা
মহান বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের দশম দিন আজ। একাত্তরের এ দিনটি ছিল শুক্রবার। এদিন ঢাকার আশপাশের সকল এলাকাই এদিন শত্রুমুক্ত হয়েছিল। শত্রুমুক্ত হয়েছিল কুমিল্লার লাকসাম। লাকসামে সেদিন পাঁচ শতাধিক পাকিস্তানি সেনা আত্মসমর্পণ করেছিল। পরদিন পাকিস্তানবাহিনীর ঢাকায় ফিরে আসার চেষ্টা সবদিক দিয়ে ব্যর্থ হয়। মুক্তিবাহিনী ঢাকা দখল করে নেয়ার জন্য এদিন প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছিল। ভৈরব বাজার থেকে মিত্রবাহিনীর ৫৭ নম্বর ডিভিশন ঢাকার দিকে অগ্রসর হয়েছিল। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় প্রধানের প থেকে এদিনই পাকিস্তানী বাহিনীকে অস্ত্রশস্ত্রসহ আত্মসমর্পণের অনুমতি দেয়া হয়। এদিন আরো যেসব এলাকা মুক্ত হয় তা হলো- ভোলা, ময়মনসিংহ, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ, টাঙ্গাইলের ঘাটাইল ও মধুপুর, মুক্তাগাছা, নড়াইলের বালিয়া, নড়াইল, নরসিংদীর রায়পুরা, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ, মাদারীপুর ইত্যাদি। একাত্তরের এই দিনে খুলনা শিপইয়ার্ডের কাছে দায়িত্ব পালন করছিলেন বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমিন। শত্রুবাহিনীর আক্রমণে প্রতিরোধ গড়ে সেদিন শহীদ হন এই যোদ্ধা।
এদিন পাকিস্তানী সেনারা যুদ্ধের মাঠে দ্রুত তাদের নিয়ন্ত্রণ হারাতে থাকে। ফলে সৈন্যদের মনোবল ভেঙে পড়ে। যুদ্ধে পরাজয়ের আশঙ্কায় লে. জেনারেল নিয়াজী পালাবার পাঁয়তারা করে। তার গোপন এই অভিসন্ধি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি ফাঁস করে দেয়। এদিন মিত্রবাহিনীর জঙ্গি বিমানগুলো ঢাকা বেতার কেন্দ্রের ওপর আক্রমণ করে এবং কুর্মিটোলার ওপর বারবার রকেট হামলা অব্যাহত রেখে নিজেদের কর্তৃত্ব স্থাপন করে। সম্মিলিত বাহিনী উত্তরাঞ্চলের যুদ্ধে সর্বাত্মক সাফল্য অর্জন করেছে। মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী যৌথ অভিযান চালিয়ে দিনাজপুর, রংপুর ও সৈয়দপুরের শত্রুবাহিনীকে পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
একাত্তরের এদিন থেকেই মূলত স্বাধীনতা যুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় ঘনিয়ে আসতে থাকে। মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকরা ‘বিজয় কবে হবে’ প্রশ্নের উত্তর পেতে শুরু করে।
দৈনিক পাকিস্তান ও আজাদের খবর অনুযায়ী, অবস্থা বেগতিক দেখে লে. জেনারেল নিয়াজী তার দুর্বলতা ঢাকার জন্য কন্টিনেন্টাল হোটেলে গিয়ে দম্ভভরে বলেন, কোথায় বিদেশী সাংবাদিকরা, আমি তাদের জানাতে চাই, আমি কখনো আমার সেনাবাহিনীকে ছেড়ে যাবো না। অন্যদিকে সরকারিভাবে বলা হয়, পাকিস্তান সরকার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণ করে। জাতিসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি মি. আগাশাহী জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব মি. উথান্টের সঙ্গে সাাৎ করে সৈন্য প্রত্যাহারের কথা ব্যক্ত করে।

Development by: webnewsdesign.com