বৃহত্তম চার লাইনের রেলওয়ে জংশনখ্যাত দিনাজপুরের পার্বতীপুর রেলওয়ে স্টেশন। কেন্দ্রীয় লোকোমটিভ কারখানা, ক্যারেজ ডিপো, রানিং লোকো সেডসহ বিভিন্ন রেল দফতরের কর্মকর্তা, শ্রমিক কর্মচারীসহ প্রায় ১৫ হাজার রেল পরিবারের সদস্যের বিপরীতে পার্বতীপুরে চিকিৎসা জন্য রয়েছে ১৬ শয্যা বিশিষ্ট একটি মাত্র রেলওয়ে হাসপাতাল। অথচ প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, নৈশ্য প্রহরী, নার্স না থাকায় প্রতিনিয়তই ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা।
হাসপাতালটিতে ৩ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও দীর্ঘদিন থেকে ডাক্তার না থাকায় বহিরাগত রোগীদের একমাত্র ভরসা ফার্মাসিস্ট রমজান আলী।
ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এ হাসপাতাল ভবনটি সরকারিভাবে পূণঃ সংস্কার না করায় এখন নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে এটি। ভবনের ফাটল ধরায় বৃষ্টিতে পানি পড়ে গুদামের অনেক ওষুধ, অফিসের মূল্যবান কাগজপত্রসহ ফার্নিচার নষ্ট হচ্ছে। জরাজীর্ণ হাসপাতাল ভবনটি যেকোনো সময় ভেঙে পড়ার অসংঙ্কা কর্তৃপক্ষের।
এদিকে পাহারাদার না থাকায় হাসপাতালের মূল্যবান মালামাল যেকোনো সময় চুরির সম্ভবনাও রয়েছে। অতিসত্বর এসব সমস্যা সমাধানে ডাক্তার ও পাহারাদার নিয়োগ এবং হাসপাতাল ভবনটি সংস্কারে সরকারের সু-দৃষ্টির দাবি জানান ভুক্তভোগী রেল কর্মকর্তা, শ্রমিক কর্মচারীরা।
চিকিৎসা নিতে আসা রেল পরিবারের সদস্য জাকির হোসেন জানান, বাবার চিকিৎসার জন্য এসেছিলাম। এখানে এসে শুনলাম কোন ডাক্তার নেই। শুধু আমি না এখানে কর্মচারীসহ প্রায় ১৫ হাজার রেল পরিবার সদস্যের ভরসা এতমাত্র এই হাসপাতাল। তাই এখানে স্থায়ী ডাক্তার নিয়োগসহ সকল সমস্যা সমাধানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
এ বিষয়ে ফার্মাসিস্ট রমজান আলী জানান, হাসপাতালে দীর্ঘদিন নির্দিষ্ট কোন ডাক্তার না থাকায় চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। এখন এডিও সহ দুটি সহকারী সার্জনসহ ৩টি পদে কোন চিকিৎসক না থাকায় আমি রোগীদের ৩দিনের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করে আসছি। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এ হাসপাতাল ভবনটি সরকারিভাবে সংস্কার করার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট চিঠি দেওয়া হয়েছে। আর অসংরক্ষিত অবস্থার কারণে গোচরণ ভূমিসহ বর্তমানে আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে হাসপাতাল ক্যাম্পাসটি।
লালমনিরহাট ডিভিশনের বিভাগীয় মেডিকেল অফিসার আনিসুল হক বলেন, পার্বতীপুর রেলওয়ে হাসপাতালে ৩ জন চিকিৎসকের বিপরীতে একজনও নেই। লালমনিরহাট হাটেও একই অবস্থা। ৭ জন চিকিৎসকের বিপরীতে কোনো চিকিৎসক নেই সেখানেও। ১০জন ফার্মাসিস্টের জায়গায় কমর্রত আছে মাত্র ২ জন। এ ছাড়াও রেলওয়ে ভবনের এডিজির (আরএস) তত্ত্বাবধানে পরিচালিত পার্বতীপুর লোকোমোটিভ কারখানার হাসপাতালটিতেও ২ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও সেখানেও কোনো না থাকায় বাধ্য হয়ে তিনি নিজেই সপ্তাহে দু’দিন লোকা হাসপাতালে এসে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন।
ডাক্তারের সংকটের কারণে রেল পরিবারের সদস্যরা পুরোপুরি চিকিৎসা না পাওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য বাধ্যহয়ে বিভিন্ন ক্লিনিক কিংবা প্রাইভেট হাসপাতালের ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হচ্ছে। তাই বিভিন্ন রেল দপ্তরের কর্মকর্তা, শ্রমিক কর্মচারীসহ স্থানীয় সচেতন মহল পার্বতীপুর রেলওয়ে হাসপাতালসহ চিকিৎসক সংকট সকল রেলওয়ে হাসপাতালে নির্দিষ্ট ডাক্তার সংশ্লিষ্ট পদে কর্মকর্তা কর্মচারী প্রদদানের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।
Development by: webnewsdesign.com