১২ বছর পরে আয়োজিত সমাবর্তনকে সফলভাবে সম্পন্ন করতে তোড়জোড় করে শেষ সময়ের প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রাষ্ট্রপতির উপস্থিতিতে সাড়ে ৬ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীদের হাতে সনদ তুলে দিতে ক্যাম্পাসকে নতুন মোড়কে সাজানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে মূল অনুষ্ঠানের মঞ্চ ও প্যান্ডেল তৈরির কাজ চলছে। ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে রাস্তা মেরামত করাসহ গোলচত্বরের পুনঃ নির্মাণ করে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে। বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন, নানান ডিজাইনের গেটসহ সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারীদের জ্ঞাতার্থে বিভিন্ন তথ্য সংবলিত নির্দেশিকা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পূর্বনির্ধারিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ৮ জানুয়ারি তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে, সমাবর্তনকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রপতির আগমন উপলক্ষে ক্যাম্পাসে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদ বলেন, রাষ্ট্রপতি দেশের ভিআইপি ব্যক্তিত্ব সে হিসেবে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সংস্থাগুলো তাদের মতো করে নিরাপত্তার ব্যাপারটা দেখভাল করছে।
জানা গেছে, গ্র্যাজুয়েটদের হাতে সনদ তুলে দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তর। এ নিয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘সমাবর্তনে গ্র্যাজুয়েটদের হাতে সনদ তুলে দিতে বেশ আগে থেকেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আশা করছি সময়ের মাঝে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারবো।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের সমাবর্তনে রেজিস্ট্রেশন করেছেন ৬ হাজার ৭৫০ শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে স্নাতকোত্তর ১ হাজার ১২৭ জন, স্নাতক ৪ হাজার, পিএইচডি ২ জন, এমবিবিএস ৮৭৮ জন, এমএস ও এমডি ডিগ্রিধারী ৬ জন এবং নার্সিংয়ের ১২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন।
এ সমাবর্তনে ২০০১-০২ শিক্ষাবর্ষ থেকে ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতকে সর্বোচ্চ ফলাফলের জন্য ১০ জন স্নাতকোত্তরে ৫ জন ও ২য় সমাবর্তনে বাকি থাকা ৫ স্বর্ণপদকসহ মোট ২০ জন শিক্ষার্থীকে রাষ্ট্রপতির স্বর্ণপদক প্রদান করা হবে।
এছাড়া সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফ্যাকাল্টির ও অধিভুক্ত কলেজসমূহের ৮৯ জন শিক্ষার্থীকে ‘ভাইস চ্যান্সেলর’ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে।
সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সমাবর্তনের আয়োজন সফল ভাবে সম্পন্ন করার জন্য আমরা ১৭টি উপকমিটি গঠন করেছি। প্রতিটি কমিটি সমাবর্তনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে দিনভর কাজ করে যাচ্ছে। আশা করছি একটি সফল সমাবর্তন উপহার দিতে পারবো শিক্ষার্থীদের।
সমাবর্তনের বক্তা বিশিষ্ট লেখক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম উপস্থিত থাকবেন। আগামী ৭ জানুয়ারি বেলা আড়াইটায় সমাবর্তনের মহড়া অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান উপাচার্য।
উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর দীর্ঘ ২৮ বছরে মাত্র দু’টি সমাবর্তন পেয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ১৯৯৮ সালের ২৯ এপ্রিল বিশবিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন এবং এর ৯ বছর পর ২০০৭ সালের ৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়।
Development by: webnewsdesign.com