রাবির শিক্ষার্থীদের হোটেলে বাকি খাইয়ে দেউলিয়া বাবু ভাই

শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ | ৫:১২ অপরাহ্ণ

রাবির শিক্ষার্থীদের হোটেলে বাকি খাইয়ে দেউলিয়া বাবু ভাই
রাবির শিক্ষার্থীদের হোটেলে বাকি খাইয়ে দেউলিয়া বাবু ভাই
apps

রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষার্থীদের হোটেলে বাকি খাইয়ে প্রায় পথে বসা মানিক হোসেন ওরফে বাবু। বকেয়ার টাকা পাওয়ার আশায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্ধ দোকানের পাশেই থাকছেন। দোকানের পাশে বসে খাতা উল্টেপাল্টে বাকি খাওয়া শিক্ষার্থীদের ফোন দিতে দেখা যায় তাকে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ জিয়াউর রহমান হলের সামনে খাবারের দোকান চালাতেন মো: মানিক হোসেন (৩৩)। শিক্ষার্থীরা তাকে ‘বাবু ভাই’ বলে ডাকেন। বাজারের টাকা না থাকায় নিরুপায় হয়ে ২২ ডিসেম্বর তিনি তার দোকানটি বন্ধ করে দিয়েছেন।

জানা যায়, বাবুর দোকানে ১৩ জন কর্মচারী কাজ করতেন। তারা দৈনিক চার থেকে পাঁচশ টাকা পেতেন। তার দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই ১৩ জন কর্মচারীও কাজ হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

দোকান মালিক মানিক হোসেন বাবু বলেন, ১২ নভেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি হওয়ার কথা বলে দলবল নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমার হোটেলে খেয়েছেন। আর আমাকে বলা হয়েছিল কমিটি হলে তারা পুরো টাকা দিয়ে দেবেন। কিন্তু কমিটি না হওয়ায় আমাকে কোনো টাকা দেওয়া হয়নি।

তিনি দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর কাছে বকেয়ার টাকা পান বলে জানান। সেখানে কোনো শিক্ষার্থীর কাছে বেশি আবার কোনো শিক্ষার্থীর কাছে কম। সব মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে বাকি টাকার পরিমাণ প্রায় দুই-আড়াই লাখ টাকা ওপরে। এতে এক নেতার কাছে সর্বোচ্চ ২৯ হাজার টাকা পাওয়ার কথা বলেন তিনি।

এ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কাছে আশ্বাস পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক শিক্ষার্থী সময় নিয়েছে। কেউ বলছে জানুয়ারির ২ তারিখ দিবে আবার কেউবা ৫ তারিখ। এখন দিবে কিনা জানি না। তবে শিক্ষার্থীরা টাকা দিলে আমি আবারও দোকান চালু করতে পারবো।

শহীদ জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম বলেন, বাবু ভাই অসম্ভব ভালো একটা মানুষ। ভাইয়া ছাড়া কখনো ডাক দেয় না আমাদের। আমিও মাঝে মাঝে বাকি খাই কিন্তু সময়ে সময়ে তা পরিশোধ করে দিচ্ছি। এখানে যারা দলীয় পরিচয়ে বা সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে বাকি খেয়ে বকেয়া পরিশোধ করছে না তারা ঠিক করছেন না। তাদের উচিত বাবু ভাইয়ের এমন বিপদে তার বকেয়া পরিশোধ করে পাশে দাঁড়ানো।

এদিকে রাকসু আন্দোলন মঞ্চের আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ অন্তর বলেন, বকেয়া টাকা তুলতে না পেরে খাবারের দোকান বন্ধ করে দিয়ে কান্না করছে হোটেল দোকানদার বাবু। যাদের বকেয়া আছে, তাদের উচিত দ্রুত বাবু ভাইয়ের পাওনা টাকা পরিশোধ করে তার ব্যবসা চালিয়ে যেতে সহযোগিতা করা। এই খাবার দোকানের আয় দিয়েই চলে বাবু ভাইয়ের সংসার। বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

Development by: webnewsdesign.com