রাবির ভর্তি পরীক্ষার আগেই খালি নেই মহানগরীর কোনো হোটেল

রবিবার, ২১ মে ২০২৩ | ৫:৪০ অপরাহ্ণ

রাবির ভর্তি পরীক্ষার আগেই খালি নেই মহানগরীর কোনো হোটেল
রাবির ভর্তি পরীক্ষার আগেই খালি নেই মহানগরীর কোনো হোটেল
apps

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষা আগামী ২৯-৩১ মে অনুষ্ঠিত হবে। তিনদিন চলবে পরীক্ষা। এরমধ্যে এখনকার আবাসিক হোটেলগুলোতে মিলছে না সিট। এতে দুশ্চিস্তায় পড়েছেন ভর্তিচ্ছুদের অভিভাবকরা।

রাজশাহী মহানগরীর কুমারপাড়া এলাকার সজিব জয়সোয়াল তার এক আত্মীয়র জন্য দুদিন ধরে আবাসিক হোটেলে একটি সিট খুঁজছেন। নগরীর অধিকাংশ হোটেলে গেছেন তিনি। কিন্তু কোথাও সিট পাওয়া যাচ্ছে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ সেশনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় তিন হাজার ৯৩০ আসনের বিপরীতে এবার তিন ইউনিট মিলিয়ে কোটাসহ চূড়ান্ত আবেদন জমা পড়েছে এক লাখ ৭৮ হাজার ৫৭৪টি। এরমধ্যে ‘এ’ ইউনিটে ৭২ হাজার ৫০টি, ‘বি’ ইউনিটে ৩০ হাজার ৬৭৪টি এবং ‘সি’ ইউনিটে চূড়ান্ত আবেদন জমা পড়েছে ৭৫ হাজার ৮৫০টি। এ হিসেব অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষায় প্রতি আসনে লড়াই করবে ৪৫ জন ভর্তিচ্ছু।

রাজশাহী আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির তথ্যমতে, রাজশাহী মহানগরীতে ছোট-বড় মিলে ৬৫টি আবাসিক হোটেল আছে। এসব হোটেলে সর্বোচ্চ আড়াই হাজার লোক থাকতে পারবেন। তবে এরই মধ্যে এসব হোটেল বুকিং শেষ হয়েছে। ফলে অনেক অভিভাবক ও তাদের আত্মীয়-স্বজনরা এখন হোটেলে সিট খুঁজতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ছেন।

রাজশাহী মহানগরীর সাহেব বজার এলাকার বাসিন্দা আসাদ সরকার। তার এক আত্মীয় আসবে পরীক্ষা দিতে। আগামী ২৯ তারিখ তার দুটি সিট দরকার। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে তিনি রাজশাহীর প্রায় সব কয়টি হোটেলেই তিনি খোঁজ নিয়েছেন। কোথাও কোনো সিট খুঁজে পাচ্ছেন না।
তিনি বলেন, এক আত্মীয় এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসবে। সেজন্য ২৯ তারিখের হোটেলের দুটি সিট দরকার। কিন্তু রাজশাহীর কোথাও কোনো সিট নেই।

একই অবস্থা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত জোবায়ের হাসানের। ঢাকা থেকে তারও এক আত্মীয় আসবে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে। তবে ৩০ তারিখের কোনো সিটই খুঁজে পাননি তিনি। বিভিন্ন এলাকায় তিনি খোঁজ নিয়েও আবাসিকে কোনো ব্যবস্থা করতে পারেননি।

তিনি বলেন, মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার জন্যই এমন চাপ হয়েছে। কোনো আবাসিক হোটেলেই সিট নেই। ফলে আবাসন নিয়ে বেশ চিন্তায় পড়েছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।

রাজশাহী মহানগরীর রেলগেট এলাকার একটি আবাসিক হোটেল হোটেল ডালাস ইন্টারন্যাশনাল। এ হোটেলেও নেই ওই সময়কার কোনো ফাঁকা সিট। এক মাস আগেই অনেকেই বুকিং দিয়ে রেখেছে।

হোটেলের মালিক মো: ডলার বলেন, আমাদের এখানে কোনো সিটই ফাঁকা নেই। প্রায় এক মাস আগেই অনেকে টাকা দিয়ে বুকিং করে রেখেছে। এখন নিজেদের প্রয়োজনেও সিট পাচ্ছি না।

রাজশাহী আধুনিক আবাসিক হোটেলগুলো একটি হোটেল রয়েল রাজ। এই হোটেলের ম্যানেজার তাওফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের হোটেলে কোনো সিট নেই। অনেক আগেই রাবি ভর্তি পরীক্ষার জন্য সিট বুকিং হয়ে গেছে।
রাজশাহী আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার হাসান কবির বলেন, প্রতি বছরই এ সময়টায় এ ধরনের সংকট তৈরি হয়। আমরা হোটেল মালিকরা এ সময়টায় বিব্রত হই, বিড়ম্বনাতেও পড়ি। কিন্তু সাময়িক সময়ের জন্য এ সংকট কাটার জন্য আমাদের আসলে কোনো করণীয় নেই। এভাবেই চলে আসছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে বলেন, প্রতি বছরই ভর্তি পরীক্ষার সময় আবাসন নিয়ে বাড়তি চাপ হয়। আমাদের এ বিষয়ে কাজগুলো চলছে। গতবার যে ব্যবস্থাগুলো নেওয়া হয়েছিলো তারই আদলে এবারও কিছু জায়গা রাখা হবে। হলের গণরুম, জিমনেসিয়ামের জায়গা।

তিনি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে আবাসন সংকট পূরণ করা সম্ভব নয়। আগামী ২৩ তারিখ মেস মালিকসহ অনেকে সঙ্গে মিটিং আছে। তাদের সঙ্গে কথা হবে। যাতে করে বাহিরের লোকদের সংকট অনেকেটা লাঘব করা যায় সেটি চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে যতটুক করা সম্ভব আবাসন সংকট লাঘব করার চেষ্টা করছি।

Development by: webnewsdesign.com