রাবিতে হল না খুলে পরীক্ষা: শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

মঙ্গলবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২০ | ৩:৪৫ অপরাহ্ণ

রাবিতে হল না খুলে পরীক্ষা: শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
apps

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) হল না খুলে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত অমানবিক। হল খুলে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানান তাঁরা। তবে প্রশাসন বলছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা না থাকায় হল খুলে পরীক্ষা নেওয়া যাবে না।

এর আগে সোমবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে শিক্ষা পরিষদের এক জরুরি সভায় ২০১৯ সালের আটকে থাকা স্নাতক, স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) পরীক্ষা ২০২১ সালের দুই জানুয়ারি থেকে শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান।

এ নিয়ে সোমবার থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার’ নামক গ্রুপে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের ব্যাপক সমালোচনা করেন। পরিবার গ্রুপে মো. এ ওয়াহেদ নামের এক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘হল খোলা ব্যতিত যেকোনো পরীক্ষার সিদ্ধান্ত অমানবিক।’

জাহিদ ইসলাম শুভ নামের এক শিক্ষার্থী প্রশ্ন তোলেন, ‘হলে থাকলে কররোনার ঝুঁকি আছে। তাহলে মেসগুলোতে কি আইসােলেশন ব্যবস্থা আছে?’ হলের সবার পরীক্ষা না থাকায় হলেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সহজ বলে মনে করছেন তাসফিয়া হোসাইন নামের এক শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, হলে এক রুমের সবার একসঙ্গে পরীক্ষা থাকবে না। তার রুম থেকে শুধু তার পরীক্ষা রয়েছে। এছাড়া স্বল্প সময়ে মেস খুঁজে পাওয়া নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।

রাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম ফারুকী বলেন, বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা পরিষদের জরুরী সভায় অনেকে প্রশ্ন তুলেছিল। এর আগে আমাদের শিক্ষক সমিতির মধ্যেও আলোচনা হয়েছিল হল খুলে পরীক্ষা নেওয়া প্রসঙ্গে। স্বল্প সময়ে মেস খোঁজা নিয়ে সকল শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নারী শিক্ষার্থীরা বেশি ভোগান্তিতে পড়বেন। তবে যেহেতু প্রধানমন্ত্রী বা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে হল খোলা প্রসঙ্গে কোনও নির্দেশনা নেই সেক্ষেত্রে রাবি শিক্ষক সমিতি চাইলেও সেটা সম্ভব না।

জানতে চাইলে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক রবিউল ইসলাম বলেন, আমরা শিক্ষকরা সবসময়ই শিক্ষার্থীদের পক্ষে। তবে বর্তমান সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা কিংবা আবাসিক হল খোলা রাখার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে নেই। একজন হল প্রাধ্যক্ষ হিসেবে বলতে পারি বর্তমান পরিস্থিতিতে হল খুলে দেওয়া খুবই বিপজ্জনক। যেহেতু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে আইসোলেশনের ব্যবস্থা নেই। আবাসিক হল খোলা রাখা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেভাবে বলেছে, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুকির কথা ভেবে আমরা হল প্রাধ্যক্ষরা সেই কথায় একমত হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বা শিক্ষা মন্ত্রণালয় যদি বলে হল খুলে দিতে হবে। তাহলে প্রথমে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি শিক্ষার্থীদের পক্ষে। শিক্ষার্থীরা বাইরের মেসে একসাথে একরুমে তিন-চারজন করে না থেকে হলে এক রুমে একজন করে থেকে পরীক্ষা দিলে স্বাস্থ্যঝুঁকি কিছুটা হলেও কম থাকত। তবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা যেহেতু নেই। সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে হল খোলা রেখে পরীক্ষা নেওয়া যাবে না।

Development by: webnewsdesign.com