রাজশাহীতে সাংবাদিকের ওপর হামলা, সাবেক কাউন্সিলরসহ ২৩ জনের নামে মামলা

মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩ | ৬:৩৯ অপরাহ্ণ

রাজশাহীতে সাংবাদিকের ওপর হামলা, সাবেক কাউন্সিলরসহ ২৩ জনের নামে মামলা
রাজশাহীতে সাংবাদিকের ওপর হামলা, সাবেক কাউন্সিলরসহ ২৩ জনের নামে মামলা
apps

রাজশাহী মহানগরীর সাগরপাড়া বটতলা এলাকায় ইত্তেফাকের ফটোসাংবাদিক আজাহার উদ্দিনের বাসা ও পরিবারের উপর হামলা চালিয়ে মারপিট, বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। এ ঘটনায় অভিযোগে ২৩ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সাবেক কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা দিলদার হোসেন এবং স্থানীয় ভূমিদ্যু নুরুসহ তাদের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী এবং হামলাকারীদের বিরুদ্ধে সোমবার রাতেই বোয়ালিয়া থানায় মামলা দায়ের করা হয় ।

বোয়ালিয়া থানার ওসি সোহরাওয়ার্দি বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, এ মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করাও হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। তবে ঘটনার পরেই আসামিরা পালিয়ে গেছে।

গত ১৮ মার্চ দিনের বেলা সন্ত্রাসী ভাড়া করে দুই দফায় ওই পরিবারের উপর হামলা চালানো হয়। হামলায় ওই পরিবারের নারী ও শিশুসহ ১০/১২ জন আহত হয়েছেন।

গত শনিবার ফটোসাংবাদিক আজাহারের সহোদর শামীমের ছেলে মধু সাগরপাড়া বটতলা গলির ভেতরে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে ছিলেন। এসময় নুরু ও তার ভাড়াটে বাহিনী উস্কানীমূলক কথা বললে শুরু হয় বাকবির্তডা। এক পযার্য়ে ভাড়াটে বাহিনীরা মধুকে ধারালো হাসুয়া, হকি, লাঠি দিয়ে মারধর করে। পরে মধুকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার মাথায় ৮টি ও পায়ে ৪ টি সেলাই দেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে দফায় দফায় হামলার পরও মামলা রেকর্ড না হওয়ায় সোমবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টা ৫৫ মিনিটে একই সন্ত্রাসীরা ফটোসাংবাদিক আজাহার উদ্দিনের বাড়ি দখলের উদ্দেশ্যে আবার হামলা চালায়। হামলায় আজাহার উদ্দিন, তার স্ত্রী শবনম, ভাতিজা মামুন গুরুতর আহত হন। এসময় সন্ত্রাসীরা তার মোটর সাইকেল ও বাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। খবর পেয়ে বোয়ালিয়া থানা ও ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ হামলায় জড়িতদের পরিবারের কয়েক সদস্যকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

জানা গেছে, পূর্বে এই জমি নিয়ে দিলদারের সাথে একাধিক বার সমঝোতার হয়েছে। তখন দিলদার সময় নিয়েছিল। কিন্তু সময় নেওয়ার ছয়মাস পরেও কোনো সাড়া দেয়নি। বিহারিরাও সমঝোতা চেয়েছিল। কারণ ১৫টি পরিবার অসহায়, তারা সকলেই প্রায় বৃদ্ধ। এ বিষয়ে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বরাবর লিখিত দরখাস্তও দেওয়া হয়েছে। সেই সূত্রে তহসিল অফিসেও বসা হয়েছিলো। কিন্তু সেখানে হামলাকারীদের পক্ষে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছিলো। সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলদের সাথে বসলেও হামলাকারীদের পক্ষে রায় দেওয়া হয়েছে। অসহায় বিহারিদের পক্ষে কোনো অভিযোগ আমলেই নেয়া হয়নি। অথচ, বিহারিরা তহসিল অফিসে প্রথমে খোজ নিতে গেলে সেখানে মজিবর রহমানের নামে কোনো রেকর্ড পায়নি।

এরপর ৬মাস পরে আবারও যোগাযোগ করলে সেখানে খাজনা খারিজের কাগজ পাওয়া গেছে। বিহারিদের পূর্ব মালিকানা থাকা অবস্থায় যেসকল খাজনা খারিজ করা হয়েছিলো সেগুলো রেকর্ডে খুজে পাওয়া যায়নি, পেইজটি ছেড়া ছিলো। এদিকে রেজিস্ট্রি অফিসে গেলেও সেখানেও বালাম বই অনেক পুরাতন হয়ে যাবার কারণে পেইজটির কিছু অংশ নষ্ট পাওয়া যায়। সেজন্য বিহারিদেরকে রেজিস্ট্রি অফিস একটি প্রত্যায়ন পত্র দেয়। পরে বিহারিরা একটি স্যাটিফাই কপি পায়। তাতে প্রায় সাড়ে ৪বিঘা জায়গা উল্লেখ আছে। এখানে ১৫জনের মালিকানাও আছে। এদিকে এতদিন ধরে দখলদাররা সাড়ে ৪বিঘা জমির মধ্যে সাড়ে ৩৩ কাঠা জমি নিজেদের বলে দাবি করে আসছে। শেষ বার দিলদারের সাথে বসায় সে সাড়ে ৩৩ কাঠা জায়গা তার বলে দাবি করেন, সেখান থেকে সাড়ে ১৩ কাঠা জমি বিহারিদের কাছে থেকে বুঝে নিতে চান।

বিহারিরা দিলদারকে জানিয়েছিল, পুকুরে ২৫ কাঠা জমি আগে আমাদেরকে বুঝিয়ে দেখান। তারপরে আমরা আপনাকে সাড়ে ১৩কাঠা জমি বুঝিয়ে দিবো। তারপর থেকে দিলদারের সাথে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। তবে ভিতর ভিতর তাদের পরিকল্পনা ছিলো পুরো জায়গাটি হাতিয়ে নেওয়ার। এদিকে নুরুর পরিবার থেকে জানানো হয় দিলদারের থেকে পুরো জায়গাটি তারা কিনে নেন।

Development by: webnewsdesign.com