রাজশাহীতে এমপি আয়েনসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে কৃষকলীগ নেত্রীর আভিযোগ দায়ের

সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০২২ | ৫:০৬ অপরাহ্ণ

রাজশাহীতে এমপি আয়েনসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে কৃষকলীগ নেত্রীর আভিযোগ দায়ের
রাজশাহীতে এমপি আয়েনসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে কৃষকলীগ নেত্রীর আভিযোগ দায়ের
apps

রাজশাহী-৩ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মো: আয়েন উদ্দিন, মোহনপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম ও এমপির সাবেক এপিএস একরামুল হক বিজয়সহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৭ জনের বিরুদ্ধে মোহনপুর থানায় হত্যা চেষ্টার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় মোট ১৫ জনকে আসামী করা হয়েছে।

মামলার অপর আসামিরা হলেন, মোহনপুর উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি ও এমপির চাচাতো ভাই একরামুল হক বিজয়, উপজেলা মহিলা লীগের সভাপতি ডলি আক্তার, ঘাসিগ্রাম ইউনিয়ন মহিলা লীগ সভাপতি ডলি বেগম, এমপির গাড়ির ড্রাইভার সাজ্জাদ হোসেন, উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক  হুমায়ূন কবির, জুয়েল রানা। বাকিদের অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে।

রবিবার (২৭ নভেম্বর) রাত ৮ টায় অভিযোগটি দায়ের করেন মোহনপুর উপজেলা কৃষক লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য শেখ হাবিবা। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনের বিরুদ্ধে দখলদারি ও জলসাঘরের সমালোচনাসহ বিভিন্ন কুর্কম নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ায় শত্রুতার জের ধরে অভিযুক্তরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে গত বুধবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে মোহনপুর উপজেলা চত্ত¡রে হাবিবার উপর হামলা চালায়।

এসময় আয়েন উদ্দিন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট আব্দুস সালামের হুকুমে একরামুল হক বিজয় লোহার হাতুড়ী দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে শেখ হাবিবার মাথায় আঘাত ও শ্লীলতাহানি করে। অন্যান্য আসামিরা তার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা, মোবাইল ফোন এবং গলায় থাকা ৭০ হাজার টাকা মূল্যের ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেন ছিনিয়ে নেয়।

অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, অজ্ঞাতনামারাসহ অন্যান্য অভিযুক্তরা অভিযুক্তরা এলাপাতাড়ীভাবে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল ঘুষি মেরে ও চুলের মুঠি ধরে পেটাতে পেটাতে মোহনপুর উপজেলার আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আটকে রাখে। পরে মোহনপুর থানা পুলিশ ও স্থানীয়রা উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করান।

শেখ হাবিবা বলেন, ওইদিন মোহনপুর উপজেলা পরিষদের হলরুমে মাসিক মিটিং ছিল। মিটিংগে স্থানীয় সংসদ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, নির্বাহী অফিসার, পুলিশ প্রশাসন, কেশরহাট পৌরসভার মেয়র, ছয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, প্রথম দফা আমাকে এমপির এপিএস একমুল হক বিজয় পেটানোর পর উপজেলা পরিষদের হলরুমের সামনে বিচারের দাবিতে অনশনে বসি। ভেবেছিলাম মিটিং থেকে বের হয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ প্রশাসন আমার কথা শুনে সঠিক পদক্ষেপ নিবেন। কিন্তু মিটিং শেষে ঘটনা ঘটলো উল্টো। আমার কথা না শুনে আবারও আমাকে তাদের লোকজন দিয়ে পেটাতে পেটাতে মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নিয়ে আটকে রাখা হয়। পরে পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে।

মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম বাদশাহ বলেন, উক্ত ঘটনায় উভয় পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শেখ হাবিবা অভিযোগে উল্লেখ করেন, আমি এমপি আয়েন উদ্দিনের বিভিন্ন অনিয়ম গণমাধ্যমে প্রকাশ করি। এর জের ধরে গত ২৩ নভেম্বর দুপুরে রাজনৈতিক কারণে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আসামিরা আমাকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে মোহনপুর উপজেলা চত্বরে ঘিরে ধরেন। এসময় তারা গালিগালাজ করতে থাকেন এবং এমপি আয়েন উদ্দিন ও আসামি আব্দুস সালাম মারতে হুকুম দিয়ে বলেন, ‘‘মার মাগীকে মেরে জীবন শেষ করিয়া দে’’।

তাদের হুকুম পেয়ে আসামি একরামুল হক বিজয় তার হাতে থাকা লোহার হাতুড়ি দিয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করেন। আমি মাটিতে পড়ে গেলে ডলি বেগম আমার বুকে উঠে ওড়না দিয়ে গলা চেপে ধরে হত্যার চেষ্টা করেন।

এছাড়া আসামি একরামুল হক বিজয় আমার শ্লীলতাহানি করেন। ডলি বেগম আমার কাছে থাকা ২০ হাজার টাকা ও ডলি আক্তার আমার মোবাইল ফোন এবং গলার এক ভরি স্বর্ণের চেন চুরি করেন। অজ্ঞাতনামা আসামীসহ অন্যরা আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন।

এ বিষয়ে এমপি আয়েন উদ্দিন বলেন, ওই দিন উপজেলা সমন্বয় সভা ছিল। ওই সভায় আমি যোগ দেই। সভা চলাকালে ওই নারীর সঙ্গে মহিলা লীগ নেত্রী ডলি বেগমের কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ওই নারী ডলি বেগমের উপর হামলা করে এবং তাকে মেরে জখম করে। এ সময় একরামুলসহ অন্যরা তাদের ছাড়াতে যায়। এ সময় ওই নারী একরামুলকে কামড়ে জখম করে। এ নিয়ে ডলি বেগম তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছে। সেই মামলা থেকে রক্ষা পেতে আমাদের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ দিয়েছে।

Development by: webnewsdesign.com