রাজনৈতিক নেতাদের প্রতিক্রিয়া এ আইন বিতর্কিত

সোমবার, ২৪ জানুয়ারি ২০২২ | ১১:৪৩ পূর্বাহ্ণ

রাজনৈতিক নেতাদের প্রতিক্রিয়া এ আইন বিতর্কিত
apps

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আইনের খসড়া সংসদে তোলা হয়েছে গতকাল রোববার। ইসি গঠনের নতুন এই আইন প্রশ্নবিদ্ধ এবং বিতর্কিত বলছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। বলছেন, সার্চ কমিটির মাধ্যমে গত দুটি নির্বাচন কমিশন গঠনের মধ্যদিয়ে নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। এর আগে সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠিত দুটি কমিশনকে বৈধতা দেয়ার জন্য এই আইন আনা হয়েছে। এখানে নতুনত্ব কিছু নেই। প্রস্তাবিত বিলে ইতিপূর্বে গঠিত সার্চ কমিটি ও এর মাধ্যমে গঠিত নির্বাচন কমিশন ও তাদের যাবতীয় অন্যায় ও অবৈধ তৎপরতাকে যেভাবে দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে তা অস্বাভাবিক, অনৈতিক ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থি কাজ। এর আগে যে কমিশন গঠিত হয়েছে, তার অনুরূপ বিল এখানে তোলা হয়েছে। এটার মাধ্যমে বর্তমান সংকটের নিরসন হবে না।

যেভাবে অস্বাভাবিক তড়িঘড়ি করে এই বিল পাসের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তাতে এর উপর বাস্তবে রাজনৈতিক দল, অংশীজন ও জনগণের মতামত প্রকাশ ও তা বিবেচনায় নেয়ার কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। এই বিল নির্বাচন কমিশনসহ নির্বাচনকেন্দ্রিক গভীর সংকটের কোনো সমাধান করবে না, বরং সামগ্রিক সংকট আরও ঘনীভূত করবে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, সংবিধানে যেভাবে বলা আছে সেভাবে আইন করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করার জন্য আমরা আগে থেকেই বলে আসছি। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়েও আমরা এ দাবি জানিয়েছি। আর আগের মতো করেই যদি ইসি আইন করা হয় তাহলে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন নাও হতে পারে। আর গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন না হলে সেটা দিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না। কারণ ইসি গঠনের উদ্দেশ্য হচ্ছে একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন করা। সেটা হতে হবে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ইসি গঠনের বিষয়ে আমাদের নির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাব ছিল প্রেসিডেন্টের কাছে। সে প্রস্তাবগুলো এই আইনে নেই। পার্লামেন্টে আলোচনার মধ্যে আমাদের প্রস্তাবগুলো আবার তোলার চেষ্টা করবো। আর আলোচনা করে বিস্তারিত কথা বলবো।

বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হচ্ছে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে। আর আমরা আগেই বলেছি সরকার ইসি নিয়ে কি করে এটা নিয়ে আমাদের কোনো আগ্রহ নেই। আর এবার যে আইন হচ্ছে সেটাতো আগের বিষয়টাই বৈধতা দেয়া হচ্ছে। মোট কথা যে ‘লাউ সেই কদু’। এই আইন লোক দেখানো এবং মানুষকে বিভ্রান্ত করা ছাড়া আর কিছুই নয়।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সরকার ও সরকারি দলের অনুগত আর একটি নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্যই এই বিল পেশ করা হয়েছে। এই বিলে বস্তুত সরকারের পছন্দের সার্চ কমিটিকে আইনি পোশাক পরানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বিলে ইতিপূর্বে গঠিত সার্চ কমিটি ও এর মাধ্যমে গঠিত নির্বাচন কমিশন ও তাদের যাবতীয় অন্যায় ও অবৈধ তৎপরতাকে যেভাবে দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে তা অস্বাভাবিক, অনৈতিক ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থি কাজ। এই বিল নির্বাচন কমিশনসহ নির্বাচনকেন্দ্রিক গভীর সংকটের কোনো সমাধান করবে না, বরং সামগ্রিক সংকট আরও ঘনীভূত করবে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বলেন, সরকার নিজেদের সুবিধামতো আইন করছে। এটা অনেক বড় সমস্যা এবং সংকট দেখা দিবে। আর এবার যে আইন করা হয়েছে এটাতো আগে যেভাবে ইসি গঠন করা হয়েছে সেটাকেই একটি আইনি প্রক্রিয়ায় আনা হচ্ছে এবং এটাকেই সরকার বৈধতা দিচ্ছে। বিগত সময়ে যেভাবে ইসি গঠিত হয়েছে সেভাবে তো দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। আর আগের নিয়মেই যদি ইসি গঠন করা হয় সেটাতো যেই সেই হবে। আর এতে মৌলিক বা গুণগত কোনো পরিবর্তন হবে না।

Development by: webnewsdesign.com