যা বললেন ত্রিশ লাখ টাকা পারিশ্রমিক প্রসঙ্গে শরীফুল রাজ

বুধবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২২ | ২:২৬ অপরাহ্ণ

যা বললেন ত্রিশ লাখ টাকা পারিশ্রমিক প্রসঙ্গে শরীফুল রাজ
apps

চলতি বছর ঢাকাই সিনেমায় দারুণ সাড়া ফেলে ‘পরাণ’। ছবিতে শরীফুল রাজের অভিনয় প্রশংসা সবার মুখে মুখে। পরপরই মুক্তি পাওয়া ‘হাওয়া’ সিনেমাটিও বাম্পার হিট। সেই ছবিতে আরও এগিয়ে দেয় রাজকে। এরপর গত মাসে মুক্তি পাওয়া ‘দামাল’ ছবিতেও আলোচনায় আছেন তিনি। বলতে গেলে, চলতি বছর পরপর তিন ছবির মুক্তির মধ্য দিয়ে ঢালিউডে নতুন চমক, নতুন আলোচনা এই রাজকে ঘিরে।
রাজকে ঘিরে যখন নতুন করে ভাবছিলেন পরিচালক, প্রযোজকেরা, ঠিক তখনই তাঁকে নিয়ে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। ছড়িয়ে পড়ে, রাজ প্রতি ছবিতেই ৩০ লাখ টাকা হাঁকছেন। খবরটি গণমাধ্যম থেকে শুরু করে ফেসবুকে চলচ্চিত্রের বিভিন্ন গ্রুপ ছড়িয়ে এফডিসি পাড়ায় আলোচনা–সমালোচনা হচ্ছে। চলচ্চিত্র–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অনেকেই রাজের এই পরিমাণ পারিশ্রমিক চাওয়াটা বাড়াবাড়ি বলছেন। এরই মধ্যে কাজী হায়াৎ, বদিউল আলম খোকন, সোহানুর রহমান সোহানদের মতো পরিচালকেরা এই পরিমাণ পারিশ্রমিক চাওয়া নিয়ে রাজের সমালোচনা করেছেন।

তবে রাজ পারিশ্রমিকের বিষয়টি গুজব বলে আখ্যা দিয়েছেন। সঙ্গে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন, এসব ঘটনা কারা ছড়াচ্ছেন?

বলেন, ‘আমি তো কোনো গণমাধ্যমে আমার পারিশ্রমিকের কথা বলিনি। আমার মুখ থেকে কি এই পরিশ্রমিকের কথা কেউ শুনেছেন? পারিশ্রমিকটা আমার কাছে একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমি যে প্রযোজক, পরিচালকের সঙ্গে কাজ করব, তাঁদের সঙ্গে আমার পারিশ্রমিক নিয়ে কথা হবে, কথা হয়। এটি বাইরে কারও সঙ্গে শেয়ার করার বিষয় নয়। তা ছাড়া আমি নিজ থেকে তো এ ধরনের কথা কাউকে বলিনি। অথচ বেশ কয়েক দিন ধরে এটি নিয়ে হইচই হচ্ছে। বড় ইস্যু বানিয়ে ছড়ানো হচ্ছে। এটি নিয়ে ইস্যু বানিয়ে কার এতে লাভ?

এই অভিনেতা কথা প্রসঙ্গে বলেন, আচ্ছা, একটা বড় বাজেটের ছবিতে একজন শিল্পীকে যদি প্রায় দেড় বছর ধরে কাজ করতে হয়, ওই সময়ের মধ্যে অন্য কোনো ছবিতে কাজ করতে পারবেন না বলা হলে, তাহলে ছবির বাজেট অনুযায়ী ওই শিল্পী যদি এই পারিশ্রমিক চেয়েই থাকেন, ওই শিল্পীর অপরাধ কী? তাঁর মতে, শিল্পীদের শুধুই শুটিংই কাজ নয়, এর বাইরে অনেক কিছুই মেইনটেন করতে হয়। শিল্পীদের জীবনের বাস্তবতায় অনেক খরচের ব্যাপার আছে। সুতরাং ভালো সিনেমা, অভিনয়ের বাইরেও পারিশ্রমিকের বিষয়টিও বড় ব্যাপার তাঁদের কাছে।

রাজ আরও বলেন, ‘আমাদের এখানে এখন বলা হচ্ছে, সিনেমায় দর্শক ফিরেছেন, ভালো সিনেমা তৈরি হচ্ছে। প্রযোজক লাভের মুখ দেখছেন। তাহলে শিল্পীরও তো পারিশ্রমিক বাড়া উচিত। ঠিক কি না? ২০১৬ সালে আমি সিনেমা শুরু করেছি। ছয় বছর পরে এসে কি সেই আগের পারিশ্রমিকেই কাজ করব? আগের সেই পরিবেশ পরিস্থিতি তো নেই এখন। জীবনযাত্রার মান বেড়েছে। তাহলে কীভাবে একজন শিল্পী তাঁর নিজের জীবনযাপন ও পরিবারের ব্যয় বহন করবেন।

৩০ লাখ টাকা পারিশ্রমিক ধরে একজন শিল্পী হিসেবে তাঁকে নানা জায়গায়, নানা মহলে ছোট করা হচ্ছে, হাস্যরসের পাত্র বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করেন রাজ। বলেন, ‘যদি আজ পারিশ্রমিক বেশি হওয়ার খবরটি বলিউড, টালিউডে ঘটত, তাহলে সেখানকার শিল্পীদের অ্যাপ্রিশিয়েট করা হতো। আর আমাদের এখানে উল্টোটা। শিল্পীদের ছোট করা হয়। দুঃখজনক এটি।

একটা উদাহরণ টেনে এই নায়ক আরও বলেন, ‘ধরেন, একটি অফিসে একজন কর্মচারী প্রথম বছর ৫০ হাজার টাকা বেতনে যোগ দিলেন। পাঁচ বছর পরে যদি তা বেড়ে দুই লাখ হয়, তখন কী হয়? ওই মানুষটিকে সবাই সমাদর করেন। আরও উৎসাহ দেন। আর অভিনয়শিল্পীদের বেলায় আমাদের এখানে পারিশ্রমিক বাড়ালে তাঁদের জন্য তালি নয়, গালি। তাঁকে নিয়ে নানা ধরনের সমালোচনা তৈরি হয়, ইস্যু বানানো হয় ।

এদিকে শরীফুল রাজের ‘কাজল রেখা’ ছবির শুটিং শেষ হয়েছে। ‘দেওয়ালের দেশ’ নামে আরেকটি ছবির শুটিং শেষের পথে। অনেকগুলো চিত্রনাট্য হাতে আছে। চলতি মাসের শেষের দিকে নতুন ছবির কাজ শুরু হতে পারে।

Development by: webnewsdesign.com