মোটরসাইকেলে সড়ক দুর্ঘটনা কে বেশি?

মঙ্গলবার, ০৫ জুলাই ২০২২ | ১১:২৩ পূর্বাহ্ণ

মোটরসাইকেলে সড়ক দুর্ঘটনা কে বেশি?
apps

গেল জুন মাসে সারা দেশে ৪৬৭ সড়ক দুর্ঘটনায় ৫২৪ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৮২১ জন। নিহতের মধ্যে ৬৮ নারী, ৭৩ শিশু ও ৭৮ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। সবচেয়ে বেশি মারা গেছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়।১৯৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২০৪ জন নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ৩৮.৯৩ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪২.১৮ শতাংশ।

দুর্ঘটনায় ১০৭ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২০.৪১ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৮৬ জন, অর্থাৎ ১৬.৪১ শতাংশ। এই সময়ে আটটি নৌ দুর্ঘটনায় ৯ জন নিহত, ১৬ জন আহত হয়েছে এবং তিনজন নিখোঁজ রয়েছে। ১৮টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত এবং চারজন আহত হয়েছে।গতকাল সোমবার জুন মাসের সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া যায়। সংস্থাটি ৯টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে প্রচারিত খবরের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেলচালক ও আরোহী ২০৪ জন, বাস যাত্রী ২৪ জন, ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি-ডাম্পার আরোহী ৩৯ জন, মাইক্রোবাস-প্রাইভেট কার-জিপের যাত্রী ১৪ জন, থ্রিহুইলার যাত্রী (তিন চাকার যান) ১০৬ জন, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী ১৩ জন এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-প্যাডেল ভ্যান আরোহী ১৭ জন নিহত হয়েছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৫৯টি জাতীয় মহাসড়কে, ১৭৪টি আঞ্চলিক সড়কে, ৭২টি গ্রামীণ সড়কে এবং ৫৬টি শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ছয়টি সংঘটিত হয়েছে। এসব দুর্ঘটনার মধ্যে ১০৩টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৯৮টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১০৯টি পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ৩৮টি যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ১৯টি অন্যান্য কারণে ঘটেছে।

দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ৭৯৩টি। এর মধ্যে ট্রাক ১৩০, বাস ৭৮, কাভার্ড ভ্যান ২৪, পিকআপ ৫৪, ট্রলি ১১, লরি পাঁচ, ট্রাক্টর ১৩, মোটরসাইকেল ২১২, থ্রিহুইলার ১৪৯, মাইক্রোবাস আট ও ব্যক্তিগত গাড়ি রয়েছে ১৩টি। বেশি দুর্ঘটনা হয়েছে সকালে ৩৩.৮৩ শতাংশ।ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১১৭টি দুর্ঘটনায় ১৩৯ জন নিহত হয়েছে। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ১৩টি দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত হয়েছে। একক জেলা হিসেবে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে— ২৯টি দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৪১। রাঙামাটি, মাগুরা, লালমনিরহাট ও সুনামগঞ্জ—এই চার জেলায় ৯টি সাধারণ মাত্রার দুর্ঘটনা ঘটেছে, কোনো প্রাণহানি ঘটেনি।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; বেপরোয়া গতি; চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; তরুণ ও যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাসহ ১০ কারণে এসব দুর্ঘটনা ঘটেছে। সড়কে দুর্ঘটনা কমাতে সংস্থাটি ১০টি সুপারিশ দিয়েছে। বলা হচ্ছে, দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে; চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে; বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা পার্শ্ব রাস্তা (সার্ভিস রোড) তৈরি করতে হবে এবং পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে।

Development by: webnewsdesign.com