মস্তিষ্কের টিউমারে মৃত্যুঝুঁকি বেশি থাকে। কারণ মস্তিষ্কে সব ভাইটাল ও কার্ডিয়াক সেন্টার আছে। এজন্য ব্রেইন টিউমার অপারেশন না করলে বড় হয় বা কোনিং হয়ে যায়। রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. সৌমিত্র সরকার জানিয়েছেন বিস্তারিত তথ্য।
তিনি জানান, ওখানে টেন্টুরিয়াল হার্নিয়েশন হয়ে যায়, যেটি সেরেব্রাল হার্নিয়েশন হয়ে পরে ব্রেইন স্টেম কমপ্রেশন হয়ে রোগী মারা পর্যন্ত যেতে পারে।
তবে মেরুদণ্ডের টিউমারে মৃত্যুঝুঁকি সবচেয়ে বেশি নির্ভর করে তার ভাইটাল সেন্টারগুলো কোথায়, তার ওপর। মেরুদণ্ডের টিউমারের ক্ষেত্রে মৃত্যুঝুঁকি সে রকম না থাকলেও রোগীর মরবিডিটি হয় বা খুব কষ্টকর অবস্থায় থাকেন। সার্জারি না করালে রোগীর দুই পা প্যারালাইজ হয়ে যায়।
চলাফেরা করতে না পারায় পেছনে ঘা হয়ে যায়, শয্যাশায়ী হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে হয়ত শরীরের অন্যান্য জায়গায় সেপটিসেমিয়া বা রেনাল কমপ্লিকেশনের জন্য মৃত্যু হতে পারে। মেরুদণ্ডের টিউমারে আসলে মৃত্যুঝুঁকি সে রকম নেই, যেমনটি ব্রেইন টিউমারে হয়। ব্রেইন টিউমারে সাডেন ডেথ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে মেরুদণ্ডের টিউমারে কষ্টটা বেশি হয়।
এজন্য আমাদের মেরুদণ্ডের যত্নে মনোযোগী হতে হবে। ধাপ কথা হলো, মেরুদণ্ড সোজা রাখতে হবে, বডি পোশ্চার ঠিক রাখতে হবে। মেরুদণ্ডে দুটি কার্ভেচার রয়েছে— সারভাইক্যাল ও লাম্বো-স্যাক্রাল কার্ভেচার। মেরুদণ্ডের পূর্ণ ধরন ইংরেজি বর্ণমালা ‘সি’ এর মতো, ঠিক শিশু যখন মায়ের গর্ভে থাকে। যখন শিশু মাথাটা তুলতে পারে না তখন সারভাইক্যাল লর্ডোসিস ডেভেলপ করে। আর যখন শিশু মাথা তুলতে পারে তখন লাম্বার লর্ডোসিস ডেভেলপ করে। আর স্যাক্রাল কার্ভেচার টাইফুস্টিক থাকে এবং থোরাসিকটাও তাই।
সুতরাং এই কার্ভেচার অনুযায়ী মেরুদণ্ড সোজা রাখতে হবে। শোয়া-বসা বা হাঁটাচলা বডি পোশ্চার মেনে না করলে এটা সাময়িক একটা আরাম দিলেও পরে স্পাইনে অনেক কষ্ট হবে। যেমন, অনেকে টিভি দেখার সময় আয়েশ করে বাঁকা হয়ে আধশোয়া অবস্থায় চলে যান অথবা অনেকে ঘুমানোর সময় দুই-তিনটা বালিশ নিয়ে মাথা উচু করে রাখেন, তাদের পরবর্তীতে ঘাড়ের স্পাইনে সমস্যা হয়।
আবার অনেকে ভ্রমণের সময় ঘুমিয়ে পড়েন, তখন দেখা যায় ভ্রমণের সাথে সাথে মাথাটা পেণ্ডুলামের মতো এদিক-সেদিক দোলে। যারা বেশি ভ্রমণ করেন এবং ঘুমিয়ে পড়েন, তাদের এ অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। যারা ড্রাইভিং করেন তাদের সিটবেল্ট পরে এবং পেছনে ব্যাকরেস্ট দিয়ে ড্রাইভ করতে হবে।
ভ্রমণের সময় অনেকে সারভাইক্যাল পিলো ব্যবহার করেন, এটি খুবই কার্যকরি। তাহলে মেরুদণ্ডের যত্ন নিতে হলে আমাদের পোশ্চার ঠিক রাখতে হবে এবং হালকা এক্সারসাইজ যেমন, হাঁটাচলা, জগিং খুব কাজে দেয়। কারণ এতে কোর মাসলগুলা স্ট্রেংথ পায়।
আবার যারা বসে বসে কাজ করেন তাদেরও রেগুলার এক্সারসাইজ করা খুব জরুরি। সেই সাথে ব্যাক মাসল এক্সারসাইজ, সারভাইক্যাল এক্সারসাইজগুলো ব্যথা না হলে নিয়মিত করা গেলে দেহের কোর মাসলগুলোর স্ট্রেংথ বাড়বে। মেরুদণ্ড ভালো থাকবে।
সূত্র: ডক্টর টিভি
Development by: webnewsdesign.com