খাবার দেখলে লোভ সামলাতে পারেন না অনেকেই। তাতে কোনো দোষ নেই। তবে মিষ্টি দেখলেই না খেয়ে পারেন না এমন প্রবণতাকে বিশেষজ্ঞরা স্বাভাবিকভাবে দেখছেন না। তাদের মতে, শরীরে বিশেষ কিছু পরিবর্তনে এমন প্রবণতা মানুষের মধ্যে তীব্র হয়ে ওঠে।মিষ্টি খাওয়ার এই প্রবণতা শরীরে নানা অসংগতির পাশাপাশি আভাস দেয় নানা রোগেরও। আসুন জেনে নিই কোন কোন ক্ষেত্রে আমাদের এ ধরনের প্রবণতা দেখা দিতে পারে।
১. শরীরে কার্বহাইড্রেটের মাত্রা বেশি হলে: অনেক সময় খিদে না থাকলেও মানুষের মধ্যে খাই খাই একটা ভাব থাকে। এ সময়টাতে একটা মিষ্টি খেতে পারলে যেন পোয়া বারো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রবণতা আমাদের মধ্যে তখনই দেখা যায়, যখন খাবারের মাধ্যমে বেশি মাত্রায় কার্বহাইড্রেট আমাদের শরীরে প্রবেশ করার সুযোগ পায়।কারণ শরীরে কার্বহাইড্রেটের মাত্রা বেশি হলে ইনসুলিনের ক্ষরণ বাড়ে। আর এ কারণেই এই সময় মিষ্টিজাতীয় বা কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছা হয়।
২. শরীরে খনিজের ঘাটতি: খাদ্যের ৬টি উপাদানের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো খনিজ। পুষ্টিবিদদের মতে, শরীরে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্রোমিয়াম ইত্যাদি খনিজের অভাব ঘটলে মানুষের মিষ্টি খাওয়ার প্রতি ঝোঁক বাড়তে শুরু করে।
৩. ডোপামিনের পরিমাণ কমে গেলে: ডোপামিনকে স্নায়ুর বার্তা পরিবহন করার এক বিশেষ তরল হিসেবে গণ্য করা হয়। শরীরে যখন ডোপামিনের মাত্রা কমে যায় তখন আমরা বিমর্ষ হয়ে যাই। এই বিমর্ষভাব কাটাতেও আমরা মনের অজান্তেই মিষ্টি খাওয়ার ওপর আগ্রহ বাড়িয়ে দিই।
৪. মানসিক রোগ: মানসিক উদ্বেগ ও চাপের কারণে শরীরে কর্টিসল নামক হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এই হরমোন ইনসুলিনের ভারসাম্যকে বিঘ্নিত করে। যার কারণে আমাদের বেশি করে চিনিজাতীয় খাবার খেতে ইচ্ছে হয়।
৫. ঘুমের অভাব হলে: পর্যাপ্ত ঘুম শরীরে বিভিন্ন হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। লেপটিন নামক এক বিশেষ হরমোন শরীরে ঠিক কোন খাবার কতটা প্রয়োজন তার ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলে এই হরমোনের উৎপাদন মাত্রা কমে যায়। তাই এসময় মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতাও লক্ষ করা যায়।তাই আপনার মধ্যে এই সমস্যা বা প্রবণতা দেখা দিলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করার অভ্যাস, খাবারে দীর্ঘ বিরতি না নেয়া, ডায়েটে আমিষ খাওয়ার পরিমাণ বাড়ানোর চেষ্টা করুন। কারণ এর মাধ্যমেই মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছাকে দমন করা যায় বলে মনে করছেন গবেষকরা
Development by: webnewsdesign.com