মাইন্ড এইডে রোগী পাঠিয়ে ১০ লাখ টাকা নেন ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন

আনিসুল হত্যা মামলা

বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২০ | ১:৩৯ অপরাহ্ণ

মাইন্ড এইডে রোগী পাঠিয়ে ১০ লাখ টাকা নেন ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন
apps

মাইন্ড এইডে রোগী পাঠিয়ে ১৬ মাসে ১০ লাখের বেশি টাকা কমিশন হাতিয়েছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের রেজিস্ট্রার ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন। সিনিয়র এএসপি আনিসুল করিম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে এ তথ্য দিয়েছেন তিনি।

জাতীয় মানসিক ইন্সটিটিউটের একজন উপ-পরিচালক ও কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের এক আবাসিক চিকিৎসকের রোগী ভাগানোতে জড়িত থাকার তথ্যসহ আরো বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন মামুন। এদিকে ৭ দিনের রিমান্ড শেষে মাইন্ড এইডের ৪ কর্মচারীকে বুধবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়া আরও ৬ কর্মচারীকে কারাগারে পাঠানো হয়।

মঙ্গলবার গ্রেপ্তারের পর ডা. আবদুল্লাহ আল মামুনকে ২ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। ওই দিন রাতে এবং বুধবার সকালে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদে ডা. মামুন জানান, জাতীয় মানসিক ইন্সটিটিউটের জরুরি বিভাগে তার লোক সেট করা আছে। সচ্ছল রোগী দেখলেই তারা রোগীর স্বজনদের বলে- এখানকার চিকিৎসা ভালো নয়, এখানে চিকিৎসা নিলে রোগী আরো অসুস্থ হবেন। এসব বলে তারা আমার সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন এই বলে যে, তিনি (ডা. মামুন) সহযোগিতা করতে পারবেন। এসব কথা বলে রোগীকে আমার কাছে পাঠানো হতো। এরপর আমি রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে মাইন্ড এইডে ফোন করতাম। বলতাম একজন রোগী পাঠাচ্ছি, খুব দ্রুত ভর্তি করে নাও। কখনও কখনও সরকারি অ্যাম্বুলেন্সেও পাঠিয়ে দিতাম।

জিজ্ঞাসাবাদে ডা. মামুন জানান, মাইন্ড এইডে পাঠালেই ৩০ পারসেন্ট কমিশন পেতেন। প্রতি রোগী থেকে তার কমিশন আসত ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। এছাড়া মাইন্ড এইডে রোগী দেখতেন তিনি। সেখান থেকেও আলাদা টাকা পেতেন। তিনি আরো জানান, ২০১৯ সালের জুলাইয়ে থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি শুধু মাইন্ড এইডে ২৫ জনের বেশি রোগী পাঠিয়েছেন।

জিজ্ঞাসাবাদে দেয়া তথ্যের বরাত দিয়ে তদন্ত সূত্র জানায়, ডা. মামুন মাইন্ড এইড হাসপাতাল ছাড়াও আদাবরের মাইন্ড ওয়েল হাসপাতালেও রোগী পাঠাতেন। টাঙ্গাইলে ঢাকা ক্লিনিক নামের একটি হাসপাতালে রোগী দেখতেন তিনি। এছাড়া টাঙ্গাইল ও আশপাশের কোনো রোগী ঢাকায় চিকিৎসা নিতে এলে তাকে কৌশলে সেখানে পাঠিয়ে দিতেন। এসব বিষয়কে দোষ হিসেবে দেখছেন না ডা. মামুন। তিনি বলেন, আমি তো একা নই। সরকারি হাসপাতালের অনেক ডাক্তারই তো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে রোগী পাঠান। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, জাতীয় মানসিক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. তারিক সুমন, কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের রেসিডেন্স সাইকিয়াট্রিস্ট ডা. মো. রাহেনুল ইসলাম, গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ যোবায়ের মিয়াসহ আরো কয়েকজন মাইন্ড এইডে রোগী পাঠাতেন। তারাও প্রতি রোগীতে মোটা অঙ্কের কমিশন পেতেন। যে কারণে মাইন্ড এইডে রোগীর সংকট থাকত না।

Development by: webnewsdesign.com