মধুমতি ব্যাংক চরফ্যাশন শাখা চলত স্থানীয় সাংসদের ভাই ও আত্মীয়দের কথায়!

অভিযোগ ব্যাবস্থাপকের

বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারি ২০২১ | ১:৪২ অপরাহ্ণ

মধুমতি ব্যাংক চরফ্যাশন শাখা চলত স্থানীয় সাংসদের ভাই ও আত্মীয়দের কথায়!
apps

ব্যাংক চলত ভোলা-৪ আসনের সাংসদ আবদুল্যাহ আল ইসলাম জ্যাকবের ভাই ও তার আত্নীয় স্বজনের কথা মতো। এমন অভিাযোগ তুলে নিজেকে নির্দোষ দাবী করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মধুমুতি ব্যাংকের চরফ্যাশন শাখার ম্যানেজার মোঃ রেজাউল কবির। সাথে ভাতিজা তরিকুল ইসলাম শরীফের দিকেও একই অভিযোগ ম্যানেজারের। ভোলা প্রেসক্লাবে লিখিত ভাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিাযোগ তুলে ধরেন ম্যানেজার রেজাউল কবির।

লিখিত অভিযোগে সাময়িক ভাবে অব্যাহতি পাওয়া ব্যাংকের ম্যানেজার মোঃ রেজাউল কবির বলেন, আমি ২০১৫ সাল থেকে মধুমতি ব্যাংক, চরফ্যাশন শাখায় সুনামের সাথে কাজ করে আসছি। এ পর্যন্ত আমার সাথে কোন গ্রাহকের অসৌজন্য মূলক কোন ঘটানা ঘটেনী। কিন্তু দুঃখের বিষয় গত ১৪.০১.২০২১ ইং মধুমতি ব্যাংকের অডিট এসে ১৩.০১.২১ ইং এর তারিখের ১২টি পে-অর্ডরের মাধ্যমে ৮কোটি ৯৫লাখ টাকার গড়মিল পায়।

এ ঘটান শুনার পর আমি অসুস্থ্য হয়ে পড়ায় আমার পরিবার গিয়ে আমাকে বাড়ি নিয়ে আসে। ডাক্তারের পরামর্শে আমার পরিবার এক দিনের ছুটির আবেদন নিয়ে গেলে তাদেরকে থানায় নিয়ে অনেক নাটকিয়তার পর ২৪ ঘন্টা পর তাদেরকে ছেড়ে দেয়। আসলে এ ব্যাংকটির আমি নামে মাত্র ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেছি। আমি কোন কিছুই ব্যাংকের নিয়ম অনুযয়ী করতে পারতাম না। সবই করা হতো স্থানীয় সাংসদ ও তার ভাই, ভাতিজা এবং তার আত্নীয় স্বজনের কথা মতো। সাংসদের ছোট ভাই মোঃ জাহিদুল ইসলাম সৌরভ তার বিকাশ ব্যবসায় প্রতিদিন ৫-৭ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যাংক থেকে নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতো আবার পরিশোধ করতো। এ দেয়া নেয়ার মধ্যে তিনি ৬ কোটি ১০ লাখ টাকা আটকে ফেলে। যা বহু বার চাওয়ার পর ০৪.০১.২১ইং মধুমতি ব্যাংকের ৪৫ লাখ টাকার একটি চেক প্রদান করে। কিন্তু একাউন্টে টাকা না থাকায় তা সমনস্বয় করা যায় নি।

এ ছাড়া সাংসদের ভাতিজা তরিকুল ইসলাম শরীফ ব্যাংকের অফিসার পদে চাকুরীর পাশাপাশি সাংসদের সকল ব্যাংক হিসেব লেনদেন পরিচালনা করতেন এবং ব্যাংকের ভোল্টে থাকা বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের টাকা তার পরিচালনাধীন মোনোয়ারা ট্রেডার্স নামের একাউন্টে রেখে তা দিয়ে তার ব্যবসা পরিচালনা করতেন সাথে ব্যাংকের ভোল্টে থাকা ২ কোটি ৮৫ লাখ টাকাও তিনি তার ব্যবসায় পরিচালনা করেন। এছাড়াও ব্যাংকের গ্রামীন এন্টার প্রাইজ, চার দেয়াল ডেকোরেটর, কায়িফ এন্টার প্রাইজ, মোঃ জাহিদুল ইসলাম সৌরভ, উপকুল ব্রিক্স, মিলন ট্রেডার্স, মা ট্রেডার্স, উপকুল কনষ্টাকশন, রুহি ফার্নিচারসহ আরো কয়েকটি একাউন্টে মধুমতি ব্যাংকের ভল্টে টাকা রেখে নিজেদের ব্যাবসা পরিচালনা করে আসছেন। এসকল একাউন্ট সার্চ করলে ব্যাংকের খোয়া যাওয়া টাকার সন্ধান মিলবে বলেও দাবী তার। অপরদিকে ব্যাংকের একাউন্ট এসবি ২৩, সিডি ৪১, পরিবার উন্নয়ন সংস্থা, এসব একাউন্টে জমা টাকার বিষয়ে অসামঞ্জস্য রয়েছে। যা ব্যাংকের অফিসার সাংসদের ভাতিজা তরিকুল ইসলাম শরীফ পরিচালনা করতো।

সাংসদের ভাই জাহিদুল ইসলাম, ভাতিজা তরিকুল ইসলাম শরীফসহ উল্লেখিত একাউন্ট গুলোর কারনে এসব টাকা গড়মিলে ব্যাংকের চাপাচাপিতে আমি এবং ব্যাংকের অফিসার জাফর ইকবালের যৌথ স্বাক্ষরে ১২টি পে-অর্ডারের মাধ্যমে ৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা মিলানো হয়েছে।

রেজাউল কবির আরো বলেন, ব্যাংটি নতুন হওয়ায় এবং ব্যাংকের মালিকদের একজন সাংসদ জ্যাকব হওয়ায় তার এবং তার ভাই, ভাতিজা ও আত্নীয় স্বজনের বাহিরে আমি কোন ভাবেই ব্যাংক পরিচালনা করতে পারি নাই। এটি ছিল তাদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠানের মতো। যাতে আমি নামে মাত্র ম্যানেজারের চেয়ারে বসা ছিলাম। এই ব্যাংকের ভোল্টে কোন ধরনের হিসাব ছাড়াই টাকা জমা রাখা, যখন তখন মাইক্রোতে করে বিতরণ করা সবই হতো ভাই ভাতিজার হাতে। তিনি অভিযুক্তদের কাছ থেকে টাকা ফেরত ও সুস্থ্য তদন্তের মাধ্যমে এর সমাধান দাবী করেন। সংবাদ সম্মেলনে পিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

Development by: webnewsdesign.com