ভোটাররা কেন কেন্দ্র মূখী নয়- প্রশ্ন আতিকের

সোমবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ২:০৬ অপরাহ্ণ

ভোটাররা কেন কেন্দ্র মূখী নয়- প্রশ্ন আতিকের
ছবি-সংগৃহীত।
apps

গত শনিবার রাতে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে সিলেটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এ প্রশ্ন রাখেন তিনি। তবে নির্বাচনের দিন সকাল পর্যন্ত আতিক আশাবাদী ছিলেন নীরব হয়ে পড়া ভোটাররা তার পক্ষে ইভিএমে ভোটের জোয়ার তুলবেন। কিন্তু আতিকের ধারণার

উল্টো চিত্র ধরা পড়লো সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে। ভোটার নেই ভোট কেন্দ্রে। বেশিরভাগ কেন্দ্রই ছিল ফাঁকা। এতে ভুল ভাঙে আতিকের। নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেয়ার পর তার পরাজয়ের কারণ হিসেবে ভোটার কেন্দ্রে না আসাকেই দায়ী করলেন।

জানালেন, ভোটাররা কেন্দ্রে আসলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতো। সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি কম হলেও ইভিএমে অনুষ্ঠিত এ ভোটে ৩৪ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে। মোট ৩ লাখ ৫২ হাজার ভোটারের মধ্যে ৩টি উপজেলায় ভোট পড়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৫৯১টি।

একটি ভোটও বাতিল হয়নি এ ভোটে। ইমিএমে ভোট হওয়ার কারণেই কারো ভোট বাতিল হয়নি বলে জানিয়েছেন নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। নির্বাচন শেষে জাতীয় পার্টির এই প্রার্থী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘এই নির্বাচন পরে আমি যেটা বুঝি যে এই দেশের জনগণই হচ্ছে মালিক।

জনগণের মালিকানা ভোট প্রয়োগেই তার প্রমাণ। কিন্তু কেন এই মানুষগুলো ভোটে আসে না- প্রশ্ন রাখেন আতিক।’ বলেন, ‘যেখানে আগে ফিফটি পার্সেন্ট, সিক্সটি পার্সেন্ট ভোট হতো এখন সেখানে টুয়েন্টি থেকে টুয়েন্টি ফাইভ পার্সেন্ট ভোট হয়। এটার কারণ হচ্ছে- মানুষ ভোটের পরিবেশ পায় না। মানুষ মনে করে যে, ভোটে গেলে আমার নিরাপত্তা নেই। আমার ভোট কী আমি দিতে পারবো? এবং মানুষের শঙ্কা থাকে এখানে গণ্ডগোল হবে।’ ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসার ব্যাপারে প্রার্থী হিসেবে নিজের ব্যর্থতা তুলে ধরে আতিক বলেন, ‘কিছু কিছু ভোটাররা কেন্দ্রে এসেছিল।

কিন্তু এসে দেখে ভোটের পরিবেশ নেই। এ কারণে তারা চলে গেছে। আমি মনে করি এটা একটা উপনির্বাচন। এর মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনও হবে না। এর মাধ্যমে কিছুই আসবে যাবে না। এই নির্বাচনে সম্পূর্ণ প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। কেন হয়নি- পার্সেন্টেজ অব ভোটার কিন্তু খুবই কম। আমি মনে করি; সিলেট-৩ আসনের নির্বাচনটি ছিল গণতন্ত্র বিকাশের জন্য একটা প্ল্যাটফরম।’

আতিক জানান, ‘অনেকাংশে এখনো আমরা ভোটারদের আস্থায় আনতে পারিনি। ২০২৩ সালের নির্বাচনের জন্য এটা অত্যন্ত প্রয়োজন। সকল দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন আমাদের এখন প্রয়োজন।’ এদিকে, জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, সিলেটে জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক ভিত্তি দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ছে।

সিলেট-৩ আসনে আগে জাতীয় পার্টির যে সাংগঠনিক ভিত ছিল সেটি এখন আর নেই। এছাড়া, আতিকুর রহমান রহমান আতিক এ আসনে প্রার্থী হতে পারবেন না জেনে হবিগঞ্জে চলে গিয়েছিলেন। এই উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে তিনি নিজ এলাকা সিলেট-৩ আসনে ফিরে আসেন। ভোটে প্রার্থী হওয়ার পর প্রকাশ্যে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে তিনি ভোটযুদ্ধে নামলেও মূলত আড়ালে থেকে তার নির্বাচন পরিচালনা করছিলেন বিএনপি ও জামায়াতের কিছুসংখ্যক স্থানীয় নীতি-নির্ধারকরা।

এ কারণে আতিক নিজেও নিজ দলের নেতাকর্মীদের রেখে মূল লড়াই চালিয়েছিলেন আড়ালে থাকা অন্য দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে। তাদের সঙ্গে যুক্ত ছিল আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের একাংশের নেতারাও। আর ভোটে তাদের উপস্থিতি জানান দিতে আতিকের পক্ষে মাঠে জোয়ার তুলেছিলেন। নির্বাচনের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে তারা নীরব হয়ে যাওয়ায় আতিক আর পেরে উঠতে পারেননি। এমনকি শত চেষ্টা করেও নীরব থাকা ভোটাররাদের কেন্দ্রে টানতে পারেননি।

Development by: webnewsdesign.com