ভুল তথ্যে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহবান সেভ দ্য রোড-এর

রবিবার, ০৯ জানুয়ারি ২০২২ | ২:০৫ অপরাহ্ণ

ভুল তথ্যে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহবান সেভ দ্য রোড-এর
apps

একই দিনে দুটি সংগঠনের বিশাল পার্থক্যসহ প্রতিবেদনের ভুল তথ্যে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহবান জানিয়েছে সেভ দ্য রোড। আকাশ-সড়ক-রেল ও নৌপথ দুর্ঘটনামুক্ত রাখার লক্ষ্যে একমাত্র স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন সেভ দ্য রোড-এর চেয়ারম্যান জেড এম কামরুল আনাম, প্রতিষ্ঠাতা মোমিন মেহেদী ও মহাসচিব শান্তা ফারজানা ৯ জানুয়ারি এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেন- বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে- একই দিনে দুটি সংগঠনের প্রতিবেদনে দুই রকম তথ্য দেয়া হয়েছে এবং সেই তথ্যের পার্থক্যও বিশাল।

একটি সংগঠন বলছে- ৪ হাজার ২ শ ৮৯ এবং অন্য আরেকটি সংগঠন বলছে- ৬ হাজার ২ শ ৮৪ জন নিহত হয়েছে সড়কপথ দুর্ঘটনায়। আমরা মনে করি- যদি গবেষণা সেল-এর মাধ্যমে এ কাজটি করা হয়; তাহলে সেভ দ্য রোড ২০২১ সালের ২৪ ডিসেম্বর যে তথ্য দিয়েছিলো, তা-ই সত্য প্রমাণিত হবে।

কেননা, সেভ দ্য রোড প্রতিদিনের তথ্য, প্রতিদিন লিপিবদ্ধ করে। আর তাই গত ১৪ বছর যাবৎ সেভ দ্য রোড, সঠিক তথ্যই গণমাধ্যমকে দিয়ে আসতে পেরেছে।

সেভ দ্য রোড-এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছিলো- ২০২১ সালের ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সড়কপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ৭ হাজার ৫১২ আর ক্ষতি হয়েছে ৩২ হাজার কোটি টাকা। চলতি সড়কপথ দুর্ঘটনায় ৫ হাজার ৩৭০ জন নিহত হন। তাতে গড়ে আহত হন প্রতিদিন ১৯৬ জন।

২০১৭ সালে নৌ দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতর সংখ্যা বস থাকলেও ২০২১ সালে এসে ৭১২ টি নৌপথ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৮৮ জন এবং আহত হয়েছেন ৪৬৬ জন। রেলপথ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৭৮ জন এবং নিহত হয়েছেন ১৩৮ জন।

সেভ দ্য রোড-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০২২ সালে এসে সড়কপথে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটছে। সর্বশেষ ৮ দিনে ২০ টি জাতীয় দৈনিক, বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সারাদেশে সেভ দ্য রোড-এর স্বেচ্ছাসেবিদের তথ্যানুযায়ী- ৪ শ ৭৭ টি সড়কপথ দুর্ঘটনায় ১১৮ জন মৃত্যুবরণ করেছে; আহত হয়েছে ২ শ ৮৮ জন।

১১ টি নৌপথ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ২৭ জন এবং ১২ টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন, আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। তবে সড়কপথে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটছে মোটর সাইকেলে; যা প্রতিহত করতে হলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্তাদেরকে হতে হবে আরো সচেতন-সক্রিয় ও নীতিবান এবং চালক-যাত্রীদেরকে অবশ্যই আইনের প্রতি সম্মান প্রদর্শনপূর্বক পথ চলতে হবে।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো উল্লেখ করেন, গত ১৪ বছর ধরে ৪ পথ দুর্ঘটনামুক্ত রাখতে গবেষণা-সচেতনতা তৈরি এবং রাজপথে গণমূখি কর্মসূচি ভিত্তিক পথচলায় আমরা বারবার যে ৭ দফা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি, সেই ৭ দফা বাস্তবায়ন হলেই ৪ পথই দুর্ঘটনামুক্ত হবে বলে আমরা বিশ^াস করি।

সেই ৭ দফা হলো- ১. বঙ্গবন্ধু ফুটবল লীগের খেলা শেষে বাড়ি ফেরার পথে সড়কপথ দুর্ঘটনায় নিহত অর্ধশত শিশু-কিশোর-এর স্মরণে ১১ জুলাইকে ‘দুর্ঘটনামুক্ত পথ দিবস’ ঘোষণার মধ্য দিয়ে সচেতনতা তৈরিতে রাষ্ট্রিয় ভূমিকা পালন। ২. ফুটপাত দখলমুক্ত করে যাত্রীদের চলাচলের সুবিধা দিতে হবে। ৩. সড়কপথ পথে ধর্ষণ-হয়রানি রোধে ফিটনেস বিহীন বাহন নিষিদ্ধ এবং কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ ও জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যতিত চালক-সহযোগি নিয়োগ বন্ধে সংশ্লিষ্ট সকলকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। ৪. স্থল-নৌ-রেল ও আকাশ পথ দুর্ঘটনায় নিহতদের কমপক্ষে ১০ লাখ ও আহতদের ৩ লাখ টাকা ক্ষতি পূরণ সরকারীভাবে দিতে হবে। ৫. ‘ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স রুল’ বাস্তবায়নের পাশাপাশি সত্যিকারের সম্মৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে ‘ট্রান্সপোর্ট পুলিশ ব্যাটালিয়ন’ বাস্তবায়ন করতে হবে। ৬. পথ দুর্ঘটনার তদন্ত ও সাজা ত্বরান্বিত করণের মধ্য দিয়ে সতর্কতা তৈরি করতে হবে এবং ট্রান্সপোর্ট পুলিশ ব্যাটালিয়ন গঠনের পূর্ব পর্যন্ত হাইওয়ে পুলিশ, নৌ পুলিশ সহ সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতা-সহমর্মিতা-সচেতনতার পাশাপাশি সকল পথের চালক-শ্রমিক ও যাত্রীদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। ৭. ইউলুপ বৃদ্ধি, পথ-সেতু সহ সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়ে দূর্নীতি প্রতিরোধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যাতে ভাঙা পথ, ভাঙা সেতু আর ভাঙা কালভার্টের কারণে নতুন করে কাউকে প্রাণ দিতে না হয়।
নিবেদনে

Development by: webnewsdesign.com