বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজারের সঙ্গে বৈঠকে সংস্থাটি থেকে আরও ঋণ সহায়তা চেয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। দেশে ডলার সংকটের মধ্যে রোববার সচিবালয়ে বিশ্বব্যাংক কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকে সংস্থাটি থেকে এই বাড়তি ঋণের প্রত্যাশা জানান অর্থমন্ত্রী।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বৈঠকে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশে চলমান ও ভবিষ্যতে শুরু হবে- এমন সব প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বাজেট সহায়তা হিসেবে আরও কিছু স্বল্প সুদের ঋণ চেয়েছেন বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি দলের কাছে।
বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার এবং বাংলাদেশ ও ভুটানের নবনিযুক্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক তিন দিনের সফরে ঢাকায় এসে আজ সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সভায় বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন সময়োচিত পদক্ষেপেরও প্রশংসা করেন।
অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, আমরা ২০১৯ থেকে এপ্রিল ২০২২ সময়ে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজেট সাপোর্ট পেয়েছি। চলতি অর্থবছরে আরও ৫০০ মিলিয়ন বাজেট সাপোর্ট পাওয়া যাবে মর্মে আশা করছি। গ্রিন, রেজিলেন্স, ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট (জিআরআইডি) ডিপিসির ২৫০ মিলিয়ন করে আগামী ২ অর্থবছরে ৫০০ মিলিয়ন ডলার পাওয়া যাবে বলে আশা করছি। ২০২৩-২৫ মেয়াদে পাইপলাইনে রয়েছে ৬.১৫ বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্রস্তাব।
অর্থমন্ত্রী বিশ্বব্যাংককে বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী অভিহিত করে বলেন, আমাদের উন্নয়ন কার্যক্রমের জন্য বিশ্বব্যাংক থেকে ১৯৭২ সাল থেকে আমরা এযাবৎ ৩৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ ও অনুদান সহায়তা পেয়েছি, যার মধ্যে ২৬.৬ বিলিয়ন ডলার অর্থছাড় করা হয়েছে। আমরা এ পর্যন্ত সুদ ও আসল মিলে ৬.৩৬ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছি। বিশ্বব্যাংক ২০২৩-২৭ অর্থবছরের জন্য কান্ট্রি পার্টনারশিপ ফ্রেমওয়ার্ক (সিপিএফ) প্রস্তুত করছে।
মুস্তফা কামাল ভাইস প্রেসিডেন্টকে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের একটি উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ও ডেল্টা প্ল্যানসহ অন্যান্য সরকারি মহাপরিকল্পনা, সেক্টরাল প্ল্যান এবং নীতিগুলোর সঙ্গে সিপিএফ যুক্ত করার জন্য অনুরোধ করেন।
পরিবেশ পুনরুদ্ধার, ঢাকা শহরের চারপাশের নদীগুলোর নাব্যতা নিশ্চিত এবং ঢাকার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য ‘বিউটিফিকেশন অব ঢাকা’ নামে একটি কারিগরি সহায়তা প্রকল্প নিয়ে কাজ করার জন্য অর্থমন্ত্রী বিশ্বব্যাংককে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি তিনি বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা করেন।
আইডিএ দেশগুলোর অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করতে আইডিএ-২০ খুব সহায়ক হবে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী জুলাই ২০২২ থেকে জুন ২০২৫ এর জন্য নির্ধারিত ৯৩ বিলিয়ন ডলারের আইডিএ-২০-কে স্বাগত জানান। তিনি কোভিড এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে উদ্ভূত পরিস্থিতি হতে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য বাংলাদেশের জন্য সহজ শর্তে আইডিএ তহবিল থেকে বর্ধিত সহায়তার অনুরোধ করেন।
এ সময় অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান, বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক এবং রিজিয়নাল ডিরেক্টর গুয়াংজে চেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Development by: webnewsdesign.com