বিলুপ্তির পথে কুয়াকাটা সৈকত : নির্বিচারে উত্তোলন হচ্ছে বালু

সোমবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২০ | ১২:৪৯ অপরাহ্ণ

বিলুপ্তির পথে কুয়াকাটা সৈকত : নির্বিচারে উত্তোলন হচ্ছে বালু
apps

নির্বিচারে উত্তোলন করা হচ্ছে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে বালু । উপকূলীয় বেরিবাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না সিআইসিও কোম্পানি নিয়ম অমান্য করেই এই বালু তুলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোম্পানিটির দাবি, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) প্রকৌশলীর অনুমতি নিয়েই সৈকত থেকে বালু তোলা হচ্ছে। তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির ওই বক্তব্যকে মিথ্যা বলে জানিয়েছেন পাউবোর সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী।

স্থানীয়রা জানান, প্রকল্পের সুবিধাভোগী স্থানীয় মোশারফ মোল্লার সহযোগিতায় গত এক সপ্তাহ ধরে চলছে এই বালু উত্তোলন। মোশারফ কুয়াকাটা পৌর মেয়র আব্দুল বারেক মোল্লা ও লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনসার উদ্দিন মোল্লার ভাই। বাঁধ মেরামতের নামে এভাবে বালু তোলার ফলে ক্ষতির মুখে পড়েছে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের বেলাভূমি কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত।

উপকূলীয় বাধঁ উন্নয়ন প্রকল্প, ফেজ-১ (সিইআইপি-১) এর আওতায় কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত লাগোয়া ঝুঁকিপূর্ণ ৪৮নং পোল্ডারের সংস্কার কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে এ বাঁধ নির্মাণের কাজ করছে চায়নার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘সিআইসিও কোম্পানি’।

অভিযোগে উঠেছে, শুরু থেকেই স্থানীয় প্রভাবশালী সুবিধাভোগী মোশারফ মোল্লার সহযোগিতায় কোম্পানির দায়িত্বরত প্রজেক্ট ইনচার্জ জ্যাং কাজের ক্ষেত্রে কোনো নিয়মই মানছেন না। শুকনো মাটির পরিবর্তে বালু, জিও টেক্সটাইল ব্যাগের পরিবর্তে প্লাস্টিকের বস্তা, নদীর পাড় কেটে বাঁধের মাটি সংগ্রহসহ নানা অনিয়ম করছেন। প্রকল্পের কাজের মান নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন।

স্থানীয় বাসিন্দা মুজিবুল হক, সাউথ বিচ হোটেলের কেয়ারটেকার আনোয়ারসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, স্থানীয়রা নিজেদের প্রয়োজনে সৈকত থেকে এক ভ্যান বালু নিয়ে ব্যবহার করতে পারে না। অথচ গত কয়েকদিন ধরে রাত-দিন স্কুবিটার (ভেকু) দিয়ে বালু কেটে ২০-২৫টি ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। দশ চাকার এসব ট্রাকের প্রতিটি ৬০০ থেকে ৭০০ ফুট বালু ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন। ভারী যানের শব্দে রাতে পর্যটকসহ স্থানীয়রা ঘুমাতেও পারছেন না।

এ বিষয়ে জানাতে মোশারফ মোল্লার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

চায়না সিআইসিও কোম্পানির স্থানীয় প্রজেক্ট ইনচার্জ মিস্টার জ্যাং’র মুখপাত্র দোভাষী ইমন ইসলাম জানান, বেড়িবাঁধের স্লোপের নিচের বালু নেওয়ার অনুমতি রয়েছে তাদের। পাউবোর প্রজেক্ট প্রকৌশলীর অনুমতি নিয়েই বালু নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
উপকূলীয় বাধঁ উন্নয়ন প্রকল্প, ফেজ-১ (সিইআইপি-১) ৪৮ এবং ৪৭/২ পোল্ডারের দায়িত্বরত প্রকল্প প্রকৌশলী মজিবর রহমান (সিএসই) বলেন, ‘কাউকেই বেড়িবাঁধের কোলঘেঁষে থাকা সমুদ্রের বালু নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। চায়না প্রজেক্টের ইনর্চাজ মিথ্যা বলেছেন।’ এখনই সৈকত থেকে বালু উত্তোলনে নিষেধ করে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

Development by: webnewsdesign.com