বিজয়ের চাওয়া পাওয়া

বুধবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২০ | ৩:৫৬ অপরাহ্ণ

বিজয়ের চাওয়া পাওয়া
apps

আজ ১৬ই ডিসেম্বর বাঙালির বিজয়ের দিন, উল্লাসের দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি বর্বর বাহিনী বীর বাঙালির কাছে পরাজয় বরণ করে এবং দেশের মানুষ একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে বিশ্ব মানচিত্রে নামকরণ করায়।

৩০লক্ষ শহীদের বিনিময়ে অর্জিত এদেশ,মা বোনদের হারানো ইজ্জতের বিনিময়ে এ দেশ।
পাকিস্তানের বর্বর বাহিনী দীর্ঘদিন যাবত শোষণ করেছিল পূর্ব পাকিস্তান তথা ঠিক, পূর্ব পাকিস্তান ছিলো পশ্চিম পাকিস্তান উন্নয়ের মূল যন্ত্র অর্থাৎ পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের ঘামঝড়া অর্থ দিয়েই পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতো কিন্তু এ মানুষ গুলোর সাথেই অমানবিক আচরণ করতো, ঠকানো হত তাদের কে, শুধু তাই নয় এ দেশের মানুষের বাক-স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া ই ছিলো ওদের মুল উদ্দেশ্য কারন বাক-স্বাধীনতা হরন করলেই সব করানো সম্ভব হতো কিন্তু তা আর হয়ে উঠলো না।

বাঙালি নিজের অধিকার আদায় করতে শুরু করলো এবং সব শোষন, অত্যাচার নির্যাতনের অবসান ঘটিয়ে দীর্ঘ ৯মাস পরে পেলো একটি নতুন দেশ, দেখতে পেলো একটি মুক্তির দিন
আজ বাঙালির সেই বহুল আকাঙ্ক্ষিত মুক্তির দিন।

১৬ই ডিসেম্বর, সেই বিজয় দিবস।
তবে কতটুকু আছে সেই দিবসের আনন্দ আর কতটুকু প্রতিফলিত হয়েছে প্রশ্নটা সেখানেই।
৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তানের যে মীরজফরদের জন্য দেশের মানুষ বেশি অত্যাচারিত হয়েছিলো,যারা দেশের মাটিতে থেকে দেশের মানুষের সাথে বেঈমানি করেছে তাদেরকে আমরা রাজাকার বলি ,,
উচ্ছেদ হয়েছে কি সেই রাজাকারগুলোর ?
হয়নি।
তারা রাজ করছে আজ ভিন্নরূপে,
তারা এদেশের টাকা দিয়ে অন্য দেশের সাথে বন্ধুত্ব রাখছে, এদেশে থেকে এদেশের মানুষের পেটে লাথি মেরে এদেশের টাকা দিয়ে বিদেশে অট্রালিকা গড়ছে…
প্রতিনিয়ত দেশের ক্ষতি করে যাচ্ছে এবং বেঈমানি করছে দেশের মানুষের সাথে।থাকে বাংলাদেশে আর সম্পর্ক গড়ে ভিনদেশীদের সাথে যাতে অপকর্ম করে পালিয়ে যেতে পারে যেমনটা করেছিলো পাকিস্তান আমলের রাজাকাররা।

তবে পার্থক্য এখানেই ঐ সময়ে রাজাকার শুধু দেশের মাটিতে ভিনদেশীদের সাহায্য করতো আর এখন সরাসরি সাহায্য দিয়ে আসে,ঐ সময়ে শুধু টাকা পাচার হতো আর এখন ব্যাংকসহ পাচার হয়। এরা বংশগত রাজাকার নয় নতুন জন্মানো রাজাকার।

গনতন্ত্র তথা বাক-স্বাধীনতা ছিলো স্বাধীনতার মূল উদ্দেশ্য যার জন্য ই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল
পেয়েছি কি বাঙালি সেই বাক-স্বাধীনতা??
ফিরে পেয়েছি কি সেই আকাঙ্ক্ষিত গনতন্ত্র?
ঐতো সেদিন শুনেছিলাম বাঙলার আমলারা
গার্মেন্টস শ্রমিকদের উপর হামলা করেছে কারন তাদের অপরাধ তারা ন্যয্য দাবি আদায়ে আন্দোলন করেছিলো?

এটাই কি তাহলে সেই গনতন্ত্র যে গনতন্ত্রে মানুষ কে মানুষ বলে গন্য করা হয়না, যেখানে জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচনে জনগন ই অংশগ্রহণ করতে পারেনা। তাহলে তো মিলে পাকিস্তান আমলের গনতন্ত্রের সাথে।

শুনছিলাম পাকিস্তান আমলে পূর্ব পাকিস্তানের লোক ন্যায় বিচার চাইলে উল্টো হেনস্তার শিকার হতো,মা-বোনদের ইজ্জত হারাতে হতো এখন ও তো তাই হয়। বাবা মায়ের সামনে যেমনি প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদের ইজ্জত হারানোর বুক ফাটিনো আহাজারি শুনতে পাওয়া যায় তেমনি ছোট খুকুটির যন্ত্রনার চিৎকার ও শোনা যায়।

তাহলে পার্থক্য টা কোথায়??
সুতরাং স্বাধীনতা তো বাঙালি কখনোই পায়নি আর পেলেও তা ৭১এর ডিসেম্বরেই সীমাবদ্ধ ছিলো অথবা নামমাত্র স্বাধীনতা ছিলো।দেশ আগের পাকিস্তানেই আছে তবে তা ভিন্ন নামে অর্থাৎ পন্য ঠিক ই আছে শুধু ক্রেতা বিক্রেতার পরিবর্তন মাত্র।

অতএব নামেমাত্র স্বাধীনতা আমরা চাই না বাস্তবিক অর্থে স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে,অন্যায় রুখতে হবে, দেশে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং এদেশে আর আমরা রাজাকার জন্মাতে দেবো না, ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগ স্বার্থক করার স্বপ্ন ই হোক বিজয় দিবসের একমাত্র শপথ।

মোঃ রাকিব
১৩তম ব্যাচ
উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

Development by: webnewsdesign.com