বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী জোকা দরবার শরীফে তিনদিনব্যাপি ওরস শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) আসরের নামাজের পরে মোরেলগঞ্জ উপজেলার মধ্যজোকা গ্রামে আনুষ্ঠানিকভাবে ১০২ তম এই ওরস শরীফ শুরু হয়। তবে ভোর থেকেই বিভিন্ন জেলা থেকে শত শত মানুষকে জোকা দরবারে ভীড় জমাতে দেখা গেছে। প্রতিবছর স্থানীয় ভক্ত ছাড়াও বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক হাজার মানুষ আসেন শতবর্ষী এই দরবারে। নারী, পুরুষ, শিশু, কিশোর, বৃদ্ধ সব শ্রেনির লোকের সমাগম ঘটে এখানে। তিন দিনের এই ওরসে প্রতি দিন তিন বেলা্তেই কয়েক হাজার মানুষকে বিনামূল্যে খাওয়ানো হয়। পীরের বাড়ির উঠোনে পাটিতে বসে মাটির পাত্রে খান ভক্ত ও দর্শনার্থীরা। ওরস উপলক্ষে দরবারের সামনের মাঠে তিনদিনের মেলাও বসেছে। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাযায়, মোরেলগঞ্জ উপজেলার মধ্যজোকা গ্রামের মরহুম শাহসুফী হযরত রজ্জব চাঁন (রহ) একজন ধর্মীয় সাধক ছিলেন। ধর্মপালনের পাশাপাশি তার মধ্যে মানুষের সমস্যা সমাধানের মত আদ্ধাতিক শক্তি ছিল তার। এই কেরামতির কথা ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা ভীড় জমাতে থাকে। ভক্তদের পরিমান বৃদ্ধি পেলে তার নিজ বাড়িতে তিন দিনব্যাপি ওরস শুরু হয়। বর্তমানে ১০২ তম (প্রতি বছরে একবার) ওরস চলছে এই দরবারে। শাহসুফী হযরত রজ্জব চাঁন (রহ) এর মাজার, ওরস উপলক্ষে মেলা দেখে এবং বর্তমান পীরের আথিয়েতায় খুশি বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা ভক্ত ও দর্শনার্থীরা। মাদারীপুর থেকে মোঃ বাদল মাতব্বর বলেন, দশ বছর ধরে নিয়মিত এই দরবারে আসি। এবছর পীরের বাড়ির মেহমানদের খাবারের জন্য একটি খাসি নিয়ে এসেছি। আমরা প্রায় ১০জন এক সাথে এসেছি। বরিশাল থেকে আসা রাসেল নামের এক ভক্ত বলেন, ছোট বেলা থেকে এই দরবারে আসি। এখানে আসলে আমাদের ভাল লাগে। আব্দুস সোবহান নামের আরেক ভক্ত বলেন, ছোট বেলা মায়ের সাথে এই দরবারে আসতাম। তখন বর্তমান পীরের বাবা নুরিশাহ ফকির ছিলেন। তাকে মামা ডাকতাম। তখন থেকে দেখেছি এখানে অনেক মানুষ আসে। প্রতিবছরই নতুন নতুন মানুষকে দেখা যায় এখানে। বর্তমান পীর পীরজাদা মোঃ শাহাবুদ্দিন ফকির (শাহনূরী) বলেন, দাদা মরহুম শাহসুফী হযরত রজ্জব চাঁন (রহ) এবং বাবা নুরিশাহ ফকির যৌনপুর পীর সাহেবের অনুসারী ছিলেন। আমরাও যৌনপুর পীরের তরিকায় চলি। তিনদিন ব্যাপি এই ওরসে ধর্মীয় আলোচনা, আদ্ধাতিক গানসহ নানা আয়োজন থাকে আমাদের। যেহেতু দূরদূরান্ত থেকে ভক্ত ও দর্শনার্থীরা আসে সেজন্য আমরা বিনামূল্যে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করি। যেযার মত উঠোনে, মাঠে, মাজার ও মসজিদের বারান্দায় ঘুমায়। কোন সমস্যা হয়না। এত মানুষের সমাগম হওয়ার পরেও কোন বিশঙ্খলা নেই আমাদের দরবারে। এটা শুধু আল্লাহর রহমত থাকলেই সম্ভব।
Development by: webnewsdesign.com