বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) বার্ষিক গবেষণা কার্যক্রমের অগ্রগতি বিষয়ে আয়োজিত দু’দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে সেরা ১৫ জন গবেষক ও খামার পর্যায়ের ৩জন কৃষককে পুরষ্কৃত করা হয়। অনুষ্ঠনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সর্ম্পকবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. গওহর রিজভী।
কর্মশালায় গবেষণার আন্তর্জাতিক মানদন্ড এইচ-ইনডেক্সের উপর ভিত্তি করে ১৫ জন (বিশ^বিদ্যালয়ের মোট ২৫ জন সেরা গবেষকদের মধ্য থেকে ৫ জন এবং ৬ টি অনুষদের সেরা ১০ জন) গবেষককে ‘ গ্লোবাল রিসার্চ ইমপ্যাক্ট রিকোগনাইজেশন অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়। অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম (১), ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আশরাফুজ্জামান, ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, ফিশারিজ ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান, অ্যাকোয়াকালচার বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল হক, সার্জারি ও অবস্টেট্রিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোশাররফ উদ্দীন ভূঞা, মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. কে. এম আনিসুর রহমান, বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান জাহাঙ্গীর, পশুবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল হাশেম, কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইসমত আরা বেগম, কৃষি অর্থসংস্থান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আক্তারুজ্জামান খান, কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ড. চয়ন কুমার সাহা, কম্পিউটার সায়েন্স এ্যান্ড ম্যাথমেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান, ফিশারিজ ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মাহফুজুল হক।
একই অনুষ্ঠানে, কৃষিতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য খামার পর্যায়ের ৩জন কৃষককে ‘প্রফেসর ড. আশরাফ আলী খান স্মৃতি পুরষ্কার-২০২০’ প্রদান করা হয়। পুরষ্কার পেয়েছেন ফুলবাড়িয়ার রাঙ্গামাটির ড. আবু বকর সিদ্দিক (ফলজ কৃষিতে অবদানের কারণে), ফুলপুর পৌরসভার আজহারুল ইসলাম দুলাল পোল্ট্রি ফার্মিংয়ে অবদান স্বরূপ) এবং ময়মনসিংহ সদরের মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন (মৎস্য চাষে অবদান স্বরূপ)।
শনিবার সকাল ১০টায় বিশ্বিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কর্মশালায় এবারের প্রতিপাদ্য ছিল ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কৃষি বিষয়ক গবেষণার রুপান্তর’।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. গওহর রিজভী বলেন, ক্ষুধামুক্ত সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখতেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু কৃষিতে বিপ্লব আনতে চেয়েছিলেন। সেই স্বপ্ন আজ বাস্তবে পরিণত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন পূরণে বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যলয় (বাকৃবি) অগ্রদূত হিসেবে কাজ করেছে এবং সেই কাজের ধারা অব্যাহত রেখেছে।
তিনি আরো বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার আগের বছরগুলোতে ক্ষুধামন্দা লেগেই থাকতো। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনের সময় জনসংখ্যা প্রায় ৭০ মিলিয়ন ছিলো এবং আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন ছিলাম না। আজ দেশের জনসংখ্যা ১৬০ মিলিয়নের বেশি হওয়া সত্তে¡ও আমরা খাদ্য স্বয়ংসম্পন্নতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট এবং তাদের উন্নত গবেষণার ফলে আমরা এই সফলতা পেয়েছি। বর্তমানে আমরা আর্থ-সামাজিকভাবেও সমৃদ্ধ হয়েছি।
এসময় দেশের দারিদ্রতার হার কমিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, দারিদ্রতা নিরসন এসডিজি বাস্তবায়নের একটি বড় লক্ষ্যমাত্রা। ১৯৯১ সালে দারিদ্রতার হার প্রায় ৪৪ভাগ ছিলো। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে সেই দারিদ্রতার হার কমে ২০ভাগের নিচে নেমে এসছে।
কর্মশালায় বাউরেসের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আবু হাদী নূর আলী খানের সভাপতিত্বে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জসিমউদ্দিন খান, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. ফরিদা ইয়াসমীন বারি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অস্ট্রেলিয়ার মর্দাক বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রিচার্ড বেল।
উল্লেখ্য, কর্মশালায় ৩২৪টি মৌখিক ও ২১২টি পোস্টার গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপিত হবে। সেরা ৬ জন পোস্টার পেজেন্টারকে ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হবে।
Development by: webnewsdesign.com