বাউফলের সর্বত্র এলপিজি গ্যাসের বাজারে নৈরাজ্য চলছে। সরকার নির্ধারিত মূল্য থেকে দেড় গুণেরও বেশি মূল্যে বিক্রি হচ্ছে অত্যাবশ্যকীয় এই পণ্যটি। হঠাৎ করে অধিক মূল্যে গ্যাস বিক্রি হওয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন সাধারন গ্রাহকরা।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের ওয়েব সাইটে প্রদত্ব সর্বশেষ ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বরের তথ্য অনুযায়ী সারে ১২ কেজি গ্যাসের প্রতি সিলিন্ডারের স্থানীয় বিক্রয় মূল্য ৬০০ শত টাকা নির্ধারণ করা আছে। এরপর থেকে অদ্যবধি এলপিজি গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির কোন নির্দেশনা ওয়েব সাইটে দেয়া হয়নি। অথচ বাউফলের কালিশুরী, কালাইয়া, বগা, কনকদিয়া, বিলবিলাস, নূরাইনপুর, ধুলিয়া এবং কাশিপুরসহ প্রায় ১৫টি হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে ব্যাবসায়িরা প্রতি সিলিন্ডার (১২.৫ কেজি) কোম্পানী ভেদে ৯৩০ টাকা থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। এক এক বাজারে ভিন্ন ভিন্ন মূল্যে গ্যাস বিক্রি করতে দেখা গেছে।

তবে কোথাও ৯৩০ টাকার কমে বিক্রি হচ্ছে না। কোন প্রকার ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ করে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন গ্রাহকরা। বাউফলের বাণিজ্যিক বাজার কালাইয়া বন্দরের গ্যাস বিক্রেতারা জানান, ১ জানুয়ারি থেকে ডিপো কর্তৃপক্ষ প্রতি সিলিন্ডারে ৬০ টাকা হারে বৃদ্ধি করেছেন। যে সকল গ্যাস বিক্রেতাদের কাছে সিলিন্ডার সরবরাহ করা হয়েছে তাদেরকে ডিপো কর্তৃপক্ষ মোবাইল ম্যাসেজের মাধ্যমে মূল্য বৃদ্ধির কথা জানিয়েছেন।

এদিকে বাউফলের মুদি-মনোহারি দোকান, ক্রোকরাইজের দোকান, ভূঁষা মালের দোকান এবং রড-সিমেন্টের দোকানসহ যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। অনেক দোকানী তাদের দোকানের সামনে রাস্তার পাশে রেখেই গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছেন। এতে রয়েছে ভয়াবহ দুর্ঘটনার আশংকা। তথ্যানুযায়ী বাউফলে বিস্ফোরক অধিদপ্তরের অনুমতিপ্রাপ্ত মাত্র চারজন গ্যাস সিলিন্ডিার ডিস্ট্রিবিউটর রয়েছেন।

কিন্তু বাউফলের ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স থেকে অনুমতিপত্র নিয়ে কিংবা না নিয়েই বাউফলের বিভিন্ন হাট বাজারে শত শত ছোট ছোট দোকানে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করা হচ্ছে। বাউফল ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তা মো.বাহাউদ্দিন জানান, বিভিন্ন হাট বাজারের ছোট ছোট দোকানীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা পর্যায়ে আমাদের ইন্সেপেক্টর ও টীম প্রধান তদন্ত করে গ্যাস বিক্রির অনুমতি দেন। মূলতঃ এটা অগ্নি নির্বাপণের জন্য ছোটঘাট একটি ব্যবস্থা। ডিস্ট্রিবিউটর পর্যায়ের অনুমতি পাওয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট শর্তাবলী মেনে স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধিন ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের প্রধান কার্যালয়ে আবেদন করতে হয়।

এদিকে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ঘটনায় বাউফল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আনিচুর রহমান বালির নেতৃত্বে গত ৩ জানুয়ারি কালাইয়া বন্দরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ১০ জন ব্যাবসায়ির আর্থিক দন্ড করেছেন। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন জানান, অতিরিক্ত দামে শুধু গ্যাস নয় অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী বিক্রি করলেও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের জেল-জরিমানা করা হবে।