বাউফলে ইউপি’র মনোনয়ন নিয়ে অসন্তোষ তৃণমূল আ’লীগ, ভোট বর্জনের হুমকি!

সোমবার, ১৫ মার্চ ২০২১ | ২:০০ অপরাহ্ণ

বাউফলে ইউপি’র মনোনয়ন নিয়ে অসন্তোষ তৃণমূল আ’লীগ, ভোট বর্জনের হুমকি!
apps

আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বাউফলের চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে তৃণমূল আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পাওয়ায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে মূল ভূ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন প্রমত্তা তেঁতুলিয়া নদী বেস্টিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের সাধারন মানুষের মধ্যে। ক্ষোভের বহি:প্রকাশ হিসেবে মনোনয়ন পূর্ণবিবেচনার দাবি করে ১৪ মার্চ চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের প্রায় ৩ হাজার নারী পুরুষ বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় জনতা ভবনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন।

জানা গেছে, ২০১৩ সালে আ.স.ম. ফিরোজের প্রচেষ্টায় প্রায় ১৭টি ছোট-বড় চর নিয়ে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন গঠিত হয়। ইউনিয়ন পরিষদ গঠনের পর প্রথম ভোট হয় ২০১৬ সালের ২২ মার্চ। ২০১৬ সালের নির্বাচনকালে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে মোট ভোটার ছিল ৬ হাজার ৪৩১ জন। ওই নির্বাচনে নৌকার কান্ডারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আমির হোসেন হাওলাদার মাত্র ৪৯১ ভোট পেয়েছেন। ধানের শীষ প্রার্থী ৭৭, হাতপাখার প্রার্থী পেয়েছিলেন ৩৫০ ভোট। পক্ষান্তরে স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হক আলকাচ মোল্লা ৩ হাজার ৪২৯ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।

চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি নাসির মীর জানান, আলকাচ মোল্লা ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনীতিতে আসেন এবং ১৯৮৯ সালে ছাত্রলীগে যোগ দেন। ২০০৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত বাউফল উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এরপর থেকে উপজেলা স্বেচ্ছা সেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে সক্রিয় রাজনীতি করে আসছেন। ২০১৯ সাল থেকে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। জোট সরকারের আমলে অনেক অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। একাধিক মিথ্যা মামলায় তাকে তিনবার জেল খাটানো হয়েছে। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক বশার মৃধা জানান, ২০১৬ সালের নির্বাচনের সময় তিনি আওয়ামী লীগের কাছে মনোনয়ন চাননি। কিন্তু চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের জনগণের চাপে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে চেয়ারম্যান হন। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী বাছাইকরণে গত ৮ মার্চ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় জনতা ভবনে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের তৃণমূল নেতাকর্মীদের উপস্থিতে এনামুল হক আলকাচ মোল্লাকে এক নম্বর প্রার্থী হিসেবে মনোনিত করা হয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ড বিদ্রোহী প্রার্থীর অজুহাতে তাকে বাদ দিয়ে আবারো জন সমর্থনহীন আমির হোসেন হাওলাদারকে মনোনিত করেন। ফলে আবারো নৌকার ভরাডুবি হবে। এর ফলশ্রুতিতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের দুর্নাম হবে। ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারন সম্পাদক ছিদ্দিকুর রহমান জানান, ২০১৬ সালে এনামুল হক আলকাচ মোল্লা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে তেঁতুলিয়া নদী বেস্টিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নকে বাউফলের মধ্যে উন্নয়নের রোল মডেল করেছেন। এখনো অনেক প্রকল্পের কাজ চলমান। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার আগে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ছিল নিস্ক্রীয়। ধীরে ধীরে আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নিয়ে দলকে চাঙ্গা করেছেন। এনামুল হক আলকাচ মোল্লা একজন সাংগঠনিক এবং কর্মী বান্ধব মানুষ। চন্দ্রদ্বীপের অহংকার। আমরা আসা করছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল খবর নিয়ে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়টি পূর্ণবিবেচনা করবেন। ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোস্তফা ফকির জানান, যাকে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের জন্য মনোনিত করেছেন সে কখনোই চেয়ারম্যান হওয়ার যোগ্য নয়। কোন দিনই সে কর্মীদের নিয়ে একটা আলোচনা সভাও করেননি। বয়:জেষ্ঠ্য হিসেবে সভাপতির পদ দিয়ে তাকে সম্মানিত করা হচ্ছে। কিন্তু সাধারন মানুষ যোগ্য প্রার্থীকেই ভোট দেন।

চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের বহু সংখ্যক নারী-পুরুষ ভোটারদের সাথে আলোচনা করে জানা গেছে, প্রয়োজনে তারা ভোট বর্জন করবেন। তবুও আমির হোসেন হাওলাদারকে ভোট দেবেন না। বিষয়টি উপজেলা আওয়ামী লীগের জন্যও এখন বুমেরাং হয়ে দাড়িয়েছে।

Development by: webnewsdesign.com