সারি সারি সাজোনো গাছে আসা অজস্র ফুলের কলির মধ্যে সবুজের আবৃত্ত বেধ করে রক্তিম লাল শিমুল ফুল এরই মধ্যে কিছু কিছু গাছের ডালে ফুটতে শুরু করেছে।
প্রতি বছরের মত এবারো শীতের শেষ সময়ে বসন্তের আগাম বার্তা এভাবেই জানান দিচ্ছে ভারতের মেঘালয় পাহাড় ও যাদুকাট নদীর তীরে দেশের বৃহত্তর জয়নাল আবেদিন শিমুল বাগান।
বাগানের পাশে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শিমুল বাগানে ফ্রেরুয়ারির শুরুর দিকে পুরোদমে শিমুল ফুল ফুটতে শুরু করবে। মাঘের শুরুতে কম শুরু হয়,শেষ দিক থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত শিমুল বাগানে রক্তিম আভা এই বাগানের মূল আকর্শন।
এরইমধ্যে সারিবদ্ধ ভাবে সাজানো অল্প সংখ্যক গাছে শিমুল ফুলের পাপড়ি মেলেছে। সেই সোন্দর্য উপভোগ করতে অল্প সংখক পর্যটক ও দশনার্থীরা আসছে এই শিমুল বাগানে।
এছাড়াও শীত, বর্ষায় সব সময় দল বেঁধে ছুঠে আসে শিমুল বাগানের সৌর্ন্দয উপভোগ করতে দেশ-বিদেশের দর্শনার্থীরা। ফলে হাওর, পাহাড়, নদীর পাশেই শিমুল বাগান সব মিলে মানিগাঁও গ্রামটি গড়ে উঠেছে প্রাকৃতির এক অপরুপ এক অনবদ্য কাব্যিক ভাবনায় প্রান্তর।
সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ও উত্তর বড়দল ইউপির মাঝামাঝি স্থান মানিগাওঁ গ্রাম সংলগ্ন শিমুল বাগানটির অবস্থান।
বাগানে আগত পর্যটকদের জন্য বাগান মালিকদের পক্ষ থেকে একটি খাবার হোটেল নির্মাণ করেছেন। করেছেন বসার ব্যবস্থা। এতে করে আগত পর্যটক ও দর্শনার্থীরা উপকৃত হবে বলে জানান বাগান মালিকপক্ষ।
২০০২ সালে বাদাঘাট ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত জয়নাল আবেদীন উত্তর বড়দল ইউপির মানিগাঁও গ্রামে বালু আবরিত ৯৮ বিঘা অনাবাদী জমি ক্রয় করে বাণিজ্যিকভাবেই এই শিমুল বাগান তৈরি করার পরিকল্পনা করেন। এই চিন্তা থেকেই তিনি এ বাগানে সারিবদ্ধভাবে তিন হাজারের অধিক শিমুল চারা রোপণ করেন।
শুরু থেকে এ পর্যন্ত ১৮ বছরের ব্যবধানে শিমুল চারা এখন ডালপালা পুষ্প পল্ববে এক অতুলনীয় দৃষ্টি নন্দন বাগানে পরিণত হয়েছে। শুধু তাই নয়, বাগানে বিভিন্ন ছবি, নাটক ও গানের মিউজিক ভিডিওর শুটিং হচ্ছে।
বাগানে বেড়াতে আসা স্থানীয় সোহেল আহমেদ সাজু, আবুল কাশেম, মাসুদসহ অনেকেই বলেন, এই বাগানটি দেখতে অসাধারণ। এত বড় শিমুল বাগান দেশের কোথাও আর দেখেনি। নদী, পাহাড় আর শিমুল বাগান প্রকৃতির এক অপূর্ব মিলন মেলা এখানে। যার ফলে বাগানের ভেতরটায় গেলে এক অন্য রকম ভাল লাগার জন্ম নেয়। হারিয়ে যায় অন্য এক অজানা ভুবনে।
শিমুল বাগানের প্রতিষ্ঠাতা জয়নাল আবেদিনের ছেলে বাদাঘাট ইউপি চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন বলেন, বাবা একজন বৃক্ষপ্রেমী ছিলেন তিনিই যাদুকাটা নদীর তীরে শিমুল বাগান তৈরি করেন। বাবা নেই, আছে তারই রেখে যাওয়া এক অনবদ্য সৃষ্টি। যার জন্য এখনো সবাই বাবার কথা মনে করছে।
বাবার রেখে যাওয়া এই দৃষ্টি নন্দন শিমুল বাগানটি দেখাশুনা করছি। পাশাপাশি আরো কিভাবে ভাল রাখা যায়, সৌন্দর্য ভাড়ানো যায়, সে চেষ্টা করছি। এছাড়াও এই বাগানটিকে ঘিরে পর্যটকদের স্বার্থে ও জেলার একটি আন্তর্জাতিকমানের রিসোর্স করা যায় সে চেষ্টাও পারিবারিকভাবে করছি।
যাতায়াত: ঢাকা থেকে সরাসরি বাসে সুনামগঞ্জ। সুনামগঞ্জ আব্দুল জহুর সেতু থেকে সিএনজি বা মোটরসাইকেলে জন প্রতি একশত টাকা লাউড়েরগড় বাজার। বাজার পার হয়ে যাদুকাটা নদী। আর নদী পার হলেই শিমুল বাগান।
Development by: webnewsdesign.com