বলে দিয়েছি যা বলার: কাজী সালাহউদ্দিন

সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১২:০৪ অপরাহ্ণ

বলে দিয়েছি যা বলার: কাজী সালাহউদ্দিন
apps

বাফুফের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর কাজী সালাহউদ্দিনকে যে কোনো সংবাদ সম্মেলনে সব সময় সতেজ দেখা গেছে। কঠিন পরিস্থিতিতেও সালাহউদ্দিন ভীত ছিলেন না কখনোই। এক বিন্দু নার্ভাসনেস নেই। তার মেধা আর ব্যক্তিত্ব দিয়ে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন। কিন্তু এবার তার একটু ব্যতিক্রম মনে হলো। চোখে মুখে চেহারায় মনে হচ্ছিল সালাহউদ্দিন মনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে সংবাদ সম্মেলনে এসেছেন। চাইলেও যেন সবকিছু বলতে পারছেন না। কী বলতে চান? সে কথা ততক্ষণে চাউর হয়ে গিয়েছে। তারপরও নিজের মুখে বলতে চান।

গতকাল দুপুরে বাফুফে ভবনে আচমকা সংবাদ সম্মেলন ডাকেন তিনি। বাফুফের ২১ সদস্যের কমিটির অনেকের কাছে তখনো অজানা, সালাহউদ্দিন কী জানানোর জন্য সংবাদ সম্মেলন ডাকলেন। সালাহউদ্দিন যদি কোনো সংবাদ সম্মেলনে ডাকেন সেখানে সংবাদমাধ্যমকে জায়গা দেওয়া যায় না। সবাই পৌঁছানের আগেই প্রায় তিন মিনিটের সংবাদ সম্মেলন শেষ। আগামী নির্বাচনে সালাহউদ্দিন লড়াই করবেন না। এ যেন স্ট্রাইকার নিজেই মাঠ ছেড়ে ড্রেসিং রুমে চলেন।

আগামী ২৬ অক্টোবর বাফুফের নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। সালাহউদ্দিন পঞ্চমবারের মতো লড়াই করার ঘোষণাও দিয়েছিলেন, গত মাসে। কিন্তু নির্বাচনের ৪৩ দিন আগেই ঘোষণা দিলেন তিনি নির্বাচন করবেন না। এই ছোট্ট ঘোষণাটা দিতেই গতকাল দুপুরে বাফুফে ভবনে গিয়েছিলেন সালাহউদ্দিন। এর আগে ৫ আগস্ট দেশের পরিবর্তনের পর আর বাফুফে ভবনে যাননি তিনি। নির্বাচন না করার ঘোষণার সময় প্রশ্ন উঠল। তাকে বিচলিত মনে হচ্ছিল না। তবে পুরোনো চেহারার সেই সতেজতার কোথাও যেন একটু কমতি ছিল।

ফুটবলের মানুষ, মুক্তিযুদ্ধ করে আসা মানুষ, ফুটবল-প্রেম, দেশপ্রেম নিয়ে তো প্রশ্ন নেই। হয়তো বাধ্য হলেন কোনো চাপের মুখে। কিন্তু চাপের কথা তো স্বীকার করেননি। আর থাকলেও তো সংবাদ সম্মেলনে বলাও যায় না। প্রশ্ন ছিল কোনো চাপ থেকে সালাহউদ্দিন সরে দাঁড়ালেন কি না? সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমি যা বলার বলে দিয়েছি।’ কথাটা বলেই চেয়ার ছাড়তে চাইলেন। প্রশ্ন উঠল নির্বাচন করবেন না ভালো কথা, আপনি মনোনয়নপত্র না তুললেই হয়। সালাহউদ্দিন বললেন, ‘কনফিউশন দূর করার জন্যই জানিয়ে দেওয়া।’

সালাহউদ্দিনকে হটানোর জন্য একটা পক্ষ বছরের পর বছর নানাভাবে কাজ করে আসছে। সরাসরি সালাহউদ্দিনের বিপক্ষে লড়াই করতে চান না। তাদের কথা সালাহউদ্দিনকে সরতে হবে, তারপর তারা নির্বাচন করবেন। তার আগে তারা নির্বাচন করবেন না। যারা নির্বাচন করতে চান তারা হয়তো সালাহউদ্দিনের জনপ্রিয়তার কাছে নিশ্চিত হেরে যেতে পারেন, সেই দ্বিধাদ্বন্দ্ব দূর করতেই হয়তো কনফিউশন উল্লেখ করে পথ ছেড়ে দিয়েছেন সালাহউদ্দিন?

পুনরায় প্রশ্ন উঠল সালাহউদ্দিন বলেছিলেন-নির্বাচন করার গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে তার। নির্বাচন না করে কেন সরে গেলেন? জবাবে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমি আপনাদের কোনো প্রশ্নের উত্তর দেব না। আমি আমার মতামতটা দিয়ে দিয়েছে আমি ইলেকশন করব না। ধন্যবাদ।’ সংবাদ সম্মেলন থেকে ওঠার আগে নিজের একটা সন্তুষ্টির কথা বললেন, ‘আপনাদেরকে ধন্যবাদ জানাই আমার সঙ্গে ১৬ বছর কাজ করার জন্য। এই সময়টায় ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমি আমার ভেতরে কিছু রাখছি না। আশা করি, আপনারাও মনে কিছু রাখবেন না। আমার কাছে একটা জিনিস খুব খুশি লাগছে-আমি সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়ন হয়ে যেতে পারছি।’ ২০০৮ সালে প্রথম বার নির্বাচন করেন সালাহউদ্দিন। এরপর টানা চার মেয়াদে সভাপতি নির্বাচিত হন।

Development by: webnewsdesign.com