বরগুনার ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণে অনিয়ম

মঙ্গলবার, ১৪ জুন ২০২২ | ২:৩৩ অপরাহ্ণ

বরগুনার ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণে অনিয়ম
apps

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার হাঁড়িটানা-কোড়ালিয়া খালের ওপর নির্মিত সোয়া দুই কোটি টাকার সেতু ও সংযোগ সড়ক নির্মাণে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ অনিয়ম দেখে স্থানীয়রা বাধা দিলে তাদের চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে মামলা দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার সোলাইমান। মেসার্স আমির ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ।

এ ঘটনার পর স্থানীয়রা উপজেলা প্রকৌশলীকে জানালে তারাও কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ওই সেতুর ওপরে মানববন্ধন করেন। পরে সাংবাদিকরা এলজিইডির প্রকৌশলী চন্দন কুমারের কাছে গেলে তিনি পিচ ঢালাইয়ের সুড়কি ও কাদামাটির সংমিশ্রণ তুলে ফেলে দিয়ে নতুন করে কাজ করার আশ্বাস দেন।

উপজেলা প্রকৌশলী অফিস ও সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, দুই কোটি ২১ লাখ ৬৮ হাজার টাকায় মেসার্স আমির ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাঁড়িটানা-কোড়ালিয়া খালের ওপর একটি ব্রিজ ও সংযোগ সড়কের কাজটি পায়। ওই সেতুর কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের মে মাসে এবং শেষ হওয়া কথা ছিল ২০২১ সালে ডিসেম্বর মাসে।

এর পর দীর্ঘদিন কাজ না করে ফেলে রাখেন মেসার্স আমির ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন। পরে কাজ শুরু হলেও তা ধীরগতিতে করার কারণে ওই এলাকার মানুষের দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। পরে কিছু দিন আগে সেতুর কাজ শেষ করে সংযোগ সড়কের কাজ শুরু করলে সেখানে অন্য একটি পিচ ঢালাই সড়কের কাদামাটির সংমিশ্রণের সুড়কি নিয়ে ওই সংযোগ সড়কের কাজ শুরু করে। এ নিয়ে স্থানীয়রা বিরাধিতা করে মানববন্ধন করেছেন।

স্থানীয় রেজাউল করিম মিরাজ, মোসারেফ ফকির, আবুবকর, ফজলুর রহমান, মজিবুল হক জানান, এখানে কাদামাটি মিশ্রিত দুর্বল ইটের খোয়া দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে ঠিকাদার। আমরা সবাই মিলে বলার পর গতকাল গভীর রাতে সেই মাটি মিশ্রিত খোয়ার ওপর পানি দিয়েছে। তারা বেশিরভাগ সময়ে রাতের আঁধারে কাজ করে থাকে। আমরা এর প্রতিবাদ করলেই আমাদের চাঁদাবাজি মামলা দেবে বলে হুমকি দেয়। এই ভয়ে সাধারণ মানুষ কেউ মুখ খুলতে পারে না। এখানে যেই কথা বলতে আসেন ম্যানেজার সুলাইমান তাকেই বিভিন্ন রকমের হুমকি দিয়ে থাকেন। তাই ভয়ে কেউ কথা বলে না।

এ বিষয়ে মেসার্স আমির ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনের স্বত্বাধিকারী আমির হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে ঘটনাস্থলে গেলে ওই ঠিকাদারের ম্যানেজার সোলাইমান সাংবাদিকদের আসার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে সাইফুল ইসলাম নামে এক শ্রমিকের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ম্যানেজার তাদের এ নিয়মেই কাজ করতে বলেছেন, তাই তারা করে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী চন্দ কুমার জানান, হাঁড়িটানা-কোড়ালিয়া খালের ওপর নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়কের কাজের মান নিয়ে স্থানীয়রা আমাকে মুঠোফোনে অভিযোগ জানিয়েছেন। আমার অফিস থেকে লোক পাঠিয়ে এবং ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে কাজ বন্ধ করেছি। তাদের শ্রমিকের সংকট থাকায় মঙ্গলবার মাটির সংমিশ্রণের খোয়া উঠিয়ে নতুন করে কাজ করবেন বলে জানান। তা না করলে তিনি ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানিয়েছেন।

Development by: webnewsdesign.com