মৌলভীবাজারের বড়লেখায় এই প্রথমবারের মত মাঠে চাষ হল ক্যান্সার প্রতিরোধক সবজি ব্রোকলি। এতে এলাকায় ব্যাপক সাড়া পড়েছে। প্রথমবারের মত চাষ হওয়া ইউরোপিয়ান লিভিয়া জাতের এ সবজি দেখতে মাঠে ভিড় করছেন লোকজন। উপজেলার দাসেরবাজার ইউনিয়নের পানিশাইল গ্রামের কৃষক মলিন্ড বিশ্বাস ১৫ শতক জমিতে শীতকালীন এ সবজি চাষ করেছেন। ফলনও হয়েছে আশানুরূপ।তবে প্রচুর পুষ্ঠিগুণ সমৃদ্ধ হওয়া সত্তেও এ সবজিতে এখনও অভ্যস্ত নয় এলাকার মানুষ তাই বাজারজাতকরণে কৃষকেরা কিছুটা বিপাকে পড়তে পারেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, ব্রোকোলির পুষ্টিগুণ প্রচুর। গবেষকরা ব্রকলিকে বলছেন, ‘আলটিমেট ক্যানসার ফুড’। রোজ ব্রকোলি খেলে ক্যানসার প্রতিরোধ হয়। ব্রোকোলি ক্যানসার প্রতিরোধক এটি এখন আর মিথ নয়, বাস্তবতা। ভিটামিন কে, ভিটামিন সি, ফোলিক অ্যাসিড, পটাশিয়াম ও ফাইবারে পরিপূর্ণ ব্রোকোলি। যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ব্রোকোলির মধ্যে রয়েছে সালফরফেন। যা ক্যানসার রুখতে উপকারী। লো ক্যালরির এই সবজি হার্ট ভালো রাখতেও উপকারী ।

সরেজমিনে উপজেলার দাসেরবাজার ইউনিয়নের পানিশাইল গ্রামে গেলে কৃষক মলিন্ড বিশ্বাসের ব্রোকলির খেত দেখা যায়। খেতের প্রায় সব গাছেই ফল এসেছে। ব্রকলি আকারে ফুলকপির মত হলেও ফুলগুলো সাদার পরিবর্তে পাতার রঙের মত গাঢ় সবুজ।আলাপকালে কৃষক মলিন্ড বিশ্বাস জানান, তিনি একজন সবজিচাষি, চলতি শীত মৌসুমে উপজেলা কৃষি দপ্তরের সহায়তায় বীজ সংগ্রহ করে অক্টোবর মাসে বীজ তলায় ছিটিয়ে চারা তৈরি করেন। এরপর চারা রোপণ করেন মূল আবাদি জমিতে। প্রথম বছরেই ভাল ফলন হয়েছে। তাই আগামীতে চাষের পরিধি আরও বাড়ানোর চিন্তা করছেন তিনি। এবার প্রায় ১৫শতক জমিতে ব্রকলি আবাদ করেছেন।এতে প্রায় দুই হাজার ব্রোকলির চারা রোপণ করেছেন । তার দেখাদেখি ব্রকলি চাষে অনেকের আগ্রহ দেখা দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন ব্রোকলি চাষে পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় অনেক সমস্যা পোহাতে হয়েছে। তবে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ সহায়তা করেছেন স্থানীয় উপ- সহকারী কৃষি কর্মকর্তা একেএম রিয়াদ হোসেন ও সুবিনয় দাস।

ব্রোকলির খেতেই দেখা হয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ দেবল সরকারের সাথে।এসময় তিনি জানান- এ অঞ্চলের মাটি ব্রোকলি চাষের জন্য উপযুক্ত কিন্তু এলাকায় পরিচিতি না থাকায় কৃষকরা ব্রোকলি চাষাবাদ করেন না। ব্রোকলি চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে এবছর আমরা উদ্যোগ নেই। সবজিচাষি মলিণ্ড বিশ্বাসকে বীজ দেয়া হয়। পাশাপাশি আমরা খেত তদারকি করি। এতে অত্যন্ত ভাল ফলন হয়েছে

তিনি আরও জানান, ব্রোকলির বীজ অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে বীজতলায় বপন করা হয়। পরে নভেম্বরের শুরুতে তা মূল খেতে রোপণ করা হয় । বীজ বপন থেকে ৮০-৯০ দিনের মধ্যে এতে ফুল আসে। চাষি মলিন্ড বিশ্বাসের এ খেতে সম্পূর্ণ নিরাপদ পদ্ধতিতে ব্রকলি চাষ করা হচ্ছে। ব্রকলির জমিতে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত জৈব সার ব্যবহার করা হচ্ছে।

মেধা বিকাশ, চোখের দৃষ্টি বৃদ্ধি, ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রন, রক্তের সঞ্চালন বৃদ্ধিসহ মানবদেহের স্বাভাবিক পুষ্টি বজায় রাখার পাশাপাশি ব্রকলি অর্থনৈতিক লাভজনক ফসল।