ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে

সোমবার, ০৯ মে ২০২২ | ১২:০৪ অপরাহ্ণ

ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে
apps

ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলছে আজ সোমবার। দেশটির কোটি কোটি মানুষ ভোট দিচ্ছেন। ভোট শুরুর পর এদিন সকালে দেশটির দক্ষিণের অশান্ত একটি অঞ্চলের একটি ভোটকেন্দ্রে বন্দুকধারীদের গুলিতে তিন নিরাপত্তারক্ষী নিহত হয়েছেন। পুলিশের বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

এবারের নির্বাচনে বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, জয়ের ক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন ফিলিপাইনের সাবেক স্বৈরশাসক ফার্দিনান্দ মার্কোসের ছেলে ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র।

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ফিলিপাইনে নির্বাচনের সময় পরিস্থিতি খুব নাজুক হয়ে ওঠে। এর কারণ হলো দেশটির সহিংস রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও দুর্বল বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন। কিন্তু পুলিশ দাবি করছে, বিগত সময়ের চেয়ে এবার নির্বাচনের সময়কার পরিস্থিতি তুলনামূলক শান্ত।

সোমবার ফিলিপাইনের মিন্দানাও দ্বীপের বুলুন পৌর এলাকার ভোটকেন্দ্রে ভোট চলাকালে প্রাণঘাতী গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। মিন্দানাও দ্বীপ কমিউনিস্ট থেকে শুরু করে ইসলামপন্থী একাধিক সশস্ত্র সংগঠনের জন্য স্বর্গ হিসেবে বিবেচিত। ওই অঞ্চলে সক্রিয় এসব সশস্ত্র গোষ্ঠী বিভিন্ন সময় প্রাণঘাতী হামলা চালিয়ে থাকে।

বুলুনের সাবেক মেয়র ইব্রাহীম মাঙুদাদাতু এএফপিকে বলেছেন, মূলত একটি স্কুলে এ ভোটকেন্দ্র। গোলাগুলি শুরু হলে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে থাকা মানুষ ভীত হয়ে ছুটতে শুরু করেন। এদিকে মাগুইনদানাও প্রাদেশিক পুলিশের মুখপাত্র মেজর রোলদান কুনতং বলেছেন, হামলায় আরও এক নিরাপত্তারক্ষী আহত হয়েছেন।

এর আগে রোববার দিবাগত রাতে দাতু উনসায় পৌর এলাকায় একটি ভোটকেন্দ্রের বাইরে পাঁচটি গ্রেনেড বিস্ফোরণে নয়জন আহত হন। হামলার কয়েক মিনিট পর কাছের শরিফ আগুয়াক পৌর এলাকায় আরও একটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তবে কেউ হতাহত হয়নি। এ দুটি শহর দক্ষিণের মাগুইনদানাও প্রদেশে অবস্থিত।

২০০৯ সালে এই মাগুইনদানাওয়ে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। বন্দুকধারীদের হামলায় সেবার ৫৮ জন মানুষ প্রাণ হারান। বন্দুকধারীরা স্থানীয় একজন ভূমিপুত্রের হয়ে তাঁর বিরোধীপক্ষকে প্রার্থিতা দাখিল করা থেকে বিরত রাখার জন্য প্রাণঘাতী এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে।

দেশটির নির্বাচন কমিশনের একজন মুখপাত্র বলেছেন, সোমবার বন্দুক হামলা ও রোববারের গ্রেনেড হামলাগুলো নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মিন্দানাওয়ের দাভাও শহরের সাবেক মেয়র ও ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সারা দুতার্তে সাংবাদিকদের বলেছেন, সহিংসতার কারণে ভোটাররা ভোটবিমুখ হবেন না বলে আশা করছেন তিনি। দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তের মেয়ে সারা ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের লড়াইয়ে এগিয়ে রয়েছেন বলে জানাচ্ছে এএফপি।

এদিকে এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছেন ফিলিপাইনের সাবেক স্বৈরশাসক ফার্দিনান্দ মার্কোসের ছেলে ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র। তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ১৯৮৬ সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া সাবেক স্বৈরশাসক ফার্দিনান্দের পরিবার আবার দেশটির ক্ষমতার চূড়ায় আরোহণ করবে বলে ধারণা।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১১ কোটি মানুষের দেশ ফিলিপাইনের পৌনে ৭ লাখ ভোটার স্থানীয় সময় সকাল ৬টায় ভোট দেওয়া শুরু করেছেন। চলবে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। এবারের নির্বাচনে ভোটাররা প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট, ১২ জন সিনেটর, নিম্নকক্ষের ৩০০ আইনপ্রণেতা এবং মেয়র, গভর্নরসহ ১৮ হাজার প্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন।

Development by: webnewsdesign.com