ফিটিং মামলায় বেপরোয়া মাদকদ্রব্যের এএসআই কামাল

সোমবার, ১৫ মার্চ ২০২১ | ৬:৩৭ অপরাহ্ণ

ফিটিং মামলায় বেপরোয়া মাদকদ্রব্যের এএসআই কামাল
apps

সিলেটের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় গোয়েন্দা শাখার এএসআই মোস্তাফা কামাল বড় অংকের টাকার বিনিময়ে ইয়াবা ট্যাবলেটের মিথ্যা মামলা দিয়ে সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারের এক সুনামধন্য ব্যবসায়ীকে ফাঁসানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মিথ্যা মামলায় হাজতবাসকারী ওই নিরিহ ব্যবসায়ী জিন্দাবাজারস্থ এমএস ইলেকট্রনিক সেন্টার গার্ডেনের পরিচালক এবাদুল্লাহ আল শাহাদ। তিনি শাহপরান থানার খাদিমপাড়া দাসপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী মো: আব্দুল গফুর মিয়ার পুত্র।

অভিযোগে জানা গেছে, ব্যবসায়ী এবাইদুল্লা আল শাহাদের সাথে সিলেট নগরীর সওদাগরটুলা ৩৭ নং বাসার মৃত মো: আবুল হোসেন ওরফে দুদু মিয়ার ছেলে আবাদ হোসেন, তার ভাই এমদাদ হোসেন, ইফরাদ হোসেন, নগরীর জিন্দাবাজার এলাকার পুরানলেনের মৃত মো: আলীর ছেলে নুর মো: আদনান ও মৃত আব্দুল গফফারের ছেলে মো: আনিসদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। উক্ত বিবাদীগণ বিভিন্ন ধরনের অবৈধ দাবী দাওয়া নিয়েও শাহাদের সাথে চলছিল বিভিন্ন ধরনের ফাঁদে ফালানোর পাঁয়তার।

সর্বশেষ ১৩ মার্চ তারিখে ব্যবসায়ী এবাদুল্লাহ আল শাহাদকে ব্যবসায়ীক কাস্টমার সেজে বিবাদিদের চিহিৃত লোক দিয়ে ফোন করে সিলেট নগরীর বন্দরবাজার এলাকার রংমহল টাওয়ারের সামনে তাকে আসার কথা বলে। প্রতিউত্তরের শাহাদ বলেন, আপনে আমার দোকানে আসেন-এসময় এই ভুয়া কাষ্টমার বলে, আমিতো আপনার দোকান চিনিনা-আমি দেড় থেকে ২ লক্ষ টাকার মাইক ও সাউন্ড সিস্টেম মালামাল কিনবো। এই মালামাল বিক্রির আশায় ব্যবসায়ী শাহাদ ভুয়া কাষ্টমারের কথামতো রংমহল টাওয়ারের সামনে গিয়ে তাকে ফোন করার সাথে সাথেই ‘ফ্লিম স্টাইলে’ একদল যুবক শাহাদকে এলোপাতাড়িভাবে চরতাপ্পড় মারতে শুরু করেন। এভাবে করেই দুস্কৃতিকারীরা তার হাত থেকে মোবাইলফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। যা ঘটনাস্থানের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে রেকর্ড রয়েছে।

শুধু তাই নয় তারপর শাহাদের পিতা আব্দুল গফুর মিয়াকে ফোন দিয়ে বাদী পক্ষের আদনান বলে আপনার ছেলেকে পুলিশে ধোলাই দিচ্ছে রংমহল টাওয়ারের সামনে। এ খবর পেয়ে গফুর মিয়া দ্রুত রংমহল টাওয়ারের সামনে চলে যান এবং তার ছেলে শাহাদকে ধরে নিয়ে গেছে তা আশপাশের লোকজনের কাছে জানতে চাইলে তারা সবাই বলে একদল যুবক ধরে নিয়ে গেছে আমরা তাদেরকে চিনি না। তারপর আব্দুল গফুর ছেলে শাহাদের সন্ধানে সিলেট কোতোয়ালী মডেল থানায় , ডিবি অফিস, র‌্যাব অফিস সব জায়গায় খোঁজাখুজি করে না পেয়ে আবার কোতোয়ালী থানায় গিয়ে পুলিশের সাহায্যে চাইলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রংমহল টাওয়ারস্থ মার্কেটের সিসি ক্যামেরা রেকর্ড দেখে নিশ্চিত হওয়া গেলো তাকে উঠাইয়া নিয়ে গেছে দুস্কৃতিকারীরা। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৩ মার্চ বিকেল ৪ টার দিকে।

তারপর সন্ধ্যা ৬ টার দিকে সিলেট নিউজ বিডি অনলাইন টিভি লাইভে সাক্ষাতকার দেন আব্দুল গফুর। এই সাক্ষাতকারের দু’ঘন্টা পরই ব্যবসায়ী এবাদুল্লাহ আল শাহাদকে এসএমপি কোতোয়ালী মডেল থানায় নিয়ে আসেন সিলেট মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় গোয়েন্দা শাখার এএসআই মোস্তাফা কামাল। এদিকে শাহাদের পিতা আব্দুল গফুর মিয়া এমন খবর পেয়ে কোতোয়ালী থানায় ছুটে যান এবং কারা শাহাদকে ধরে নিয়ে গেছে তা জানতে চাইলে থানার পুলিশ কর্মকর্তা দেখিয়ে দেন এএসআই মোস্তফা কামালকে। পরে ছেলে শাহাদকে কেন ধরে নিয়ে আসলেন। এ বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনার ছেলের হাতের মুঠোয় ১০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া গেছে। অর্থাৎ ভিডিও ফুটেজে প্রমাণ করে শাহাদের হাতে কোন ইয়াবা ট্যাবলেট ছিল না সিসি ফুটেজে স্পট করে দেখা যাচ্ছে। শাহাদের ডান হাতে কানে মোবাইলফোন লাগানো আর বাম হাত খালি। না তার হাতেই ইয়াবা পেয়েছি বলে মোস্তফা কামাল জানান। তখন শাহাদের পিতা আব্দুল গফুর মিয়া ওই মাদকদ্রব্য কর্মকর্তাকে বলেন তাহলে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ কি ভুয়া? এমন প্রশ্ন করলে তিনি  এর সদউত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান।

পরবর্তীতে অনুসন্ধানে জানা যায়, এএসআই মোস্তফা কামাল বিবাদী পক্ষগণের থেকে বড় অংকের টাকা খেয়ে ঘুষ-বাণিজ্য করে এবাদুল্লাহ আল শাহাদের মতো সুনামধন্য একজন ভালো ব্যবসায়ীর উপর ফিটিং মামলা ৩৬-(১৩-০৩-২০২১), জিআর ১৯৩/২০২১ দিয়ে তার ব্যবসায়ী সুনামক্ষুন্ন করা হচ্ছে। যা একেরারেই মিথ্যা বনোয়াট ভিত্তিহীন।

এ ব্যাপারে শাহাদের পিতা আব্দুর গফুর মিয়া বলেন, আমি বাদি হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় গোয়েন্দা শাখায় এএসআই মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিবো বলে সাংবাদিকদের জানান।

আজ সোমবার (১৫ মার্চ) বিকেল ৫ টা ১০ মিনিটে এ ব্যাপারে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় গোয়েন্দা শাখায় এএসআই মোস্তফা কামালের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ফিটিং মামলার কাজ আমরা করি না। সে নিজেই ইয়াবা আসক্ত। তাকে রংমহল টাওয়ারের সামন থেকে ঘটনার সময়ও তারিখে ধরে আনা হয়েছে। ডান হাত থেকে নয় পকেটের ভেতর থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Development by: webnewsdesign.com