প্রেমে করে বিয়ে, বাসর রাতেই বিচ্ছেদ

শনিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২২ | ১২:৪৬ অপরাহ্ণ

প্রেমে করে বিয়ে, বাসর রাতেই বিচ্ছেদ
প্রেমে করে বিয়ে, বাসর রাতেই বিচ্ছেদ
apps

মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার মেদেনীমহল গ্রামের নববধূর ঠাঁই হলো না স্বামীর বাড়ি। দীর্ঘ দিনের প্রেম করে বাসর করার স্বপ্নটাও যৌতুকের দাবীতে ভেঙ্গে গেল মুহূর্তেই। বাসর রাতেই দু’জনের বিচ্ছেদ হয়ে গেলো। সকল স্বপ্ন বিলীন হয়ে নববধূর ঠাঁই হলো বাপের বাড়ি। এব্যাপারে স্বামী-স্ত্রী উভয়েই পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ করেছেন রাজনগর থানায়।

থানায় দায়ের করা অভিযোগে জানা যায়, রাজনগর উপজেলার ৩নং মুন্সিবাজার ইউনিয়নের মেদেনীমহল গ্রামের রেখাত আলীর ছেলে বাহরাইন প্রবাসী ছমির হোসেন(৩৭)এর সাথে বিয়ে হয় সৌদী আরব প্রবাসী সুমা আক্তার(২২) এর সাথে।

গত ৬ নভেম্বর সিলেট মদিনা মার্কেটের চিলি রেস্টুরেন্টে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। সুমা আক্তার সিলেট জেলার জালালাবাদ থানার কালীবাড়ি, মদিনা মর্কেটের বাসিন্দা। বিবাহের দিন রাত সাড়ে নয়টায় ছমির হোসেন বাসর ঘরে প্রবেশ করে যৌতুকের টাকা দাবী করে। সুমা আক্তার টাকা পরে এনে দেয়ার কথা জানালেও ছমির হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে তার পিতার দেয়া ৮ ভরি স্বর্ণ শরীরে পরিধান করা আলংকার খুলে নেয়। এসময় ছমির আলীর পিতা রেখাত আলী, তার পরিবারের লোকজন মনির হোসেন, আবীর মিয়া,এংরেজ আলী, মা কছিরুন বিবি তাকে যৌতুকের জন্য মারধোর করেন।

পরদিন স্থানীয় ইউপি সদস্য আসাদুর রহমান আজিজ সালিশে বিষয়টি দেখে দেবেন বলে সুমার সাথে আসা লোকজনসহ সিলেটে পিত্রালয়েমপাঠিয়ে দেন। ছমির হোসেনের ভাই মনির মিয়া বলেন, তার ভাই বাহরাইন থাকাকালীন সময়ে সুমা আক্তারের সাথে পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে দেশে এসে বিয়ে হয়। বিয়ের দিন বাসর রাতে সুমা আক্তার তার ভাইয়ের সাথে অশালীন আচরণ করেন।

এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে ঝগড়া ঝাটি হয়। এরপর থেকে সুমা আক্তার খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিলে পরদিন ইউপি সদস্য আজিজ তার বাড়ির লোকজন দিয়ে সুমাকে বাড়ী পাঠিয়ে দেন। ইউপি সদস্য আসাদুর রহমান আজিজ বলেন, বাসর রাতে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ঝগড়ার খবর পেয়ে পরদিন এসে তাকে তার পিত্রালয়ের লোকজনের নিকট বুঝিয়ে দেই। বাসর রাতে স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদের ঘটনা নিয়ে এলাকায় চলছে আলোচনা সমালোচনা।

বিষয়টি নিয়ে রাজনগর থানায় উভয় পক্ষের মধ্যে শুক্রবার বিকেল ৩টায় এক সমবোঝাতা বৈঠক বসে। জানা যায়, স্বামী ছমির হোসেন বিয়ের পরদিন স্ত্রীকে বিদায় করে দেয়ার ২ দিন পর অন্যত্র বিয়ে করেছেন। যার কারণে সে তার প্রথম স্ত্রী সুমা আক্তারকে বাড়িতে নিতে পারবেন না। ২য় স্ত্রীর সাথে সমঝোতা করে ১ম স্ত্রীকে সে নেবে বলে মতামত দেন।

ইউপি সদস্য আসাদুর রহমান আজিজ ১ম স্ত্রী সুমা আক্তারকে বাপের বাড়ি প্রেরণ ও ২য় বিয়ের জন্য সম্পূর্ণ দায়ী করা হলে তিনি কোনো সঠিক জবাব দিতে পারেননি। বিষয়টি নিয়ে চুড়ান্ত সিন্ধান্তের জন্য থানার অফিসার ইনচার্জ বিনয় ভূষন রায় এর নিকট নিয়ে গেলে সুমা আক্তারের পূর্বের অভিযোগের ভিত্তিতে ছমির হোসেনকে আটক করে থানা হাজতে প্রেরণ করেন। সালিশী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, ৩ নং মুন্সিবাজার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মন্নান, ইউপি সদস্য আসাদুর রহমান আজিজ, ছমির আলীর পিতা রেখাত আলী, পুলিশ কর্মকর্তা এসআই ফারুক ও এসআই সুজন প্রমূখ। সুমা আক্তার তাৎক্ষনিক প্রতিক্রয়ায় বলেন, রাজনগর থানার অফিসার ইনচার্জের নিকট ন্যায় বিচার পেয়ে তিনি সন্তুষ্ট।

Development by: webnewsdesign.com