প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার প্রথম প্রেম……

মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | ৪:২৩ অপরাহ্ণ

প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার প্রথম প্রেম……
apps

প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী। মার্কিন পপ গায়ক নিক জোনাসের সঙ্গে ভালোবেসে ঘর বেঁধেছেন তিনি।

নিককে বিয়ে এবং অতীতের সম্পর্ক নিয়ে বহুবার খবরের শিরোনাম হয়েছেন।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হয়েছে প্রিয়াঙ্কার আত্মজীবনী ‘আনফিনিশড’ বইটি। প্রিয়াঙ্কা তার জীবনের প্রথম প্রেম, প্রথম চুম্বনের বিষয়টি এই বইয়ে উল্লেখ করেছেন।
পড়াশোনার উদ্দেশ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন কিশোরী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। সিডার র‌্যাপিডস শহরে পড়াশোনা করেন তিনি। পরে সেখানে থেকে চলে আসেন ইন্ডিয়ানাপলিসে। এই শহরের নর্থ সেন্ট্রাল হাই স্কুলে ভর্তি হন প্রিয়াঙ্কা। যখন তিনি নাইন গ্রেডের শিক্ষার্থী তখন তারই স্কুলের এক ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান এই অভিনেত্রী। বইটিতে প্রিয়াঙ্কা তার প্রেমিকের নাম বব উল্লেখ করেছেন। তবে এটি ছদ্ম নাম। ছেলেটি টেনথ গ্রেডে পড়তেন। প্রিয়াঙ্কা বইটিতে লিখেছেন—‘বব ভার্সিটি ফুটবল খেলতো, আবার দারুণ রেজাল্ট করেছিল।’

স্কুলে প্রিয়াঙ্কার ক্লাশ রুমের সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মুখ দিয়ে নানারকম মজার অঙ্গভঙ্গি করতেন বব। ছেলেটি প্রিয়াঙ্কার জন্য পাগল ছিলেন। একদিন বব তার গলা থেকে সোনার চেইন খুলে প্রিয়াঙ্কাকে পরিয়ে দেন। বিষয়টি স্মরণ করে প্রিয়াঙ্কা লিখেছেন—‘এটি বিস্ময়কর একটি মুহূর্ত ছিল। আমার মনে হয়েছিল আমি বিয়ে করলাম।’

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রিয়াঙ্কা তার কিরণ মাসির সঙ্গে থাকতেন। প্রেমের বিষয়ে তিনি খুব কঠোর ছিলেন। স্কুলের ক্লাশ শেষ হওয়ার পর যখন বাড়ি ফিরে যেতেন প্রিয়াঙ্কা-বব, তখন তারা পরস্পরকে খুব মিস করতেন। এজন্য ববকে পরামর্শ দিয়ে প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘তুমি তোমার বোনকে আমাদের ল্যান্ড ফোনে ফোন করতে বলবে। আর কিরণ মাসি ফোন রিসিভ করার পর স্কুলের বান্ধবী ভেবে আমাকে দিয়ে দেবে।’ এভাবে কয়েকদিন কথা হওয়ার পর প্রিয়াঙ্কার মাসি তাকে সন্দেহ করেন। বিষয়টি জানিয়ে এ অভিনেত্রী লিখেছেন—‘একদিন আমি কথা বলছি, আর চুপি চুপি ল্যান্ড লাইনের অন্য একটি এক্সটেনশন তুলে নেন কিরণ মাসি। বিষয়টি আমি বোঝে ফেলায় যথাসময়ে কথা শেষ করে লাইন কেটে দিই।’

একবার প্রিয়াঙ্কার মাসি বাড়ি না থাকায় ববকে বাড়িতে ডেকে আনেন প্রিয়াঙ্কা। বব ও প্রিয়াঙ্কা হাতে হাত রেখে বসে টিভি দেখছিলেন। টিভিতে বাজছিল ‘আই উইল মেক লাভ টু ইউ’ গানটি। বিষয়টি জানিয়ে প্রিয়াঙ্কা লিখেছেন—‘বব আমার দিকে ঝুঁকে এলো। আমি তার দিকে তাকালাম। ভাবছিলাম, এটাই কী সেই বিস্মিত মুহূর্ত তৈরি হতে যাচ্ছে—আমার প্রথম চুম্বন।’

দুঃখজনক হল, চুমু খাওয়ার আগেই প্রিয়াঙ্কা তার মাসির বাড়ি ফিরে আসার পায়ের শব্দ শুনতে পান। এতে প্রিয়াঙ্কা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। কোনো উপায় না দেখে দ্রুত ববকে আলমারিতে লুকিয়ে ফেলেন। এরপর প্রিয়াঙ্কা তার কিরণ মাসিকে দিয়ে দোকান থেকে কিছু আনানোর সিদ্ধান্ত নেন, যাতে এই ফাঁকে বব চলে যেতে পারেন! কিন্তু তাতে ব্যর্থ হন। সর্বশেষ প্রিয়াঙ্কার কিরণ মাসি তার ঘরে প্রবেশ করেন। আর প্রিয়াঙ্কা তার বিছানায় বসে বায়োলজি বইটি খুলে পড়ায় মনোযোগী হন। এদিকে তার মাসি এসে প্রিয়াঙ্কাকে আলমারি খুলতে বলেন। কিন্তু প্রিয়াঙ্কা না খোলার অজুহাত দেন। এ বিষয়ে প্রিয়াঙ্কা লিখেছেন—‘আমার হাত-পা এমনভাবে কাঁপছিল যে ঠিকমতো দাঁড়িয়ে আলমারির দিকেও যেতে পারছিলাম না। তারপর বাধ্য হয়ে আলমারির দরজা খুলি, বব সেখান থেকে বেরিয়ে আসে। তারপর মাসি এতটাই রেগেছিলেন যে, এমনটা আমি কোনোদিন দেখিনি।’

এরপর প্রিয়াঙ্কার মাসি দ্রুত প্রিয়াঙ্কার মা মধু চোপড়াকে ফোন করেন। তখন ভারতে মধ্যরাত। ঘটনা শুনে প্রিয়াঙ্কার ওপর তার মা রাগ করেছিলেন। কিন্তু সেটা ওই ছেলের সঙ্গে প্রেম করার কারণে নয়, বরং ধরা পড়ার কারণে। কিন্তু মধু চোপড়ার আচরণে খুশি হতে পারেননি তার বোন কিরণ। তারপর প্রিয়াঙ্কাকে ম্যাসাচুসেট্সে তার মামার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু এতে ববের প্রতি প্রিয়াঙ্কার অনুভূতির কোনও পরিবর্তন হয় না এবং তারা চিঠি ও ই-মেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ বজায় রাখেন। কিন্তু বিধি বাম, প্রিয়াঙ্কা তার মামার কম্পিউটার ব্যবহার করে ই-মেইল পাঠিয়ে আবার ধরা পড়েন।

ববের প্রতি প্রিয়াঙ্কার ভালোবাসা গভীর থাকলেও তার সঙ্গে প্রতারণা করেন বব। বিষয়টি উল্লেখ করে প্রিয়াঙ্কা লিখেছেন—‘এক সময় গিয়ে দেখি বব আমার সবচেয়ে কাছের বান্ধবীর সঙ্গে প্রেম করছে। এরপর সম্পর্কের ইতি টানি। সত্যিকারের ভালোবাসায় এটা মেনে নেওয়া যায় না। বিদায় বব।’

Development by: webnewsdesign.com