প্রথম দিনের লকডাউনে যেমন ছিল ঢাকা..

সোমবার, ০৫ এপ্রিল ২০২১ | ৪:২৩ অপরাহ্ণ

প্রথম দিনের লকডাউনে যেমন ছিল ঢাকা..
apps

অফিস খোলা রেখে গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণার সেই সুযোগে সড়কজুড়ে বিকল্প পরিবহনের ছড়াছড়ি দেখা গেছে। সবমিলিয়ে সরকার ঘোষিত লকডাউনের প্রথম দিনে সোমবার (৫ এপ্রিল) অনেকটাই স্বাভাবিক ছিল নগরজুড়ে গাড়ি চলাচল। ছিল ট্রাফিক পুলিশের ব্যস্ততা। কিন্তু চোখে পড়েনি লকডাউন কিংবা মানুষের অবাধ চলাচল নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো উদ্যোগ।

লকডাউনে সরকার ঘোষিত নির্দেশনার কঠোর সমালোচনা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কাজের প্রয়োজনে বাইরে বের হওয়া সাধারণ মানুষ। এমন ঢিলেঢালা আয়োজনে করোনার সংক্রমণ রোধ নিয়েও দেখা দিয়েছে প্রশ্ন।

লকডাউনের প্রথম দিন। উদ্দেশ্য করোনার সংক্রমণ রোধে মানুষের অবাধ চলাচল রুখে দেয়া। কিন্তু পণ্যপরিবহনের জন্য ব্যবহৃত এ যানটিতে মানুষের হুমড়ি খেয়ে পড়া, তাদের আঙুল ছিল সরকারের লকডাউনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের দিকেই।

সকাল থেকেই রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড়গুলোতে ছিল গাড়ির জটলা। সেই জট কখনো কখনো রূপ নিয়েছে গাড়ির দীর্ঘ সারিতে। স্বাভাবিক দিনের মতোই যান নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হয় ট্রাফিক পুলিশকেও।

এদিকে, লকডাউন বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জোর কোনো তৎপরতা যে ছিল না তার প্রমাণ নগরে চলা কিছু গণপরিবহন। সরকারের প্রজ্ঞাপনে গণপরিবহন চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও চোখ ফাঁকি দিয়ে চলতে দেখা গেছে অনেক গাড়িকে।

তবে রাজধানীর শাহবাগে র‌্যাবের পক্ষ থেকে বসে একটি ভ্রাম্যমাণ আদালাত। মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করাসহ বিনা প্রয়োজনে বাইরে বের হওয়া মানুষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার কথা জানান র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু।

এদিকে রাজধানীর অন্যতম বাস টার্মিনাল গাবতলী থেকে সকালে কোনো বাস ছেড়ে না গেলেও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকায় ফিরেছে অনেক দূরপাল্লার বাস।

এদিকে দুপুরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, লকডাউন বিষয়ে বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত প্রতিদিনই কোভিড সংক্রমণের নতুন নতুন রেকর্ড ভাঙছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিলও। ফেব্রুয়ারিতে দুই শতাংশের ঘরে থাকা সংক্রমণ হার লাফিয়ে বাড়তে বাড়তে এখন ছাড়িয়ে গেছে ২৩ শতাংশে। করোনার ধাক্কায় যখন জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়ার উপক্রম তখন বছর ঘুরে আবারো লকডাউনে বাংলাদেশ।

দেশে করোনার এমন ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ রোধে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউনের ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। রোববার (৪ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

এর আগে গত বছরের ৮ মার্চ দেশে যখন প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় তখনই নড়েচড়ে বসে সরকার। এরপর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবরের পর করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুতই সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। গত বছরের ২৬ মার্চ থেকে শুরু হওয়া সেই ছুটি ৩১ মে পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। এক বছর পর সংক্রমণ মোকাবিলায় আবারও একই ধরনের সিদ্ধান্ত নিল সরকার। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চূড়ান্ত পদক্ষেপ হিসেবে দেশজুড়ে সোমবার সকাল ৬টা থেকে এক সপ্তাহের জন্য শুরু হয় লকডাউন।

Development by: webnewsdesign.com