পীরগঞ্জে ধুয়ে-মুছে পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

শুক্রবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ৫:৩৭ অপরাহ্ণ

পীরগঞ্জে ধুয়ে-মুছে পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
apps

করোনার কারণে প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমুহ খোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে খুব তাড়াতাড়ি স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। সে অনুযায়ী ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।

স্কুলগুলোও খোলার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। শিক্ষা প্রশাসন স্কুল কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে খোলার প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে বলেছে। কী প্রস্তুতি নিতে হবে, তা গত ফেব্রুয়ারিতেই জানানো হয়েছিল? ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলায় গত মঙ্গলবার ও বুধবার বেশ কয়েকটি বিদ্যালয় সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়, স্কুলগুলো খোলার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

উপজেলার পয়েন্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইতিপূর্বে ময়লা আবর্জনা স্তুপ ছিল। গত মঙ্গলবার গিয়ে দেখা যায়, এসব আবর্জনার স্তুপ ইতিমধ্যে পরিষ্কার করা হয়েছে। এই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় দুই শত জন। হাত ধোয়ার জন্য প্রস্তুত করা হযেছে বেসিন, রাখা হয়েছে তরল সাবান (হ্যান্ডওয়াশ) , পানি ও জীবাণু মুক্ত করার জন্য কেনা হয়েছে ব্লিচিং পাউডার, স্যাভলন (লিকুইড) ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার।

স্কুলটির প্রধান শিক্ষক মো. মোজাফফর হুসেন বলেন, যেকোনো সময় বিদ্যালয় খোলার ঘোষণা আসতে পারে এমনটি ধরে নিয়েই তাঁরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, কিনেছেন শিশুদের তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র, মাস্ক।

একই উপজেলার গোদাগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাজী দবির উদ্দীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত মঙ্গলবার গিয়ে দেখা যায়, দুটি স্কুলেই জোরেশোরে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে।

গোদাগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আজিজুর রহমান বলেন, এক মাস আগে বিদ্যালয়টিতে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালানো হয়েছিল। আবারও সরকারি নির্দেশনা পেয়ে “পুরো বিদ্যালয়ই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করছি। শিক্ষার্থীদের বসার বেঞ্চ থেকে শুরু করে বাগান, টয়লেটসহ সব কিছু পরিস্কার করা হচ্ছে। প্রতি শিক্ষার্থীকে স্কুল থেকে দুটি করে মাস্ক দেয়া হবে। আর কেনা হয়েছে ইনফ্রারেড থার্মোমিটার, অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র ও জীবাণু নাশক বিভিন্ন সামগ্রী। প্রথম হতে চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে একদিন আসবে। তাদের বিভিন্ন রুমে বসিয়ে আমরা ক্লাস নেবো”। তবে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনই বিদ্যালয়ে আসবে।

হাজী দবির উদ্দীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মঞ্জুর চৌধুরী বলেন, স্কুল খোলার ঘোষনা হওয়া মাত্রই আমরা পুরোদমে বিদ্যালয় পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করছি। এ ব্যাপারে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকদের ব্যাপক সহযোগীতা পাচ্ছি। আশাকরি ঘোষিত তারিখের আগেই বিদ্যালয় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন সহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করতে পারবো।

পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী নুর আলিফ জানায়, আমি অনেক দিন ধরে স্কুলে যাইনি এখন স্কুলে যেতে পারবো বলে আমি খুব খুশি। সহপাঠিদের সঙ্গে দেখা হবে, তাদের সাথে খেলবো, বেশ মজা হবে।

অভিভাবক মো. বেলাল হোসেন জানান, শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড, দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় সন্তান স্কুলে যেতে পারেনি। তাই তার মানসিক ও শারীরিক বিকাশ সাধনে বিঘ্ন ঘটেছে। দেরীতে হলেও সরকার অবশেষে বিদ্যালয় খুলে দিচ্ছে। এ জন্য সরকারকে ধন্যবাদ।

পীরগঞ্জ উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সরকারের গাইডলাইন অনুযায়ী স্কুলকে প্রস্তুত করতে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতিই তারা নিচ্ছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও অন্যান্য ক্লাস্টারের কর্মকর্তাগণও মাঠপর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন। এ উপজেলায় মোট ১৮৮ টি স্কুল আছে। সরকারিভাবে স্কুলগুলোতে যে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে তাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবস্থানের সময় শিক্ষক, শিক্ষার্থী কিংবা কর্মকর্তা, কর্মচারী সবাইকে সবসময় মাস্ক পরতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি যথাযত ভাবে মেনে চলতে হবে।

 

Development by: webnewsdesign.com