নানা অপকর্মের জন্য গ্রেফতার হওয়া শামীমা নূর ওরফে পাপিয়ার পক্ষ নিয়েছেন বিতর্কিত ব্যক্তি সেফাত উল্লাহ সেফুদা। সম্প্রতি ফেসবুকে দেয়া একটি ভিডিওর মাধ্যমে পাপিয়ার পক্ষে কথা বলেন তিনি। সেফাতউল্লাহ সেফুদা বলেন, পাপিয়া তো অনেক ভালো কাজ করেছে। তাকে গ্রেফতার করার কি হলো? যৌন পেশা পৃথিবীর সবচেয়ে আদিম পেশা। এটা খারাপ কি করেছে সে? যারা তার কাস্টমার হয়েছে, যারা তার খদ্দের হল, যারা তাকে ব্যবহার করল; তাদের খবর কি? এসময় পাপিয়াকে জামিনে মুক্তি দেয়ার জন্য অনুরোধও করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে পবিত্র কোরআনকে অবমাননার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার আসামী হওয়া সেফাতউল্লাহ।
তিনি বলেন, পাপিয়ার পক্ষে যদি ভাল কোন উকিল পাওয়া না যায় তাহলে আইনি লড়াইয়ের জন্য আমি তাকে উকিলের মাধ্যমে সহযোগিতা করব। পাপিয়া কোনো অপরাধ করেনি। পাপিয়া যা করেছে সমাজের উঁচু স্তরের লোকদের হ্যাপি করার জন্য করেছে। তার কাস্টমারদেরকে সে খুশি করেছে। এটা তার পেশা এবং ব্যবসা। সে কি কারো পকেট থেকে জোর করে টাকা নিয়েছে? পাপিয়া কি ডাকাতি করেছে? ব্যাংক লুট অথবা কি ভোট ডাকাতি করেছে? তিনি আরও বলেন, আমি পাপিয়ার পক্ষে লড়াই করব। পাপিয়াকে আমি আইন এবং আইনের দ্বারা সহযোগিতা করব। পাপিয়ার লোকদেরকে বলবে, আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে।
উল্লেখ্য, অভিজাত এলাকায় জমজমাট নারী ব্যবসাসহ ভয়ঙ্কর সব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত শামীমা নূর পাপিয়া। শুধু গত এক মাসেই এই নারী রাজধানীর অভিজাত এক পাঁচ তারকা হোটেলে বিশাল অঙ্কের বিল পরিশোধ করতে গিয়ে গোয়েন্দাদের চোখে পড়েন। একের পর এক বেরিয়ে আসতে থাকে তার সব অপকর্মের কাহিনী। জানা যায়, আলোচিত এ নারী নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সদ্য বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক। তার স্বামী মফিজুর রহমান চৌধুরী সুমন।
পাঁচ তারকা হোটেলে নারী ও মাদক ব্যবসাই পাপিয়ার আয়ের মূল উৎস। দেশের অভিজাত কিছু মানুষ ও বিদেশিরাই এর গ্রাহক। ইন্টারনেটে স্কট সার্ভিস খুলে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শিক্ষিত সুন্দরী তরুণীদের সংগ্রহ করে খদ্দেরদের কাছে পাঠাতেন পাপিয়া। পাপিয়ার সব কর্মকাণ্ডের অন্যতম অংশীদার তার স্বামী মফিজুর রহমান চৌধুরী সুমন। নরসিংদী শহর ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সুমন এক সময় নরসিংদীর প্রয়াত পৌর মেয়র লোকমানের বডিগার্ড ছিলেন।
নরসিংদীবাসী জানান, নরসিংদী শহরের ব্রাক্ষন্দী মহল্লার মতিউর রহমানের ছেলে মফিজুর রহমান চৌধুরী সুমন। শৈশব থেকেই সন্ত্রাস কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন সুমন। ২০০৯ সালে প্রেমের সম্পর্কে পর পাপিয়া চৌধুরীকে বিয়ে করেন সুমন। এরপর রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন পাপিয়া।
২০১৮ সালে নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক হন পাপিয়া। নরসিংদীর শহরের ভাগদী এলাকায় কেএমসি কার ওয়াশ নামে একটি গাড়ির সার্ভিস সেন্টার রয়েছে তার স্বামী সুমনের। পাপিয়ার স্বামী সুমনের ঢাকায় সন্ত্রাসের পাশাপাশি অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গেও সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। নরসিংদীতে রয়েছে সুমন ও তার স্ত্রী পাপিয়ার বিশাল কর্মীবাহিনী। মাঝেমধ্যেই তারা বিশাল শোডাউন দেন আওয়ামী লীগের মিছিল-মিটিংয়ে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দেশত্যাগের সময় পাপিয়াসহ চারজনকে গ্রেফতার করে র্যাব।
Development by: webnewsdesign.com