পলাশবাড়ী সোনালী ব্যাংক ভবনে ঢুকে কর্মকর্তাদের লাঞ্চিত ও হামলা

বৃহস্পতিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২০ | ৭:২৯ অপরাহ্ণ

পলাশবাড়ী সোনালী ব্যাংক ভবনে ঢুকে কর্মকর্তাদের লাঞ্চিত ও হামলা
apps

গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার সোনালী ব্যাংক শাখার ভবন মালিকের কর্তৃক শাখাটির কর্মকর্তাদের লাঞ্চিত ও কর্মচারীদের মারধর করা হয়েছে। বর্তমান সময়ে মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) শাখাটিতে ঢুকে কর্মকর্তাদের নানাভাবে অকথ্যভাষায় গালিগালজ করত লাঞ্চিত করেন ও কর্মচারিরা উত্তেজিত ব্যক্তিদের থামাতে গেলে কর্মচারিদের চড় মারেন ভবন মালিক শহিদুল ইসলাম বাদশা, এসময় আরো উত্তেজিত হন তার ছোট দুই ভাই আজাদুল ইসলাম ও সাজেদুল ইসলাম, ছেলে শিউলসহ পরিবারের সদস্যরা।

পরে বিষয়টি শাখাটির ম্যানেজারের অফিস কক্ষে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে আপোষ মিমাংসা করা হলেও তারপরে দিন এঘটনাকে কেন্দ্র করে সেসময়ে শাখাটির কমকর্তা ও কর্মচারিদের গালিগালাজের প্রতিবাদ করায় উপজেলা বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সদস্য সচিব ও যুবলীগ নেতা আশরাফুল ইসলাম তিতাসের পরিবারের উপর নতুন করে ২৫ নভেম্বর বুধবার হামলা করে শহিদুল ইসলাম বাদশা গং। এসময় তিতাসের বড় বোন উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবিনা ইয়াসমিন ঝুনুকে শ্লীলতাহানি ও সহ সভাপতি তিতাসের স্ত্রী বিলকিস বেগম, ভাগিনা রুপম, মহব্বত, ভাই রিকু কে মারধর এঘটনায় শহিদুল ইসলাম বাদশার ছেলেও আহত হন। এঘটানর পর হতে আতংকিত কর্মকর্তা কর্মচারীদের ন্যায় সচেতন গ্রাহক সহ সচেতন মহলের দাবী অতিদ্রুত শাখাটি ভবন পরিবর্তন করে অন্যত্র নেওয়ায় দাবী জানান।

ব্যাংকের এ শাখাটির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা সাথে আলোচনা করে জানা যায়, সোনালী ব্যাংক পলাশবাড়ী শাখার নবাগত ম্যানেজার নাজমুল ইসলাম নাহিদ সাহেব যোগদানের পর হতে ব্যাংকের এ শাখাটির সকল প্রকার দালালি বন্ধ হয়ে যায়। এরফলে দালাল সিন্ডিকেট চক্রের কার্যক্রম থেমে যায়। এতে সবচেয়ে বেশী ক্ষিপ্ত হন ভবন মালিক শহিদুল ইসলাম বাদশা , তার ছোট ভাই আজাদুল ইসলাম ,সাজাদুল ইসলাম।

এরপর হতে ব্যাংকটির কর্মকর্তাদের সাথে অসৌজন্য মূলক আচরণ ও ইর্ষানিত হয়ে মিথ্যা গুজব ও অপ্রপ্রচার মিথ্যাচার করতে থাকে। আরো জানা যায় বর্তমান যোগদানের পরে শাখাটির আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিত পালন করার অনুষ্ঠানে ভবন মালিক হিসাবে শহিদুল ইসলাম বাদশা ছোট ভাই আজাদুল ইসলামকে দাওয়াত না দেওয়া তিনি ম্যানেজারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালজ করে ও দেখে নেওয়া হুমকি প্রদান করেন। যে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পলাশবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আলহাজ্ব একেএম মোকসেদ চৌধুরী বিদ্যুৎ।

এরপর বিষয়টি সেই হতে নানাভাবে ম্যানেজারকে হেয় ও বিপদে ফেলতে উঠে পড়ে লাগে এ তিন ভাই ম্যানেজার কে অন্যত্র বদলি করে পূর্ব কর্মকান্ড চালানোর চেষ্ঠায় রয়েছেন তারা।

এছাড়াও বেকার ভাতা করে দেওয়ার কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের একাউন্টে চেক প্রদান করেন ।এরপর ভুক্তভোগীরা ব্যাংক ম্যানেজারের স্মরণাপন্ন হলে ম্যানেজার তাদের চেকের অর্থ ফেরত প্রদানে তাগেদা ও চাহিদা মাফিক একাউন্ট ফ্রিজ না করায় ম্যানেজারে উপর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এ তিন ভাই। পরে বিষয়টি নিয়ে তারা ম্যানেজারকে হেয় বা অপবাদের কালি দেওয়া চেষ্টায় মিথ্যা অপপ্রচার করে। এবং সোনালী ব্যাংকের উর্দ্বোতন কর্মকর্তাদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে ব্রিভান্ত করার চেষ্ঠার ব্যর্থ হয়ে তারা ম্যানেজারকে সহ শাখাটির কর্মকর্তাদের মারধর করার উপক্রম পরিস্থিতি সৃষ্টির কাজ চলমান রেখেছেন বলে দাবী করে এসকল কর্মকর্তা । তারা বলেন, তাদের পরিবারের সকলের নামে ঋন রয়েছে সোনালী ব্যাংকের এ শাখাটিতে। শহিদুল ইসলাম বাদশা ও তার স্ত্রী ,ছোট ভাই আজাদুল ইসলাম.সাজাদুল ইসলাম তাদের আরেক ভাই মৃত বাবলু মিয়ার নামে পৃথক পৃথক ভাবে শাখাটিতে ঋন গ্রহন করেছেন। এছাড়াও তাদের তিন ভাইয়ের পৃথক পৃথক ভাবে রয়েছেন সুপারিশ ও ততবির।

আরো জানা যায় ও দেখা যায় গত ২৪ নভেম্বর মঙ্গলবার অবৈধভাবে ঋন সুবিধা আদায় করতে না পেরে সোনালী ব্যাংক ভবন মালিক কর্তৃক ম্যানেজার ও সিনিয়র অফিসার ফারুক কে লাঞ্চিত করেন।এসময় উপস্থিত মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী বিলকিস ও তার স্বামী আশরাফুল ইসলাম তিতাস উক্ত ঘটনার প্রতিবাদ করায় এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে । জানা যায় এর আগে এ দিন বিকেল ৩ টার দিকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও ব্যাংক ভবনের মালিক শহিদুল ইসলাম বাদশা ম্যানেজারের রুমে প্রবেশ করে জনৈক্য ব্যাক্তির ঋন খেলাপি তালিকা থেকে নাম কর্তন করে পুনঃঋন প্রদান ছারাও তার ছেলে ও ভাতিজার নামে ২ টি ঋনের দাবি করেন।

এসময় ম্যানেজার নাজমুল ইসলাম ঋন খেলাপির ঋন নবায়ন করা ও পুনঃ ঋন প্রদান সময় সাপেক্ষ ব্যাপার বলে জানান। আর এতে ক্ষিপ্ত গয়ে আকর্ষিক উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি শহিদুল ইসলাম বাদশা উত্তেজিত হয়ে ব্যাংকে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে ম্যানেজার নাজমুল ইসলামকে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দসহ উচ্চ স্বরে হুমকি ধামকি প্রদান করে মারমুখী ভুমিকায় অবতীর্ণ হলে সকল ব্যাংকের কর্মকর্তার ও আনসার সদস্যরা ম্যানেজারের রুমে এগিয়ে আসে।

ঘটনার আকর্ষিকতায় ব্যাংকে প্রবেশ করে আওয়ামীলীগ নেতা বাদশার ছোট ভাই সদ্য বহিস্কৃত যুবলীগ সভাপতি আজাদুল ইসলাম,সাজাদুল ইসলাম ও তার একমাত্র ছেলে শিউল, তারা ব্যাংক ভবনে ঢুকে সিনিয়র অফিসার ফারুকের শার্টের কলার ধরে টানাটানি করে। ব্যাংকে আগে থেকেই অবস্থান করা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও মোটর মালিক সমিতির সভাপতি বিশিষ্ট সমাজ সেবক এনামুল হক মকবুল, সাংবাদিক সিরাজুল ইসলাম রতন, আশরাফুল ইসলাম, ও যুবলীগ নেতা আশরাফুল ইসলাম তিতাস বিষয়টি শান্ত করার চেষ্টা করলে বাদশাগংরা এনামুল হক মকবুল কে গালিগালাজ করলে তিনি তাৎক্ষণিক ব্যাংক ভবন ত্যাগ করে চলে যায়।

পরে আশরাফুল ইসলাম তিতাস অন্যায় ভাবে ব্যাংক কর্মকর্তাদের অপমানের প্রতিবাদ জানালে তারা ব্যাংক ভবনের মধ্যেই তিতাসকে কিলঘুষি ও মারপিট করেন।ব্যাংকে পুরো ঘটনার ভিডিও চিত্র সাংবাদিকরা ধারন করলে তারা সাংবাদিকদের কেউ ও হুমকি ধামকি প্রদান করেন। এবং ভিডিও করার পরে কিকরার আছে করতে বলে দাবী করেন তারা আগে নেংটা হয়েছে এখন আর সাংবাদিকের কি করবেন বলে উপহাস করেন।

পরে বিষয়টি নিয়ে ব্যাংকে সমঝোতা বৈঠকে বসেন ম্যানেজার নাজমুল ইসলাম যা অসমাপ্তই থেকে যায়। এরইধারাবাহিকতায় ২৫ নভেম্বর বুধবার দুপুরে তিতাস ও শহিদুল ইসলাম বাদশার মধ্যে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে আবার কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে মারামারির সুত্রপাত হয়। এসময় বাদশা ও তার ভাই আজাদুল, সাজাদুল ছেলে শিউলসহ বেশ কয়েকজন ব্যাক্তি তিতাস ও তার স্ত্রী বিলকিস,ভাগিনা সাংবাদিক নুর মহব্বত, ছোট ভাই রিংকুকে বেদম মারপিট করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে বিলকিস ও রিখুর অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।এদিকে প্রতিপক্ষের হামলায় শিউল ও হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে জানা যায়। আশরাফুল ইসলাম তিতাসের পরিবারের পক্ষ হতে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা যায়।

এদিকে শাখাটির ভবন মালিকের এরকম আচরণে যেমন কর্মকর্তা কর্মচারিরা আতংকিত তেমনি সচেতন গ্রাহকগণ বিব্রত হয়ে পড়েছেন । ব্যাংকের একাধিক গ্রাহক যারা প্রতিনিয়ত ব্যাংকের শাখাটিতে প্রতিনিয়ত নিজেদের প্রয়োজনে ব্যাংকে আশা যাওয়া করেন এরকম একাধিক ব্যক্তির সাথে আলোচনা করে জানা যায়,ব্যাংকে যখনি আসেন শাখাটিতের শহিদুল ইসলাম বাদশা কোন না কোন ভাইকে দেখতে পাওয়া যায়। ম্যানেজারের অফিস কক্ষে গিয়ে চেয়ারে বসে থাকে বা অন্যান্য কর্মকর্তাদের টেবিলে গিয়ে বসে থাকে এতে অনেক গ্রাহকে দাড়িয়ে থাকতে হয় যা তারা বিব্রত বোধ করেন আগত গ্রাহকগণ।

উল্লেখ্য, শহিদুল ইসলাম বাদশাসহ তার আপন ছোট ভাইয়েরা আগের মতো শাখাটিতে ততবির সুপারিশে কোন কাজ না হওয়ায় শাখাটির নবগত ম্যানেজার নাজমুল ইসলাম নাহিদের নামে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে ঘোলা পানিতে মাছ স্বীকারের করার চেষ্টায় যাচ্ছেন।

Development by: webnewsdesign.com