পরনা সম্প্রদায়ের লোকেরা বউয়ের জন্য ‘কাস্টমার’ খোঁজে

বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি ২০২০ | ২:৪২ অপরাহ্ণ

পরনা সম্প্রদায়ের লোকেরা বউয়ের জন্য ‘কাস্টমার’ খোঁজে
apps

পরনা সম্প্রদায়ের কারো বাড়িতে কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করলে সবাই খুশিই হন। কারণ তারা জানেন, একটু বড় হয়ে ওঠার পরে ‘পন্য’ হিসেবে এই মেয়েই খুলে দেবে তাদের উপার্জনের রাস্তা।

ভারতের দিল্লির নজফগড়ের পরনা সম্প্রদায়ের মধ্যে এমন ভয়াবহ রীতি প্রচলিত রয়েছে, তা কল্পনার অতীত। এখানে বাড়ির বউদের দিয়ে পতিতাবৃত্তি করানোই রীতি। এবং এই অসম্মানজনক পেশায় নারীদের ঠেলে দেন তাদের শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই।

পরনা সম্প্রদায়ের মেয়েদের লেখাপড়া শেখানোর রীতি নেই। বরং সাত-আট বছর বয়স হলেই বাবা-মা মেয়েকে পাঠিয়ে দেন কোন দালালের কাছে। সেই দালালের কাজ হয়, পতিতাবৃত্তিতে মেয়েদের প্রশিক্ষিত করা।

১২ থেকে ১৫ বছর বয়সের মধ্যে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়েটাও এক রকম বাজার। কারণ মেয়েকে ঘরে নিয়ে যাওয়ার জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকেরা মেয়ের বাবা-মার হাতে তুলে দেন মোটা অঙ্কের টাকা। যারা যত বেশি দর হাঁকতে পারেন, তাদের ঘরেই যায় মেয়ে।

 

 

 

 

বিয়ের কয়েক দিন পর থেকেই বাড়ির বউয়ের জন্য ‘কাস্টমার’ খোঁজা শুরু হয়। এ ক্ষেত্রে ‘দালাল’-এর কাজ করেন মেয়েটির স্বামী। প্রত্যেক রাতে নতুন নতুন ক্রেতা আসে পতিতাবৃত্তিতে নামা নতুন বউয়ের কাছে। মেয়েটির পারিশ্রমিক ওঠে তার স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির অন্যান্য সদস্যদের হাতে।

পরনাদের মধ্যে বহু কাল থেকে এই রীতি চলে আসছে। দারিদ্রপীড়িত পরনাদের সংসার চলে মূলত পতিতাবৃত্তির মাধ্যমে বাড়ির বউয়ের উপার্জিত অর্থেই। মেয়েদের অভিভাবকরাও মেনে নিয়েছেন এই প্রথা। আর পরনা সম্প্রদায়ের মেয়েরা? তাদের মধ্যে এই রীতি নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে, কিন্তু প্রতিবাদের সাহস নেই। কারণ পতিতাবৃত্তিতে রাজি না হলে শ্বশুরবাড়িতে মেয়েদের উপর চলে অকথ্য অত্যাচার, এমনকী সময় বিশেষে হত্যাও করা হয়।

কোন মানবাধিকার সংগঠন কিংবা নারীবাদী সংগঠন পরনা নারীদের অধিকার রক্ষায় কখনও সরব হয়নি। কোন সরকারও তাদের দিকে বাড়িয়ে দেয়নি সাহায্যের হাত।

পরনাদের মধ্যে প্রচলিত এই ভয়াবহ প্রথার কথা সম্প্রদায়ের বাইরে খুব একটা বেশি কেউ জানে না। তবে সম্প্রতি ভারতের বিভিন্ন জাতীয় সংবাদমাধ্যমে একটু একটু করে প্রকাশ পাচ্ছে এই আদিম প্রথার খবর। এতে পরনা নারীদের দুর্দশা মোচনে দেশটির সরকার উদ্যোগী হবে বলে আশা করা যায়।

Development by: webnewsdesign.com