নৌকায় সিল না মারলে ভোটের মাঠে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ঢুকতে না দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ।
শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচারণায় এসব মন্তব্য করেন চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ।
নির্বচনী প্রচারণার এক মিনিট ৪৯ সেকেন্ডের বক্তব্যটি রাতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়ে যায়। এনিয়ে গত দুদিন এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
প্রচারণায় নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিএনপি ভোট বর্জন করেছে। কিন্তু কিছু মানুষ চোট্টাপনা করার জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছে। তারা আসলে বিএনপির দালাল।
তাই আমি বলবো, আপনারা খোঁজ রাখবেন। কে কোন বাড়িতে ঢুকছে তার তালিকা করবেন। আমি নির্বাচনের পরে তার ব্যবস্থা লিবো। আর যদি ওরা ভোট কেন্দ্রে যায়, সোজা কথা নৌকায় ওরা সিল ম্যারি দেখায় দিবে। তাইলি ভোট দিত দিবে, না হলে ভোটের মাঠে ঢুকতে দিবেন না।’
এ সময় প্রার্থী আবুল কালাম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘যদি তাও না পারেন, ওই ব্যক্তির তালিকা করবেন। আমি ব্যবস্থা লিবো তার বাড়িত অ্যাসি। ওই কার বাড়িত ঢুকছে, এইডা আমি বলে গেলাম।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন মো. আব্দুর রাজ্জাক দুলাল। প্রতীক পেয়েছেন আনারস। নৌকা প্রার্থীর এমন মন্তব্য ও ভাইরাল হওয়া ভিডিওর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নৌকা প্রতীক পাওয়ার পর তিনি মনে করছেন যা ইচ্ছে তাই বলতে পারবেন। তাই তিনি এসব কথা বলছেন।’
তিনি বলেন, ‘নৌকার প্রার্থী নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন। মানুষকে ভয়-ভীতি দেখাচ্ছেন। এ বিষয়ে অবশ্যই আমি পদক্ষেপ নেবো, ইউএনও ও নির্বাচন কমিশনার বরাবর অভিযোগ দেবো। নির্বাচনে এমন আচরণ আশা করি না।’
রাজশাহী জেলার ওয়ার্কাস পার্টির সদস্য ও পুঠিয়া উপজেলা ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক মো. মামুনুর রশিদ। প্রতীক পেয়েছেন হাতুড়ি মার্কা। তার ভাষ্য, ‘এমন কথা আমিও বিভিন্ন জায়গায় শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কোনো বাধার সম্মুখীন হইনি। আমি মানুষকে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে যাওয়ার জন্য বলছি। কিন্তু তারা ভয় পাচ্ছেন। বলছেন, ভোটকেন্দ্রে যেতে অনেকে নিষেধ করেছে। যদি এমনই হয়ে থাকে তাহলে নির্বাচনের কি দরকার। সরাসরি নিজেদের প্রার্থীদের চেয়ারম্যান ঘোষণা দিয়ে দিলেই তো পারে। ভোট করার প্রয়োজন পড়ে না।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘অনেক সময় কর্মীদের উৎসাহ যোগাড় করার জন্য অনেক কথা বলতে হয়। তবে কোথায় একথা বলেছি মনে পড়ছে না। আমাকেও অনেকেই অনেক আজেবাজে কথা বলেন। বাহির থেকে মাস্তান ভাড়া করি লি আসে। ওই রাগের মাথায় হয়ত কোথায় বুলি ফেলিছি।’
এ বিষয়ে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, আমি এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো ভিডিও পাইনি বা দেখিনি। আবার এ বিষয়ে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগও দেননি। তবে এমন ঘটনার সত্যতা পেলে আমি অবশ্যই তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তার কাছে জবাব চাইবো। জবাব সন্তোষজনক না হলে আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তাদের বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করব।
Development by: webnewsdesign.com