জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, ‘নির্বাচনের প্রতি দেশের মানুষের অনীহা সৃষ্টি হয়েছে। দিনে দিনে ভোটারের সংখ্যা কমেছে। মানুষের আগ্রহ কমেছে রাজনীতির প্রতি। রাজনীতির পরিবেশ না পেয়ে অনেকেই ছিটকে পড়ছে। নেতৃত্ব নির্বাচনে প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় পার্টির রাজনীতি হচ্ছে দেশের মানুষকে নির্বাচনমুখী করা। আমরা রাজনীতিতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনতে চাই। রাজনীতির প্রতি মানুষের আকর্ষণ তৈরি করতে চাই। দেশের মানুষ যেন আবারও ভোটের প্রতি আগ্রহী হয় আমরা সেই পরিবেশ তৈরি করতে চাই । নির্বাচনে যেন সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা প্রতিফলিত হয়। আমরা মানুষের আস্থা অর্জন করে দেশ ও জনগণের সেবা করতে চাই।’
শনিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় পার্টি খুলনা বিভাগে আয়োজিত তৃণমূলে নেতৃত্ব নির্বাচন বিষয়ক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের আরও বলেন, ‘রাজনীতিতে প্রাণচাঞ্চল্য ও নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশ না থাকায় অনেকেই রাজনীতি থেকে ঝরে পড়ছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য কখনোই শুভ হতে পারে না। এভাবে চলতে থাকলে অনেক দলই সাইনবোর্ড ও নাম সর্বস্ব দলে পরিণত হবে।’
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও খুলনা বিভাগীয় অতিরিক্ত মহাসচিব সাহিদুর রহমান টেপার সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, ‘দেশের মানুষ নির্বাচনের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে, মানুষ ভোট দিতে এখন আর ভোট কেন্দ্রে যায় না।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দাবি করে তাদের কারো ৪০ শতাংশ কারো ৩৫ শতাংশ ভোট আছে। কিন্তু সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোতে দেখা যাচ্ছে ২ থেকে ১০ শতাংশ ভোট পড়ছে নির্বাচনে। নির্বাচনের প্রতি মানুষের কেন অনাস্থা তা নির্বাচন কমিশনকে খুঁজে বের করতে হবে। নির্বাচনে মানুষের অনাগ্রহ হচ্ছে গণতন্ত্রের দুর্বলতা। জাতীয় পার্টি কোনো প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন চায় না। ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে জাতীয় পার্টি সোচ্চার ভূমিকা পালন করবে।’
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য দেন জানিপপ-এর চেয়ারম্যান ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘ভোটের গোপনীয়তা ও নির্বাচনের স্বচ্ছ পদ্ধতি নিশ্চিত করতে হবে। ভোটের স্বচ্ছতা নিশ্চিত না হলে গণতন্ত্র বিপন্ন হতে পারে।’ জাতীয় পার্টি আয়োজিত কর্মশালার প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘নেতা নির্বাচনের বিষয়ে কর্মশালা জাতীয় রাজনীতির জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এই উদ্যোগ অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।’
নির্বাচনী কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায়, অ্যাড. মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, সৈয়দ দিদার বখত্, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও মাগুরা জেলা সভাপতি অ্যাড. হাসান সিরাজ সুজা, দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও খুলনা জেলা সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু, যুগ্ম-মহাসচিব শেখ আলমগীর হোসেন, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও যশোর জেলা সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরু চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক এ বি এম লিয়াকত হোসেন চাকলাদার, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. জহিরুল হক।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন, যুগ্ম-সাংগঠনিক সম্পাদক ও নড়াইল জেলা সভাপতি অ্যাড. খন্দকার ফায়েকুজ্জামান ফিরোজ, সাতক্ষীরা জেলা সভাপতি শেখ আজহার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফুজ্জামান আশু, খুলনা জেলা সাধারণ সম্পাদক মল্লিক হাদিউজ্জামান, বাগেরহাট জেলা সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক হাজারা শহিদুল ইসলাম বাবুল, ঝিনাইদহ জেলা সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মজুমদার, চুয়াডাঙ্গা জেলা সভাপতি অ্যাড. মো. সোহরাব হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার উদ্দিন দুলু, কুষ্টিয়া জেলা সভাপতি নাফিস আহমেদ টিটু, সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার জামিল জুয়েল, মেহেরপুর জেলা সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাদি, মাগুরা জেলা সাধারণ সম্পাদক খান জিয়াউল হক।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জাতীয় পার্টির সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সুমন আশরাফ ও এস. এম. আল জুবায়ের।
Development by: webnewsdesign.com