নাজিরহাট পুরাতন সেতুটি এখন মরণ ফাঁদে

মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল ২০২২ | ২:৩৯ অপরাহ্ণ

নাজিরহাট পুরাতন সেতুটি এখন মরণ ফাঁদে
apps

উত্তরজেলা হাটহাজারী ফটিকছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী সহজ যোগাযোগের নাজিরহাট পুরাতন সেতুটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ১৯১৯ সাল সেতুটি নির্মিত হলে দুই উপজেলার মধ্যে যোগাযোগের নতুন দিগন্ত সৃষ্টি করে। সেতুকে কেন্দ্র করে দুই উপজেলায় অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্কুল, কলেজ, মাদরাসা সামাজিক সংগঠন গড়ে উঠে। হালদা নদীর উপর এ সেতুটি (হাটহজারী -ফটিকছড়ি ) উপজেলার ব্যবসা বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটিয়েছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাক হানাদার বাহিনী বোমা দিয়ে ব্রিজের একাংশ ধ্বংস করে দিলে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকার পুনঃ মেরামত করে আবার ব্রিজের উপর যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল করে। তারপর বিগত তিন যুগ পর ২০০৫ সনে সেতুটি পুনঃ মেরামত কাজ হলেও ২০০৮ সালে সওজ কর্তৃপক্ষ ঝুঁকিপূর্ণ সাইনর্বোড টাঙিয়ে দেই সেতুর দুই পাশের সম্মুখ অংশে, কিন্তু পরবর্তী গেল বছরগুলোতে আর কোনো মেরামতের ছোঁয়া লাগেনি।

এখানে নতুন একটি সেতু নির্মাণে গেল দুই দশক ধরে চেষ্টা তদবির হলেও তা কেবল পরিদর্শন আর মাটি পরীক্ষায় সীমাবদ্ধ রয়েছে। সওজ ও জনপথ বিভাগ প্রায় দুই যুগ পূর্বে সেতুটি চলাচলের অযোগ্য ঘোষণা করলেও এখানে বিকল্প সেতু না থাকায় দুই উপজেলার প্রায় ১০ হাজার পথচারী প্রতিদিন এ সেতু দিয়ে পারাপার হয়।

তাছাড়া বিগত কয়েক বছর ধরে বর্ষায় পাহাড়ি ঢলের প্রবল স্রোতে সেতুর মাঝখানে দেবে গেছে। বিকল হয়ে পড়েছে সেতুর নানা অবকাঠামো গত ৮-৯ বছর আগেও সেতু দিয়ে হালকা যানবাহন রিকসা সিএনজি চলাচল করলেও বর্তমানে মানুষ চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দু পাশের রেলিং অকেজো হয়ে পড়েছে এবং নিচের খুঁটি শুর হয়ে গেছে, তাই বড় কোনো দুর্ঘটনার আগে গুরত্বপূর্ন এ সেতুটির মেরামত ও বিকল্প সেতু নির্মাণের জন্য আবেদন জানিয়ে আসছে স্থানীয় জনসাধারণ।

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সদস্য শওকত আলম বলেন, বর্তমান সারা দেশে ব্রিজের কালর্ভাট রাস্তাঘাটের ব্যাপক কাজ হচ্ছে, কিন্তু আমাদের নাজিরহাট সেতুটি দীর্ঘদিন যাবৎ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে জনসাধারণ এ সেতু দিয়ে আতঙ্কের মধ্যে পারাপার হয়, এখানে দুই উপজেলার দুইজন সাংসদ সদস্য থাকা সত্যেও ব্রিজটা হচ্ছে না। তারা আমাদের আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন তারা উপর মহলে তদবির করেছনে কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। শুধু পরিদর্শন মাটি পরীক্ষায় সীমাবদ্ধ রয়েছে। হালদা নদীর উপর বিকল্প সেতু গণমানুষের প্রাণের দাবি বলে তিনি  জানান।

এ বিষয়ে নাজিরহাট পৌরসভা মেয়র বলেন, হালদা নদীর উপর বিকল্প সেতু নির্মাণের জন্য এমপি মহোদয়কে আমরা বলেছি তিনি এ বিষয়ে উপর মহলে তদবির করেছেন মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে জেলা প্রশাসক পরিদর্শন করে গেছেন।

ফটিকছড়ি উপজেলার এলজিইডির উপ প্রকৌশলী কাছে মাটি পরীক্ষা সেতুর কাজের অগ্রগতি বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, হালদা নদীর উপর বিকল্প সেতুর নির্মাণের জন্য স্পেন সরকারের সাথে ১০০ মিটার স্টিল স্ট্রেচারের প্রজেক্টের চুক্তি হয়েছিল ডিজাইন তৈরি করার পর এস্টিমেটের সময় করোনা চলাকালীন মাঝামাঝি সময়ে স্পেন সরকারের সাথে বাংলাদেশ সরকারের চুক্তিটি বাতিল হলে ব্রিজ নির্মাণ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।

জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর আদেশে আমরা এমপি মহোদয়ের ডিউ লেটার নিয়ে পুনরায় ১০০ মিটার ব্রিজের প্রস্তাব পাঠিয়েছি, বর্তমানে এমপি মহোদয় নিজেই ব্রিজটি নির্মাণের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।

ঝুঁকির বিষয়ে জানতে চাইলে উপ-প্রকৌশলী বলেন, ঝুঁকি এড়াতে আমরা ইউএনও মহোদয়ের নির্দেশে ব্রিজটি কয়েকবার বন্ধ করে দেওয়ার পরও লোকজন পুনরায় চলাচল করছে। এ দিকে পথচারীর দাবি শুধু সাইডর্বোড আর সেতু বন্ধ করে দিলে প্রতিদিনের ১০ হাজার পথচারীর চলাচলের সমাধান আসবে না। তাই বিকল্প সেতু নির্মাণ করে সেতুটি পুনরায় ঝুকিঁমুক্ত করার দাবি জানিয়ে আসছে দুই উপজেলার হাজার হাজার পথচারী ও সচেতন মহল।

Development by: webnewsdesign.com