দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের সদস্যদের কঠোর সমালোচনা ও ক্ষোভের মুখে পড়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ক্ষোভ প্রকাশ করে বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা বলেছেন, তিনি ব্যবসায়ী বলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না।
সোমবার (২৬ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত বরাদ্দে ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে গণফোরামের মোকাব্বির খান বলেন, বর্তমান সরকারের সবচেয়ে ব্যর্থ মন্ত্রণালয় হচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাজারে গেলে মানুষের মুখে মুখে শোনা যায়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এতটাই ব্যর্থ এটিকে মানুষ সিন্ডিকেটবান্ধব মন্ত্রণালয় বলে।
মোকাব্বির বলেন, অনেকে সংসদে বলেছেন, বাণিজ্যমন্ত্রী এর সঙ্গে জড়িত। কিন্তু আমি এভাবে বলতে চাই না। এত কিছুর পরও কেন আপনি পদত্যাগ করেন না।
এসময় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, বার বার একটা কথা উঠে আসছে যে, আমি ব্যবসায়ী, ব্যবসায়ীরা আমার জন্য সুবিধা পাচ্ছেন। যারা এই কথাগুলো বলেছেন, তাদের উদ্দেশ্যে একটা কথা বলি। তাদের রাজনীতির কত বছরের অভিজ্ঞতা আমি জানি না, আমি কিন্তু ৫৬ বছর ধরে রাজনীতি করি। আমি কিন্তু ব্যবসা করি আজকে ৪০ থেকে ৪২ বছর।
তিনি বলেন, একজন তো বললেন আমাকে পদত্যাগ করতে। খুব ভালো কথা বলেছেন। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলব আমাকে ছেড়ে তাকে দায়িত্বটা দিতে পারেন। দাম বেড়েছে, আমাদের প্রধানমন্ত্রী কিন্তু বলেছেন মানুষ কষ্টে আছে। কারণটা কী? আমরা কি শুধু আমাদের জন্যই এই অবস্থায় এসেছি। না একটা বৈশ্বিক পরিস্থিতি আমাদের ওপর প্রভাব ফেলেছে। সেটাও কিন্তু আমাদের হিসাবের মধ্যে আনতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, এ কথা ঠিক যে বড় বড় গ্রুপগুলোই একসঙ্গে অনেক বেশি ব্যবসা করে। কিন্তু একটা জিনিস মনে রাখা দরকার, জেলে ভরলাম, জরিমানা করলাম, সেটা হয়তো করা সম্ভব। কিন্তু তাতে যে সংকটটা হঠাৎ করে তৈরি হয়, আমাদের তো সেটা সইতে কষ্ট হয়। আমরা চেষ্টা করি আলোচনার মাধ্যমে, নিয়মের মাধ্যমে থেকে করতে।
তিনি আরও বলেন, অনেকগুলো কথা বলা হয়েছে, যেমন জ্বালানির কথা আসছে, জ্বালানিটা আমি দেখি না। ডিম সেটা তো আমি খবর জানি না, ডিমের দাম বাড়া বা কমার বিষয়টি, যে মন্ত্রণালয় আছে, তারা ঠিক করে দেয়। দাম বেড়েছে কোনো সন্দেহ নেই। পেঁয়াজের কথা বলা হয়েছে। আমরা আলোচনা করে ঠিক করেছিলাম যাতে কৃষকরা একটু দাম পান। পেঁয়াজে আমাদের ৬ থেকে ৭ লাখ টন ঘাটতি আছে।
টিপু মুনশি বলেন, যদি কৃষকরা একটু ভালো মূল্য পান, তাহলে তারা উৎপাদনের দিকে মনোযোগী হবেন। এ কথা ঠিক যে, ৮০ টাকা বা ৯০ টাকা হওয়া যৌক্তিক নয়। আমরা চেষ্টা করেছি, আমদানির ব্যবস্থা করেছি, আমরা চাইছিলাম না পেঁয়াজটা আমদানি করতে। দেশেরটাই ব্যবহার করতে চেয়েছিলাম, যাতে মানুষ ন্যায্যমূল্য পায়। কিন্তু তারপরও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দাম বেড়ে গেছে, আমরা আমদানির ব্যবস্থা নিয়েছি দাম কমতে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, অনেক দেশে মূল্যস্ফীতি কমে গেছে বলে এখানে বলা হয়েছে। কিন্তু সেসব দেশে যখন ১৫ শতাংশ মূল্যস্ফীতি ছিল তখন আমাদের ৮ শতাংশ ছিল সেটাও কিন্তু বলা উচিৎ। সমালোচনার জন্য সমালোচনা না করে ভালো কিছু থাকলে সেটাও বললে আমরা উৎসাহিত হই। এই দুরবস্থার মধ্যেও আমরা প্রায় ৫৮ বিলিয়ন ডলার এক্সপোর্ট করেছি। আমাদের রফতানি কিন্তু বেড়েই চলেছে। এটাও কিন্তু বলা দরকার।
Development by: webnewsdesign.com