দেশে বেড়েই চলেছে এইচআইভি পজেটিভ বা এইডস রোগী। আক্রান্তদের ৩৭ শতাংশই শনাক্ত হননি আর শনাক্ত হওয়া রোগীদেরও ২৩ শতাংশ চিকিৎসার বাইরে। লোকলজ্জায় রোগ প্রকাশ বা চিকিৎসা নিতে চান না অনেকেই। তাদের কারণে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
দেশে প্রথম এইচআইভি পজেটিভ ধরা পড়ে ১৯৮৯ সালে। গত তিন দশকের বেশি সময়ে রোগী বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। বেসরকারি গবেষণা মতে, এই সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। তবে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দাবি শনাক্ত ৮ হাজার ৭৬১ জন রোগীর মধ্যে মারা গেছেন ১ হাজার ৮২০ জন।
সংক্রমিতদের ২৬ শতাংশ সাধারণ মানুষ, ২০ শতাংশ অভিবাসী, ৮ শতাংশ শিরায় মাদক গ্রহণকারী, ২৬ শতাংশ রোহিঙ্গা, ৯ শতাংশ সমকামী, ৭ শতাংশ পুরুষ যৌনকর্মী, ২ শতাংশ ট্রান্সজেন্ডার বা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ এবং ২ শতাংশ নারী যৌনকর্মী।
ভয়ে-লজ্জায় দেশ ছেড়েছেন সংক্রমিত অনেকেই। আরও অনেকেই টেস্টের সময় ভুল ঠিকানা দেয়ায় সমস্যা বাড়ছে।গবেষকদের মতে, আক্রান্ত বেশি রয়েছে ড্রাগইউজার, প্রবাসী, রোহিঙ্গা এবং তরুণ-তরুণী। প্রকাশ না করা আর চিকিৎসা না নেয়া অসচেতন রোগীরাই ছড়াচ্ছেন বেশিরভাগ সংক্রমণ।
এইচআইভি এক্সপার্ট ও বিসিসিএম সদস্য হাফিজ উদ্দিন মুন্না বলেন, “আমাদের সমাজে অসংখ্য মানুষ স্বাভাবিক মানুষের মতোই এইচআইভি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন “
মহাখালী সংক্রমণ ব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. হাসিবা মুনতাহা বলেন, “ম্যান টু ম্যান সেক্স যারা করে, ফিমেল সেক্স ওয়ার্কার, এছাড়া যারা প্রবাসে থাকে তাদের মধ্যেও অনেকে অ্যাফেকটেড হয়।”
আইইডিসিআর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মো. সেলিম উজ্জামান বলেন, “যারা শিরায় মাদকাসক্ত তাদের মধ্যে এই সংখ্যাটা একটু বেশি। এটা ঢাকা শহরেও বেশি এবং ঢাকার বাইরেও।”
তবে শনাক্ত ও চিকিৎসা সেবার পরিধি বাড়াতে এইডস রোগীদের দিয়ে মাঠকর্মীর কাজ করানোসহ বেশকিছু উদ্যোগ রয়েছে সরকারের।
মহাখালি এনআইডিসিএইচ সহকারি রেজিস্ট্রার ডা. মাহমুদুল হাসান বলেন, “এখন বাংলাদেশ সরকারের প্রায় ২৮টির উপরে এইচআইভি টেস্টিং সেন্টার, এআরটি সেন্টার ১১টি যেখান থেকে ওষুধ প্রদান করা হয়। আমাদের টেস্টের পরিসেবা যেভাবে বেড়েছে, প্রচারণা যখন বেড়েছে তখন এইচআইভি রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে।” ঝুঁকি এড়াতে সবার সচেতনতা জরুরি বলেও মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
Development by: webnewsdesign.com